প্রচ্ছদ খেলাধুলা ধর্ষণ নিয়ে রোনালদোর গোপন চুক্তিপত্র ফাঁস!

ধর্ষণ নিয়ে রোনালদোর গোপন চুক্তিপত্র ফাঁস!

ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে ঝামেলা বেড়েই চলছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর। লাস ভেগাস পুলিশ জানিয়েছে, তারা ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে জুভেন্টাস তারকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়। এদিকে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডার স্পেইগেল আরেকটি বোমা ফাটিয়েছে। কথিত ধর্ষণের অভিযোগ গোপনে ধামাচাপা দিতে রোনালদো ও ক্যাথরিন মায়োরগার মধ্যে যে চুক্তিপত্র হয়েছিল, সংবাদমাধ্যমটি তা প্রকাশ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক মডেল ক্যাথরিন মায়োরগা ২০০৯ সালে রোনালদোর বিপক্ষে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিলেন। সংবাদমাধ্যম ডার স্পেইগেল গত বছর তা ছেপেছিল। তবে সেই নারীর কাছ থেকে অনুমতি না মেলায় গত বছর এ নিয়ে বেশি দূর এগোয়নি সংবাদমাধ্যমটি। কিন্তু ‘হ্যাশট্যাগ মিটু’ আন্দোলনের পর ক্যাথরিন নিজের পরিচয় প্রকাশের সাহস পেয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। এরপরই আবার ফলাও করে রোনালদোর ব্যাপারে প্রতিবেদন ছাপিয়েছে ডার স্পেইগেল।

চুক্তিপত্রের একটি অংশ এবং নিচে রোনালদোর সই। ছবি: এএসচুক্তিপত্রের একটি অংশ এবং নিচে রোনালদোর সই। ছবি: এএস

রোনালদো বরাবরই ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন। কিন্তু সংবাদমাধ্যমটি এর আগে সম্পূর্ণ প্রমাণাদি নিয়ে টুইটারে হাজির হয়েছে। ক্রীড়া সম্পাদক ক্রিস্টফ উইন্টারবাখ টুইটারে টানা ২৫টি পোস্ট করেছেন। টানা পোস্টে ধারাবাহিকভাবে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন ২০০৯ সালে কী ঘটেছিল, সে সময়ে পুলিশ ও আইনজীবীদের কী ভূমিকা ছিল এবং বর্তমানে কোনো নতুন তথ্য-উপাত্ত পাওয়ায় তারা নতুন করে প্রতিবেদন ছাপিয়েছে—সবকিছুই বলার চেষ্টা করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মায়োরগা অভিযোগটি নতুন করে উত্থাপন করলে লাস ভেগাস পুলিশ মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করে তদন্ত শুরু করেছে।

চুক্তিপত্রের নিচে রোনালদো ও মায়োরগার সই। ছবি: এএসচুক্তিপত্রের নিচে রোনালদো ও মায়োরগার সই। ছবি: এএস

ডার স্পেইগেল প্রথমে যে সংবাদ দিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিল, সেটা হচ্ছে ২০০৯ সালে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে ছুটি কাটাচ্ছিলেন রোনালদো। এ সময় নাভাদার লাস ভেগাসে এক নারীকে ধর্ষণ করেন এবং সেটা গোপন রাখতে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ডলারে সমঝোতা করেন। মায়োরগার দাবি, ধর্ষণের পরদিনই তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর আইনজীবী ও রোনালদোর আইনি দলকে নাকি জানানো হয়েছিল, তারা সমঝোতা করলে পুলিশ আপত্তি করবে না। ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হওয়া ও রোনালদো-ভক্তদের কাছ থেকে হয়রানির কথা ভেবে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ মেনে নেন মায়োরাগা ও তাঁর আইনজীবী। সে সঙ্গে এ তথ্য কখনো প্রকাশ করা যাবে না, চুক্তিপত্রে এই স্বীকারোক্তি আদায় করা হয় বাদীর কাছ থেকে।

চুক্তিপত্রের শর্তাবলি। ছবি: এএসচুক্তিপত্রের শর্তাবলি। ছবি: এএস

ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে চলমান এই বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতেই সেই গোপন চুক্তিপত্রের ছবি প্রকাশ করেছে ডার স্পেইগেল। ২০১০ সালের ১২ জুলাই এই চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। যেখানে রোনালদো ও মায়োরগার সই রয়েছে। এই নথি প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমটির মন্তব্য, ‘এই নথির সত্যতা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। রোনালদোর আইনজীবীর পক্ষ থেকেও কিছু বলা হয়নি।’ প্রকাশিত এই নথিতে রোনালদোর ছদ্মনাম (টফার) ব্যবহার করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমটির বক্তব্য অনুযায়ী, প্রকাশিত নথিতে রোনালদোর আইনজীবী প্রশ্ন করেছিলেন, মিসেস সি (মায়োরগা) কি চিৎকার করেছিলেন? জুভেন্টাস তারকার জবাব, সে ‘না’ বলেছে এবং কয়েকবার বাধা দিয়েছে।

এদিকে লাস ভেগাস পুলিশ জানিয়েছে, তারা রোনালদোকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিররকে লাস ভেগাস পুলিশের মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা জানি না এটা কখন ঘটবে (জিজ্ঞাসাবাদ)। তবে একটা পর্যায়ে গিয়ে অবশ্যই তাঁর কথা শুনতে হবে।’