প্রচ্ছদ খেলাধুলা যে পাঁচ কারণে বিশ্বকাপ জিততে পারে আর্জেন্টিনা

যে পাঁচ কারণে বিশ্বকাপ জিততে পারে আর্জেন্টিনা

আর্জেন্টিনা দল রোববার মাঝরাতে রাশিয়ায় পা দিয়েছে। তাদের শুভেচ্ছা জানাতে এবং মেসিকে দেখতে ওই মাঝরাতেই ভিড় জমিয়েছে অনেক সমর্থক। মেসিরা হয়তো এতে অবাক হননি। কারণ রাশিয়া বাকি এক মাস আর ঘুমাবে না। ঝকঝকে আলোয় আর ফুটবল উন্মাদনায় জেগে থাকবে ২৪ ঘন্টা। আর্জেন্টিনা দল এবং মেসি কড়া নিরাপত্তায় বিমান ছেড়ে হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন। হাত নাড়িয়ে ভক্তদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়ে দিলেন মেসি।

তিনি হয়তো চাইবেন এই শুভেচ্ছা, ভালোবাসা এবং উচ্ছ্বাস নিয়ে দেশে ফিরতে। কারণ রাশিয়া বিশ্বকাপে হেরে বাড়ি ফেরার সময় নিশ্চয় সমর্থকরা বিদায় জানাতে আসবে না। যা ক’জন আসবে তাদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়ে মুচকি হেসে বিদায় নিতে পারবেন না বার্সেলোনা তারকা। তাই তাদের জিততে হবে বিশ্বকাপের শিরোপা। আর মেসিদের রাশিয়া থেকে শিরোপা জিতে ফেরার পেছনে থাকবেন মেসি, তাদের কোচ এবং আক্রমণভাগ। আর্জেন্টিনার এবার রাশিয়া বিশ্বকাপ জয়ের পাঁচ কারণ উল্লেখ করা হলো:

শক্ত আক্রমণভাগ: এটা সম্ভবত আর্জেন্টিনা নিন্দুকেরাও অস্বীকার করতে পারবে না। মেসি-আগুয়েরো-ডি মারিয়া সঙ্গে হিগুয়েইন, দিবালা-পাভনদের নিয়ে শক্তিশালী আক্রমণভাগ আর্জেন্টিনার। সতন্ত্র অনেক নামী ফুটবলার নিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরু হতে যাচ্ছে। ব্রাজিল, স্পেন, ফ্রান্স, বেলজিয়াম কিংবা জার্মানির দারুণ শক্তিশালী দল আছে। কিন্তু যদি কোন দেশের আক্রমণের সঙ্গে অন্য দেশের আক্রমণের তুলনা করা হয়। তবে দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং তারকা খ্যাতিতে এগিয়ে থাকবে আর্জেন্টিনা।

লিগের ২০১৭-১৮ মৌসুমে আর্জেন্টাইন আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের গোল অনেকের ঈর্ষার কারণ হবে। অবাক হবেন অনেকেই। মেসি এবারের ইউরোপের সেরা লিগগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৪ গোল করেছেন। আগুয়েরো ইংলিশ লিগে গোল করেছেন ৩০টি। হিগুয়েইনের গোল সংখ্যা ২৩। অন্য জুভেন্টান তারকা পাওলো দিবালা করেছেন ২৪ গোল। ডি মারিয়া জালে ১৯ বার বল পাঠিয়েছেন। শক্ত এই আক্রমণভাগ নিয়ে বিশেষ করে যারা গোল করতে পারে তাদের নিয়ে বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন আর্জেন্টিনা দেখতেই পারে।

মেসির প্রভাব: মেসি বিশ্ব ফুটবলের নেতা। আর্জেন্টিনারও। বিশ্বের যে কোন দলে একজন মেসির মতো বিশ্বসেরা ফুটবলার থাকলেই তারা বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখবে। সেখানে মেসিদের আছে দারুণ কোচ, শক্ত আক্রমণভাগ। সঙ্গে মেসিদের সহায়তা করার মতো মাঝমাঠ। মেসি এমন এক ফুটবলার যিনি প্রতিভাবানের সংজ্ঞা বদলে দিয়েছেন। ফুটবল জাদুকরের আলাদা বর্ণনা লিখতে বাধ্য করেছেন। মেসির দাপটেই ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। ২০১৮ সালে তিনি আরো পরিণত। যা আর্জেন্টিনাকে শিরোপার অন্যতম দাবিদার করে তুলেছে।

বিশ্বকাপে দারুণ ইতিহাস: সুইজারল্যান্ডের দারুণ এক দল আছে। ফিফা র্যাংরকিংয়ে তারা ছয়ে অবস্থান করছে। দুর্দান্ত এক দল আছে বেলজিয়ামেরও। ইংল্যান্ডকে বাদ দেওয়ার উপায় নেই। পর্তুগালে আছেন রোনালদো। কিন্তু তাদের বিশ্বকাপ জয় নিয়ে অত কথা হচ্ছে না। কারণ ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাস তাদের পক্ষে কথা বলে না। কিন্তু আর্জেন্টিনা সেখানে ব্যাতিক্রম। দুইবার বিশ্বকাপ জয়, সঙ্গে তিনবার রানার্স আপ তাদের পিঠে বিশ্বকাপের দাবিদার কথাটা শেটে দেয়।

কোচ হোর্হে সাম্পাওলির প্রভাব: আর্জেন্টিনাকে খাদের কিনার থেকে সরাসরি বিশ্বকাপের মঞ্চে নিয়ে গেছেন তিনি। চিলির প্রধান কোচ হিসেবে বেশ সাফল্য আছে তার ঝুলিতে। স্প্যানিশ ক্লাব সেভিয়ার ভালো করেছেন এই আর্জেন্টাইন। আর এসবের কারণে আর্জেন্টিনা দলের উপর নিয়ন্ত্রন আছে কোচ সাম্পাওলির। স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করতে পারেন।

এমনকি আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপে ব্যর্থ হলেও তাকে বরখাস্ত করা হবে না। এমন অভয়ও পেয়েছেন ২০১৭’র জুনে দায়িত্ব নেওয়া এই কোচ। আর কৌশলের দিকে থেকে বর্তমান বিশ্বের সেরা কোচদের একজন সাম্পাওলি। এটা তিনি কোপা আমেরিকায় এবং ইউরোপের ক্লাবে প্রমাণ করেছেন।

ফেবারিট তকমা না পাওয়া: ফেবারিট তকমা যে আর্জেন্টিনা একেবারে পায়নি তা নয়। কিন্তু আর্জেন্টিনা ফেবারিটের তকমাটা গায়ে মাখেনি। মেসিতো বারং বার বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বকাপের সেরা দল না। তবে বিশ্বকাপ জয়ের ভালো সুযোগ আছে আমাদের।’ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ভালো ফুটবল খেলতে না পারা। মেসি নির্ভরতা। দলের খেলোয়াড়দের ইনজুরি। এসব কারণে অনেকে আর্জেন্টিনাকে ফেবারিট বললেও টপ ফেবারিট বলছে না। কারো কারো মতে, আর্জেন্টিনা বাতিলের খাতায় থাকতো যদি না তাদের মেসি থাকতো। আর এই তকমা না থাকায় নির্ভার মেসিরা। চাপ অন্যদের থেকে কম। যেটা মেসিদের বিশ্বকাপ জয়ে ভালো প্রভাব রাখতে পারে।