প্রচ্ছদ রাজনীতি ফখরুল হচ্ছেন বহিষ্কার, বিএনপির নতুন মহাসচিব কে হচ্ছেন?

ফখরুল হচ্ছেন বহিষ্কার, বিএনপির নতুন মহাসচিব কে হচ্ছেন?

গুঞ্জনটাই সত্যি হতে চলছে। গত কয়েক মাস ধরেই বলাবলি হচ্ছিল বিএনপি থেকে সরে যেতে পারেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। না, ঠিক তেমনটা না হলেও তাকে বহিষ্কার করা হতে পারে বলে জানিয়েছে দলটির নির্ভরযোগ্য কয়েকটি সূত্র। এমনকি ঈদের পরপরই বিনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডনে নির্বাসিত তারেক রহমান তাকে বরখাস্ত করার মানসিক প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছেন। এক্ষেত্রে নতুন কাকে বিএনপির মহাসচিব করা যায়, তা নিয়েও ভাবতে শুরু করেছেন তারেক রহমান।

বিএনপির নেতারাই গতকাল থেকে বলাবলি করছেন, বিএনপিতে চমক আসছে। দলের খোল নোলচে পাল্টে দেয়া হচ্ছে। আগ্রাসী এবং সর্বাত্মক আন্দোলন করতে পারে এরকম সাহসী নেতৃত্ব সামনে আনা হচ্ছে। দীর্ঘ মেয়াদী আন্দোলনের জন্য বদলে ফেলা হচ্ছে দলের নেতৃত্বের কাঠামো। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া গতকাল এবং আজ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও কর্মীদের সাথে টেলিফোনে আলাপ করেছেন। এসব আলাপে তিনি ৫ টি মৌলিক সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। তারেক দীর্ঘ আন্দোলনে সফল নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপিকে ঢেলে সাজানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

২০২৩ সালকে টার্গেট করে বিএনপিকে গড়ে তোলার পরিকল্পনাও ঘোষণা করেছেন বলে জানিয়েছে বিএনপির নেতৃবৃন্দ। তারেকের এই সিদ্ধান্তে সরে যেতে পারেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। যদি তিনি সরে না দঁড়ান তবে তাকে বহিষ্কার করা হবে। স্থায়ী কমিটি থেকে বাদ পরতে পারেন অসুস্থ ও নিস্ক্রিয় নেতারা। তরুণ নেতৃত্ব এনে বিএনপি যেতে পারে সর্বাত্মক আন্দোলনে।

তারেক জিয়ার নির্দেশনা নিয়ে আজ বিএনপির সিনিয়র নেতারা বৈঠক করেছেন। সিনিয়র অধিকাংশ নেতাই তারেক জিয়ার সিদ্ধান্তের সাথে একমত বলে জানা গেছে। তারেক জিয়া যে পাঁচটি মৌলিক সিদ্বান্ত ঘোষণা করেছেন, সেগুলো হলো:

১. বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না।

২. বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীতে সর্বাত্মক গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

৩. নির্দলীয় সরকারের আন্দোলনকে একদফার আন্দোলনে রূপান্তরিত করতে হবে।

৪. আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে সক্ষম এমন নেতৃত্ব সামনে আনতে হবে।

৫. দীর্ঘ আন্দোলন এবং ত্যাগ স্বীকারের জন্য নেতা কর্মীদের প্রস্তুত থাকতে হবে।

বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারেক চাইছে ঈদের পর থেকে আন্দোলনের কর্মসূচী এবং তিনটি সিটি নির্বাচনের পর সর্বাত্মক আন্দোলন। বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, ‘তারেক সাহেবের সঙ্গে আমরাও একমত। আইনী লড়াইয়ে বেগম জিয়াকে মুক্ত করা অসম্ভব। এজন্য দীর্ঘ লড়াইয়ে যেতে হবে।’

তারেক জিয়া দলের তরুণদের বলেছেন, বিএনপির বর্তমান নেতৃত্ব অক্ষম এবং আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত নয়। দলের তরুণরাও মনে করেন, মির্জা ফখরুল ভালো মানুষ কিন্তু কঠিন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবার যোগ্যতা ও সাহস তাঁর নেই। বিএনপির তরুণ এবং তৃণমূল বর্তমান স্থায়ী কমিটির আমূল পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছেন তারেককে।

সূত্রমতে তারেকও তাঁদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন। বিএনপির তৃণমুলের নেতৃত্ব মনে করে বর্তমান স্থায়ী কমিটি ঝুঁকি নিতে ভয় পায় জেলের আতংকে ভোগে, এরা দলের জন্য সব কিছু উজাড় করতে প্রস্তুত নয়। তারেকও এই চিন্তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন বলে জানা গেছে। তারেক এবং তরুণরা মনে করে, এই নির্বাচন প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বিএনপির নেই। তাই ২০২৩ সালকে মাথায় রেখে দল ও নেতৃত্ব সাজাতে হবে। সেজন্যই দলে তরুণদের সামনে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দলে হাবিব উন নবী খান সোহেল, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, তাবিথ আওয়াল এর মতো তরুণদের জায়গা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারেক জিয়া।

বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, বিএনপির নেতৃত্বে চমক আসছে, সরে যাচ্ছেন ফখরুল। দলকে আন্দোলনের সাজে সাজানো হচ্ছে। তা দৃশ্যমান হবে ঈদের পর থেকেই।

সূত্র: ভোরের পাতা (www.dailyvorerpata.com)