প্রচ্ছদ জাতীয় মন্দা মোকবিলায় তিন বছরের পরিকল্পনা : জানালেন প্রধানমন্ত্রী

মন্দা মোকবিলায় তিন বছরের পরিকল্পনা : জানালেন প্রধানমন্ত্রী

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, করোনার কারণে দেশে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিলে আগামী ৩ বছরে কীভাবে দেশের মানুষকে রক্ষা করা হবে, সেই পরিকল্পনাও নেয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ঢাকা বিভাগের ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা ভাইরাসের প্রভাবে সারাবিশ্ব যেন আজকে একটা জায়গায় চলে এসেছে। এই ভাইরাসের কারণে অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। সারাবিশ্ব, জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বলছে, বিশ্বব্যাপী প্রচণ্ড অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেবে। এমনকি দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে আমাদের করণীয় আছে।

’তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষকে রক্ষা করা বা এই ধরনের দুর্ভিক্ষ বা অর্থনৈতিক যদি মন্দ হয়, তা থেকে দেশকে আমরা কীভাবে রক্ষা করব? এ কথা চিন্তা করে আমরা ইতোমধ্যে প্রায় ৯৩ হাজার কোটি টাকা, আসলে প্রায় বলতে গেলে এক লাখ কোটি টাকার মতো একটা প্রণোদনা প্যাকেজ তৈরি করেছি। তা আমরা বাস্তবায়ন শুরু করেছি। কোনোরকম মন্দা আসলে আমি যেন তা মোকাবিলা করতে পারি। আর সেটা শুধু এখনকার জন্যই না, আগামী ৩ অর্থবছরে আমরা কীভাবে দেশের মানুষকে অর্থনৈতিক মন্দা থেকে রক্ষা করব, সেই পরিকল্পনাও আমরা কিন্তু নিচ্ছি। 

তিনি আরও বলেন, এই ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য সবাইকে ঘরে থাকতে হবে এবং কাজ করতে হবে, কাজ ছাড়া তো হবে না। যে কাজগুলোয় খুববেশি লোকের সঙ্গ না হয়, একটু দূরে থেকে করা যায়, সেই কাজগুলো করা যাবে। যে কারণে দেশের শিল্প-কারখনা, ওষুধের শিল্প বা অন্যান্য শিল্প – এগুলো একটা আলোচনার মাধ্যমে তারা চালাতে পারেন। কিন্তু সেখানেও যারা কাজ করবেন, সেখানেও নিজ নিজ সুরক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে। কৃষি কাজ থেমে থাকলে চলবে না, যেহেতু কৃষি কাজটা খোলা মাঠে হয়, এই সূর্যের তাপ, খোলা বাতাস – এটা কিন্তু আমাদের এই করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি দেয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচি নিয়েছিলাম কিন্তু করোনা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার কারণে কিছুটা ধাক্কা আমাদের দেশে আসে। এজন্য আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন এবং ২৬ মার্চের অনুষ্ঠান বাতিল করি। জনসমাগম বাদ দিতে এসব করেছি আমরা।

তিনি বলেন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলাসহ বেশ কয়েকটি জেলায় সব থেকে বেশি আক্রান্ত। অন্যান্য জেলায়ও কিছু আছে কিন্তু ঢাকা এবং এর আশপাশে ভাইরাস কেন এত বেশি হলো। এটি নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করতে চাই। এ রোগে এ পর্যন্ত যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। যারা এখন চিকিৎসারত আছেন তারাও দ্রুত আরোগ্য লাভ করুক, এটাই আমি চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, ৫০ লাখ মানুষের জন্য রেশন কার্ড করা আছে, যারা ১০ টাকার চাল পায়। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আরও ৫০ লাখ মানুষের রেশন কার্ড করে দেব। আমরা এমনি দিতে গেলে অনেক সময় সমস্যা হয়। সেই ধরনের কিছু ঘটনা ঘটার ফলে এটা স্থগিত করে তালিকা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।তিনি আরও বলেন, আমরা যে অতিরিক্ত ৫০ লাখ রেশন কার্ড দেব সেখানে আমাদের সামাজিক সুরক্ষা যারা পাচ্ছেন এবং ইতোমধ্যে যাদের রেশন কার্ড আছে তাদের বাদ দিয়ে করতে হবে। যাদের সত্যিকারের প্রয়োজন তাদের নামটা যেন তালিকায় থাকে।