প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ অবশেষে মুক্ত জাহালম, বিচার চাইলেন দুদকের

অবশেষে মুক্ত জাহালম, বিচার চাইলেন দুদকের

গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেছেন আলোচিত দুদকের দায়ের করা মামলার আসামি জাহালম। রোববার রাত ১টার দিকে তিনি কাশিমপুর কারাগার পার্ট-২ থেকে মুক্তি লাভ করেন। এ সময় কারাফটকে জাহালমের ভাই সাহানুর মিয়া উপস্থিত ছিলেন। এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় ভুল আসামি জাহালমকে সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে মুক্তির নির্দেশ দেয়া হয়। রাতে মুক্তি পেয়ে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের বিচার দাবি করেন।

কাশিমপুর কারাগারের জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, রাতে জাহালমের মুক্তি সংক্রান্ত কাগজপত্র আদালত থেকে কাশিমপুর কারাগারে এসে পৌঁছে। পরে তা যাচাই বাছাই ও আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়।

এর আগে গত ২০১৬ সালের ৬ই জুন তাকে নরসিংদী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ওই বছরের ২৭শে মে তাকে কাশিমপুর কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।

মুক্তি লাভের পর এক প্রতিক্রিয়ায় জাহালম বলেন, দুদুকের ভুলে তিনি বিনা কারণে তিন বছর জেল খেটেছেন। তাই দুদকের কঠিন বিচার চাই। সঠিক তদন্ত করে যেন আসামি ধরা হয় এই আহবান জানান তিনি।

এ সময় তার ভাই সাহানুর মিয়া বলেন, যাদের ভুলের কারণে তার ভাই জেল খেটেছে তাদের বিচার এবং ক্ষতি পূরণ চাই।

কারা ফটক থেকে ভাই জাহালম বেরিয়ে আসায় খুশিতে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পরে একটি মাইক্রোবাস দিয়ে তিনি কারা এলাকা ত্যাগ করেন।

প্রসঙ্গত: রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ জাহালমকে সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আদেশ দেন। নিরীহ শ্রমিক জাহালমকে গ্রেপ্তার ও কারাগারে রাখার ঘটনায় দুদকের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেন আদালত। আদালত বলেন, বিনা দোষে জাহালামকে কারাগারে রাখা আরেকটি জজ মিয়ার নাটকের মতো ঘটনা।

সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে : ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না’ প্রকাশিত শিরোনামের ওই প্রতিবেদনটি গত সোমবার আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট অমিত দাসগুপ্ত। এর পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার দুদকের মহাপরিচালক (আইন) মইনুল ইসলাম, দুদকের মামলার বাদী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল জাহিদ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়রে সচিবের একজন প্রতিনিধি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবের মনোনীত প্রতিনিধিকে আদালত তলব করে। সকালে ওই চারজন হাইকোর্টে হাজির হন।

উল্লেখ্য, গত ২৮শে জানুয়ারি দেশের শীর্ষ স্থানীয় একটি দৈনিকে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলায় নিরপরাধ জাহালমের জেলখাটা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আবু সালেকের (মূল অপরাধী) বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের বদলে জেল খাটছেন, আদালতে হাজিরা দিয়ে চলেছেন জাহালম। তিনি পেশায় পাটকল শ্রমিক।