শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, তৈরি পোশাকশিল্পে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান অধিকারী বাংলাদেশ জাহাজ নির্মাণ শিল্পেও দ্রুত সক্ষমতা অর্জন করছে। এদেশের নির্মিত জাহাজ এখন ডেনমার্ক, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ফিনল্যান্ডসহ ইউরোপের উল্লেখযোগ্য দেশগুলোতে রপ্তানি হচ্ছে। তাই দেশিয় নৌযান শিল্পখাতের বিকাশে সরকারের নীতি সহায়তা বাড়ানো হবে।
বৃহস্পতিবার শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বুধবার রাজধানীর সদরঘাটে বরিশাল-ঢাকা-বরিশাল নৌপথে নতুন নির্মিত যাত্রীবাহী নৌযান এম ভি অ্যাডভেঞ্চার-৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
নিজাম গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআই এর পরিচালক মো. নিজাম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই এর সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর এম. মোজাম্মেল হক, সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার সভাপতি মাহাবুব উদ্দিন আহম্মেদ।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, পরিবেশবান্ধব সবুজ শিল্পায়নের ধারা জোরদারে বর্তমান সরকার সর্বাত্মক প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে। জাহাজ নির্মাণ ও জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের পরিবেশ সুরক্ষায় সম্প্রতি শিল্প মন্ত্রণালয় ‘বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ আইন, ২০১৮’ প্রণয়ন করেছে। এ আইনের আলোকে বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ বোর্ড গঠন করা হচ্ছে। জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের পরিবেশ সুরক্ষা এবং শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশের নিশ্চয়তা বিধানে এ আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
আমির হোসেন আমু বলেন, শুধু জাহাজ নির্মাণ নয়, শিপ রিসাইক্লিং শিল্পেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বে জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে অগ্রগামী ৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এ শিল্পের বিশাল সম্ভাবনা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় জাহাজ নির্মাণ, জাহাজ-ভাঙা ও জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কর্মকাণ্ডকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। কলাপাড়া উপজেলাধীন পায়রা বন্দরের সন্নিকটে চরনিশানবাড়িয়া ও পার্শ্ববর্তী মধুপাড়া মৌজা এবং তালতলী উপজেলার ছোটনিশানবাড়িয়া মৌজায় জাহাজ নির্মাণ ও জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকণ শিল্প গড়ে তোলা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহনমন্ত্রী আসন্ন ঈদে নৌপথে নিরাপদ যাত্রী পরিবহন সেবা নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতি নির্দেশনা দিয়ে বলেন, ঈদ উপলক্ষে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ নৌপথে অধিকহারে ভ্রমণ করে। সরকার নেওয়া পদক্ষেপের ফলে গত তিন বছর ঈদযাত্রায় নৌপথে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে এবারও যাতে নৌপথে কোনো ধরনের অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা না ঘটে, সে লক্ষ্যে নৌযান মালিক, শ্রমিক, যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আইন মেনে চলতে বাধ্য করতে হবে।
