প্রচ্ছদ খেলাধুলা মুখ দিয়ে গোল সেভ!

মুখ দিয়ে গোল সেভ!

হাত, পা, বডি-দলকে বিপদমুক্ত করতে কতভাবেই তো গোল সেভ করেন গোলরক্ষকরা। সেভ করতে গিয়ে কখনো সখনো বল গোলরক্ষকদের বুক, পিঠ, মুখেও লাগে। তবে সরাসরি মুখ দিয়ে গোল সেভ করার নজির ইতহিাসে খুব কমই আছে। গতকাল শনিবার সেই বিরল নজিরই সৃষ্টি করেছেন থিবো কুর্তোইস। বেলজিয়ান গোলরক্ষক নিজ দল রিয়াল মাদ্রিদকে বাঁচিয়েছেন সরাসরি মুখ দিয়ে গোল সেভ করে!

নিজেদের ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল শক্ত প্রতিপক্ষ ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে জিতেছে ২-০ গোলে। স্কোরকার্ড তাই হয়তো বলবে, ওই গোলটা হলেও জিতত রিয়াল। কিন্তু বাস্তব প্রেক্ষাপটটা ছিল একটু ভিন্ন। ম্যাচের ৭৭ মিনিটে চরম ঝুঁকি নিয়ে যখন মুখ দিয়ে গোলটা সেভ করলেন কুর্তোইস, রিয়াল তখন ১-০ গোলে এগিয়ে। সেটাও আত্মঘাতী গোলের সুবাদে। মানে ওই গোলটা হলেই ম্যাচে সমতায় ফিরত ভ্যালেন্সিয়া। সেক্ষেত্রে ম্যাচের ফলটা অন্য রকমেই হতে পারত।

কিন্তু কুর্তোইস তা হতে দেননি। বিপদ বুঝে দলকে বাঁচিয়েছেন দাঁত ভাঙার মহা ঝুঁকি নিয়ে। বক্সের ভেতর থেকেই ভ্যালেন্সিয়ার হয়ে জোরালো শট নেন কুর্তোইসেরই স্বদেশী মিসি বাতসুয়াই। কুর্তোইসের খুব কাছ থেকেই শটটা নেন তিনি। কুর্তোইস ডান দিকে ঝাপিয়ে পড়ে প্রথমে দুহাতেই বলটা সেভ করতে যান। কিন্তু তার হাত বলের নাগাল পায়নি। বলের গতি সীমার চেয়ে তার মাথাটা মানে মুখটাও নিচে ছিল। বিপদ বুঝে কুর্তোইস তড়িৎ সিদ্ধান্তে মাথাটা উচু করে হেডের ভঙ্গিতে বল ঠেকাতে যান। বল গিয়ে সরাসরি লাগে তার মুখে।

দাঁত ভাঙার ঝুঁকি নিয়ে দলকে বাঁচিয়েছেন ঠিক। তবে তার মুখমন্ডলের বাম পাশটা ফুলে গেছে এবং লাল হয়ে গেছে। তবে সতীর্থ, সমর্থক, কোচদের প্রশংসা আর বাহবার করতালিতে কুর্তোইসের হয়তো সেই ব্যথাকে ব্যথাই মনে হচ্ছে না। অবিশ্বাস্য কীর্তির জন্য বর তিনি গর্ব বোধ করছেন।

কুর্তোইসের এই মুখ দিয়ে সেভ কাণ্ডের সঙ্গে মিলে গেছে একটা কাকতালীয় ঘটনাও। যার শটটা তিনি মুখ দিয়ে ঠেকালেন, সেই বাতসুয়াই ২০১৮ বিশ্বকাপে নিজেই একটা গোল করেছিলেন মুখ দিয়ে। তার প্রথম শট গোস্টে লেগে ফিরে আসার পর বাতসুয়াই সেদিন গোলটা করেন মুখ দিয়ে।

সেদিন বাতসুয়াইকে কুর্তোইসও বিশেষ বাহবা দিয়েছিলেন। একসঙ্গে করেছিলেন উদযাপন। কারণ, বেলজিয়ান জাতীয় দলের হয়ে সেদিন তারা ছিলেন সতীর্থ। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই সেই বাতসুয়াইয়ের শট মুখ দিয়ে ঠেকিয়ে দিলেন তিনি।

মুখ দিয়ে এই গোল সেভ কাণ্ডে অন্য একটা ঘটনাও আছে। কুর্তোইস সেভটা করার পর অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি। কিন্তু রিপ্লেতে পরিস্কার, গোলটা হলে রেফারির এই অফসাইড সিদ্ধান্ত ধোপে টিকতে না। কারণ, ভিএআর (ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি) নিয়ে ঠিকই গোলটা পেয়ে যেত ভ্যালেন্সিয়া। যেহেতু গোলটা হয়নি, তারা তাই রিভিউ না নিয়ে রেফারির অফসাইড সিদ্ধান্তই মেনে নিয়েছে।