প্রচ্ছদ লাইফস্টাইল এ সময় জ্বর যদি হয়েই যায় তাহলে কী করবেন?

এ সময় জ্বর যদি হয়েই যায় তাহলে কী করবেন?

 

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম :

সারা বিশ্বে কোভিড-19 করোনাভাইরাস বড় একটি দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। মুক্তি পেতে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা নিরন্তর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ভয়ঙ্কর এই মহামারির প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে সবার মনে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। ছড়িয়ে পড়ছে আতঙ্ক। শুধু করোনায় আক্রান্ত রোগী নয় বরং পৃথিবীর প্রায় ৯৯ ভাগ লোক মানসিকভাবেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এমন অবাক করা তথ্য দিয়েছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা।

করোনাভাইরাসের প্রধান লক্ষণ জ্বর। তাই শরীরের তাপমাত্রা একটু বেড়ে গেলেই মনে ভয় লাগে। হয়তো তখন বুঝতে পারবেন না যে এই অবস্থায় কী করবেন… হাসপাতালে ছুটবেন নাকি বাড়িতেই চিকিৎসা নেবেন?এই মৌসুমে তাপমাত্রার দ্রুত পরিবর্তনের সঙ্গে যারা খাপ খাওয়াতে পারেন না, তারাই আক্রান্ত হচ্ছেন জ্বরসহ সর্দি-কাশিতে। ঋতু পরিবর্তনের ফলে জ্বরের এই প্রকোপ নতুন কিছু নয়, সাধারণের কাছে এটি ‘ফ্লু’ বা ভাইরাল ফ্লু হিসেবে পরিচিত।

আর এ সময় যদি জ্বর হয়েই যায় তাহলে কী করণীয় সে বিসয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিক্যালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. তসলিম উদ্দিন। তিনি বলেছেন, ভাইরাসের কারণে জ্বর হলে সাধারণত সাত দিনের মধ্যে এমনিই ভালো হয়ে যায়। হঠাৎ করে ঠাণ্ডা যাতে না লাগে, সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে। আর জ্বর হলেই হাসপাতালে ছোটার দরকার নেই। কারণ এই রোগ খুবই সংক্রামক। এতে একজন থেকে অন্যজন, এমনকি হাসপাতালের অন্য রোগীরাও আক্রান্ত হতে পারেন।

সবচেয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য হলো, একজন থেকে কতজন আক্রান্ত হবেন তার পরিসংখ্যান করা মুশকিল!করোনার প্রতিষেধক না থাকায় এর প্রতিরোধে সচেতন হওয়াই এখন পর্যন্ত কার্যকর উপায়। এছাড়া কিছু নিয়ম মেনে ঘরে বসেই স্বাভাবিক জ্বরের চিকিৎসা নিতে পারেন।

১. হাসপাতালে না গিয়ে টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করুন। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে, আপনিও নিরাপদ থাকবেন।

২. একজন সুস্থ মানুষের দেহে সাধারণত ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার পর থেকে জ্বর হিসেবে ধরা হয়। তাপমাত্রা ৯৮.৬ থেকে ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি হলে প্রাথমিক অবস্থায় প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। এবং রোগীর অবস্থার বর্ণনার উপর চিকিৎসক ওষুধের মাত্রা নির্ধারণ করবেন।

৩. এ সময় নিয়মিত ওষুধ সেবন এবং আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।

সর্দি বা নাক দিয়ে পানি পড়লে ফেক্সোফেনাডিন বা সেটিরিজিন জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ।

৪. পর্যাপ্ত পানি এবং ভিটামিন সি জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন। কারণ সাধারণ সময় অপেক্ষা জ্বরের কারণে শরীরের পানির চাহিদা শতকরা ৫-৭ ভাগ বেড়ে যায়।

৫. মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করুন। মনে রাখতে হবে মানসিক শক্তিই পারে রোগ প্রতিরোধ করতে। 

৬. চিকিৎসককে সঠিক তথ্য দিয়ে রোগ নির্ণয়ে সহায়তা করুন। যেহেতু তিনি সরাসরি আপনাকে দেখছেন না, তাই এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

৭. ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে হবে, অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৮. ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন— এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে।

৯. অসুস্থ পশুপাখির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে এবং মাছ-মাংস ভালোভাবে রান্না করে খেতে হবে।

১০. যতটা সম্ভব ঘরে থাকতে হবে, প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না যাওয়া ও জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে।

১১. এরপরও অবস্থার উন্নতি না হলে বা কারও মধ্যে করোনার লক্ষণ দেখা দিলে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে নাক-মুখ ঢেকে (মাস্ক ব্যবহার) বাড়িতে অপেক্ষা করতে হবে। অবস্থা খারাপ হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।