প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ চার হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে পথেই ব্যবসায়ীর মৃত্যু

চার হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে পথেই ব্যবসায়ীর মৃত্যু

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম :

সিলেট নগরীর চারটি হাসপাতালে ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন বন্দরবাজার এলাকার এক ব্যবসায়ী। 

জানা গেছে, শুক্রবার সকালে হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন না পেয়ে চিকিৎসার অভাবেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বন্দরবাজারের আর এল ইলেকট্রনিকের স্বত্বাধিকারী ও সিলেট নগরীর কুমারপাড়ার বাসিন্দা ইকবাল হোসেন খোকা (৫৫)।  

এ বিষয়ে ইকবাল হোসেন খোকার ছেলে তিহাম জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তার বাবার বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তখন তিনি প্রথমেই সোবাহানীঘাট এলাকার একটি হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য কল করেন। অ্যাম্বুলেন্স বাসায় আসার পর দেখা যায় এর সাথে যে অক্সিজেন সিস্টেম রয়েছে সেটি ভাঙা। ওই অবস্থায়ই রোগীকে সোবাহানীঘাটের ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি বার বার তাদেরকে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করলেও তারা রোগীকে রেখে নিয়মকানুন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যান। এক পর্যায়ে জানান তারা রোগীকে রাখবেন না, তারা নর্থ ইস্ট হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।

 তিনি বলেন, অনেক অনুরোধ করার পরও তারা অক্সিজেনের ব্যবস্থা করে দেননি। পরে আমরা রোগীকে নিয়ে দক্ষিণ সুরমার নর্থ ইস্ট হাসপাতালে যাই। সেখানে গেলে কর্তৃপক্ষ জানান তাদের হাসপাতালে সিট নেই, রোগীর চিকিৎসা দেয়া সম্ভব নয়। তখন আমরা পরিচিত এক চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করি।

তিনি আমাদের পরামর্শ দেন শহীদ ডা. শামসুদ্দিন হাসপাতালে যাওয়ার জন্য। তিহাম অভিযোগ করে বলেন, শামসুদ্দিন হাসপাতালে গিয়ে তারা সবকিছু বন্ধ পান। ১০-১৫ মিনিট পরে এক নিরাপত্তাকর্মী এসে জানান হাসপাতালের সবাই ঘুমে। অন্য কোথাও রোগীকে নিয়ে যেতে। তখন তারা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দিকে রওয়ানা হন। সেখানে জরুরি বিভাগে যাওয়ার পর তারা সিসিইউতে নিয়ে একটি ইসিজি করেন।

এরপরই হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার বাবাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড-19 রোগীদেরও চিকিৎসা দেয়ার সরকারি নির্দেশনা থাকার পরও সংকটাপন্ন অবস্থায় সিলেটের কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল ভর্তি না করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন মারা যাওয়া রোগীর পরিবারের স্বজনরা। 

এর আগে, গত ৩১ মে দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভোগা নগরীর কাজীটুলা এলাকার বাসিন্দা এক নারী অসুস্থ হলে সিলেটের ৬টি বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা পাননি। পরে ওসমানী হাসপাতালে যাওয়ার পথে তারও মৃত্যু হয়।

একই দিনে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে স্ট্রোক করে সিলেটে আসা এক রোগী ৭টি হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। এছাড়া গেল পরশু সিলেট ডায়াবেটিক হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা না পাওয়ারও অভিযোগ করেছেন রাহেলা বেগম নামে এক ৫০ বছর বয়সী নারী।