প্রচ্ছদ খেলাধুলা বাংলাদেশের নতুন কোচ জেমি ডে

বাংলাদেশের নতুন কোচ জেমি ডে

ব্রিটিশ ফুটবল কোচের সঙ্গে কথা পাকা হয়ে গেছে। তাই আর নাম প্রকাশে দ্বিধা নেই বাফুফের। নাম তার জেমি ডে, আগামী জুন থেকে তার হাতে উঠছে বাংলাদেশ ফুটবল দলের দায়িত্ব। গত বৃহস্পতিবার, ১৭ মে, আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ন্যাশনাল টিমস কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ।

অস্ট্রেলিয়ান কোচ অ্যান্ড্রু ওর্ড অধ্যায় শেষ হয় গত মাসে। মাত্র দশ মাসের কার্যকাল। এই অস্ট্রেলিয়ান চাকরি ছেড়ে যাওয়ার পরের মাসেই জাতীয় দল কমিটি চূড়ান্ত করেছে নতুন কোচ জেমি ডে-কে। খুব হাইপ্রোফাইল কোচ নন, ইংল্যান্ডে নিচের সারির দলে কাজ করেন। ওর্ডের মতো এটাই হতে যাচ্ছে ইংলিশ কোচের প্রথম জাতীয় দল। তার বড় কোচ হওয়ার ইচ্ছাটাকেই বেশ মনে ধরেছে কমিটির প্রধান কাজী নাবিল আহমেদের, ‘খুব কম বয়সে কোচ হয়েছেন ডে। অত বড় দল সামলানোর অভিজ্ঞতা না থাকলেও তার মধ্যে বড় হওয়ার ইচ্ছা দেখেছি। কোচ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। আশা করছি, খুব আন্তরিকভাবেই বাংলাদেশ দলকে নিয়ে ভালো করার চেষ্টা করবেন তিনি।’

মাত্র ২৯ বছর বয়সেই ডে ফুটবল কোচিং শুরু করেন ওয়েলিং ইউনাইটেডের কোচ কাম খেলোয়াড় হিসেবে। ওয়েলিং ইউনাইটেড ইংলিশ ফুটবল কাঠামোর ষষ্ঠ বিভাগের দল, সেখানে ২০০৯ সালে শুরু করার পর মনোযোগী হন কোচিং লাইসেন্সে। ফুটবল কোচিংয়ে পড়াশোনা করার পাশাপাশি চালিয়ে গেছেন মাঠের কোচিং। কয়েকটি ক্লাবে প্রধান কোচের ভূমিকায় কাজ করার পর এ বছর সহকারী কোচ হিসেবে যোগ দেন ব্যারো অ্যাসোসিয়েশন ফুটবল ক্লাবে।

সেখানে কয়েক মাস কাজ করে উয়েফা এ লাইসেন্সধারী এই ব্রিটিশ নিয়েছেন বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব। অর্থাৎ ইংলিশ ফুটবলের পঞ্চম বিভাগের দল থেকে সোজা জাতীয় দল! ক্লাব আর জাতীয় দলের প্যাটার্ন কিন্তু এক নয়। ক্লাবে দীর্ঘ সময় ধরে খেলোয়াড়দের পাওয়া যায়, সুবাদে ফুটবলারের সামর্থ্য-দুর্বলতাও থাকে কোচের নখদর্পণে। জাতীয় দলের বেলায় ব্যাপারটা ভিন্ন, শেখানোর সুযোগ খুব কম পান কোচ। জাতীয় দল কমিটির চেয়ারম্যান এটাকে বড় সমস্যা মনে করছেন না, ‘এই অফ সিজনে জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা তার হাতেই থাকবে। ২০ মে থেকে ক্যাম্প শুরু হচ্ছে, একদম সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ পর্যন্ত চলবে এই ট্রেনিং। তত দিনে খেলোয়াড়দের সম্পর্কে তার ধারণা হয়ে যাবে এবং খেলার একটা স্টাইলও তিনি দাঁড় করিয়ে ফেলবেন।’ এ বছর সেপ্টেম্বরে ঢাকায় হবে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ, তার আগে আছে এশিয়ান গেমস। সাফকে লক্ষ্য ধরেই বাফুফে তার সঙ্গে এক বছরের চুক্তি করেছে। তার আগে কোনো পক্ষ চুক্তি থেকে বের হতে চাইলেই বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ গুনতে হবে।

পাঁচ ফুট সাত ইঞ্চির এই মিডফিল্ডার ইংল্যান্ডের জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৬, ১৭ ও ১৮ দলে খেলেছেন। ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত গোল করেছেন ২৬টি। ১৯৯৭-৯৯ সালে আর্সেনালে থাকলেও একাদশের বাইরে ছিলেন। পরবর্তীতে বর্নমাউথে গিয়ে ২০ ম্যাচে এক গোল পান। ক্যারিয়ারে ডোভার অ্যাথলেটিক, ওয়েলিং ইউনাইটেডের মতো দলে খেলেছেন।

ম্যানেজার হিসেবে পরিসংখ্যানও খুব একটা খারাপ নয় জেমির। ২০০৯ সালে ওয়েলিং ইউনাইটেডে যোগ দিয়ে ২৪৫ ম্যাচের ১১৭টিতে জয়, ৭১টিতে ড্র করলেও হেরেছেন ৫৭ ম্যাচে। ২০১৪ সাল থেকে ’১৫ পর্যন্ত এবসফ্লিট ইউনাইটেডে ২৫ ম্যাচে ১০ জয়, পাঁচটিতে ড্র করলেও হেরেছেন ১০টিতে।

২০১৬ সালে এক বছরে ব্রেনট্রি টাউনে ১২টি ম্যাচে ম্যানেজার হিসেবে ছিলেন। যেখানে তার সাফল্য দু’জয়, তিন ড্র ও সাত ম্যাচে হার। পরের বছর ফের ওয়েলিং ইউনাইটেডে যোগ দিয়ে শতভাগ সাফল্য পান জেমি। ছয় ম্যাচের ছয়টিতেই দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে গেছেন। ক্যারিয়ারে তার সাফল্যের হার ৪৬.৮৮ ভাগ।