প্রচ্ছদ জাতীয় মাদকবিরোধী অভিযানে ৪ জেলায় বন্দুকযুদ্ধে ৪ জন নিহত

মাদকবিরোধী অভিযানে ৪ জেলায় বন্দুকযুদ্ধে ৪ জন নিহত

ময়মনসিংহ, ফেনী, বরিশাল এবং ময়মনসিংহ, যশোরে শনিবার রাত থেকে রোববার ভোরের মধ্যে কথিত বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত হয়েছেন, যারা মাদক চোরাকারবারি ও ডাকাত বলে পুলিশের ভাষ্য।

এর মধ্যে রাত সোয়া ২টার দিকে ময়মনসিংহের মাসকান্দা এলাকার গনশার মোড়ে গোয়েন্দা পুলিশের গুলিতে নিহত হন ৪০ বছর বয়সী রিয়াজুল ইসলাম বিপ্লব।

কাছাকাছি সময়ে বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ বটতলা এলাকায় গোয়েন্দা পুলিশের গুলিতে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়।

ভোরের দিকে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের পশ্চিম পাঠান গড় এলাকায় থানা পুলিশের গুলিতে নিহত হন পাঠান গড় গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে আলমগীর হোসেন ভূইয়া (৩৩)।

আর যশোরে ‘মাদক চোরাকারবারিদের দুই দলের মধ্যে’ গোলাগুলির খবর পেয়ে ছুটিপুর সড়কের রুদ্রপুর গ্রামে গিয়ে ভোরের দিকে অজ্ঞাতপরিচয় আরেক ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের খবর জানিয়েছে পুলিশ।

ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই পরিমল দাস বলছেন, নিহত বিপ্লব ছিলেন শহরের ‘শীর্ষ মাদক চোরাকারবারি।

তবে তার বিরুদ্ধে কতটি মামলা রয়েছে – সে তথ্য তিনি দিতে পারেননি।

পরিমল বলেন, মাসকান্দা এলাকায় কয়েকজন মাদক কারবারি একটি চালানের ভাগাভাগি করছে খবর পেয়ে ডিবির একটি দল গনশার মোড়ে যায়।

“মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পিছু হটলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মাদক সম্রাট বিপ্লবকে আটক করা হয়।”

গুলিবিদ্ধ বিপ্লবকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এসআই পরিমল বলছেন, এই অভিযানে রাশেদুল ও কাওছার নামে দুই পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়েছেন, তারা পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ঘটনাস্থল থেকে ২০০ গ্রাম হেরোইন, ২০০টি ইয়াবা, তিনটি গুলির খোসা ও দুটি চাকু উদ্ধার করার কথাও বলেছেন তিনি।

ফেনী

ছাগলনাইয়া থানার ওসি এম মোর্শেদ বলছেন, নিহত আলমগীর হোসেন ভূইয়া একজন ‘চিহ্নিত মাদক চোরা কারবারি’। তার বিরুদ্ধে ফেনী সদর, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া থানায় নয়টি মামলা রয়েছে।

এই পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্য, ছাগলনাইয়ার পশ্চিম পাঠান গড় এলাকায় মাদকের একটি বড় চালান যাওয়ার খবরে পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযানে যায়।

“এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি করে। পুলিশও আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলি থামার পর সেখানে আলমগীরকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।”

ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলমগীরকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ অভিযানেও দেলোয়ার হোসেন ও মতিয়ার রহমান নামে পুলিশের দুই এএসআই আহত হয়েছেন এবং তাদের জেলা সদর হাসপাতালে ‘প্রাথমিক চিকিৎসা’ দেওয়া হয়েছে বলে ওসির ভাষ্য।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি বন্দুক, তিন রাউন্ড গুলি, এক হাজার ইয়াবা ও শতাধিক বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করেছে।

এর আগে শুক্রবার রাতে সোনাগাজীতে জসিম উদ্দিন (৩৫) নামে সন্দেহভাজন এক জলদস্যু অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে নিয়ে অভিযানে যায় পুলিশ।

সোনাগাজী উপজেলার চর দরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিণ চর সাহাভিকারী গ্রামের হাজীপাড়া এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ডাকাত দলের গোলাগুলির মধ্যে জসিম নিহত হয় বলে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেনের ভাষ্য।

তিনি বলছেন, জেলা পুলিশের খাতায় জসিমের নাম রয়েছে ‘শীর্ষ জলদস্যু ও আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য’ হিসেবে। তার বাড়ি উপজেলার চর দরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিণ চর সাহাভিকারী এলাকায়।

বরিশাল
বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সহকারী কমিশনার নাছির মল্লিক বলছেন, উপজেলার শায়েস্তাবাদ এলাকায় ডাকাতি বেড়ে যাওয়ায় সেখানে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছিল। শনিবার রাতে পুলিশের একটি টহল দলের সঙ্গে ডাকাতদের গোলাগুলির ঘটনা ঘেটে।

“ডিবি পুলিশের টহল দল বটতলা এলাকায় গেলে একদল ডাকাত পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি করে। এক পর্যায়ে ডাকাতরা পিছু হটলে ঘটনাস্থলে এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। ”

এ অভিযানে ডিবি পুলিশের এক এসআই ও দুই কনস্টেবল আহত হয়েছেন এবং তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে নাছির মল্লিকের ভাষ্য।

তিনি বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, একটি দা ও একটি চাপাতি উদ্ধার করেছে।

যশোর

যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি কেএম আজমল হুদা বলছেন, ছুটিপুর সড়কের রুদ্রপুর গ্রামে মাদক চোরাকারবারিদের দুটি দলের মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে রোববার ভোরে পুলিশের একটি দল সেখানে যায়।

গুলিবিদ্ধ একটি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি ,তবে সে যে একজন মাদক ব্যবসায়ী তা নিশ্চিত করেছেন

“পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। এ সময় সেখানে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।”

পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে যশোর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ঘটনাস্থল থেকে ৪০০ ইয়াবা, একটি ওয়ানশুটার গান ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয় বলে জানান ওসি।

পুলিশ নিহতের নাম-পরিচয় জানাতে না পারলেও তিনি মাদক চোরাচালানে জড়িত ছিলেন বলে কোতোয়ালির ওসির ধারণা।