প্রচ্ছদ খেলাধুলা এবার ম্যারাডোনার ‘ধোলাই’

এবার ম্যারাডোনার ‘ধোলাই’

নিঝনি নভোগোরদে স্টেডিয়ামে ডিয়েগো ম্যারাডোনা এসেছিলেন উৎফুল্ল মেজাজে। খেলার আগে উড়িয়েছেন লিওনেল মেসির জার্সি। কিন্তু খেলা শেষে মাঠ ছেড়েছেন অশ্রুসজল চোখে। ভেনিজুয়েলাভিত্তিক একটি টেলিভিশন চ্যানেলে বিশ্বকাপ নিয়ে ম্যারাডোনার মতামতের ওপর নিয়মিতই একটি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হচ্ছে। সেখানেই ম্যারাডোনা সব ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন হোর্হে সাম্পাওলির ওপর।

টেলেসুর চ্যানেলে তিনি বলেছেন, ‘মেসি একা দলের সমস্যার কোনো সমাধান দিতে পারবে না। সব দোষ কোচের। লোকে মনে করেছিল সাম্পাওলি কম্পিউটার, ড্রোন অথবা ১৪ জন সহকারীর মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করে ফেলবে। আর্জেন্টিনাকে দেখে মনে হয়েছে, তারা জানে না তারা কেন খেলছে। রক্ষণ, মাঝমাঠ, আক্রমণভাগ- সব জায়গাতেই তাদের দেখিয়েছে দিশাহারা। আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এমন সব লোকজন চালাচ্ছে, যাদের ফুটবল সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই। তাদের দূরদর্শিতার অভাবে মাঠে দলটা ভুগছে।’

মেসির প্রতি ম্যারাডোনা সহানুভূতিশীল, ‘সবাই আজকে মেসির সমালোচনা করছে। আমি বলব, সে যতটুকু পারে, ততটুকুই খেলেছে। সতীর্থদের সমস্যার সমাধান করা কঠিন।’

প্রতিপক্ষের লম্বা চওড়া খেলোয়াড়দের মাঝে জায়গা খুঁজে পেতে হিমশিম খেয়েছেন আর্জেন্টিনার ফরোয়ার্ডরা। তাদেরকে ম্যারাডোনার প্রশ্ন, ‘আমি তাহলে কিভাবে খেলতাম? আমার সময়ে আমি বেলজিয়াম ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যে দুটি গোল করেছি, সেই দুটির অন্তত মান রাখো! ওরা এত লম্বা ছিল যে আমি কোমরের কাছে পড়তাম। তার পরও আমি ভালো খেলেছি, কারণ আমি মনে করতাম বাড়িতে আমার মা এবং গোটা আর্জেন্টিনা আমার খেলা দেখছে।’

উত্তরসূরিদের খেলা দেখে ভেতরে ভেতরে আগুনের মতোই জ্বলছেন ম্যারাডোনা, ‘আমার এমন রাগ হচ্ছে যে সেটা আমি কোথাও কমাতেও পারছি না। ভেতরে ভেতরে জ্বলছি। একবার যে জাতীয় দলে খেলেছে, তার পক্ষে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে হার মেনে নেওয়া কঠিন। সত্যি কথাটা বলতে, এটা ব্রাজিল নয়, জার্মানি নয়, স্পেন নয়; ক্রোয়েশিয়া! খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হলে তাদের আমি এটা জানাতে চাই যে তারা আর্জেন্টিনার জার্সিটাকে কতটা অসম্মান করেছে।’

ম্যারাডোনা যেদিন টেলেসুরের স্টুডিওতে কথা বলছেন, তারিখটা ছিল ২২ জুন। ১৯৮৬ সালের এই তারিখেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর সেই ‘হ্যান্ড অব গড’ আর অবিশ্বাস্য সেই ‘সলো গোল’! ৩২ বছর আগের সেই স্মৃতি ফের মনে করলেন ম্যারাডোনা, ‘৩২ বছর আগের সেই ম্যাচে আমরা ফুটবলই খেলছিলাম, তবে আমরা খেলছিলাম আর্জেন্টিনার মানুষের কথা মনে করে।’