প্রচ্ছদ জাতীয় মাছ আমদানির জন্য নতুন আইন

মাছ আমদানির জন্য নতুন আইন

মাছ আমদানির ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক জীবাণু বহন প্রতিরোধে শাস্তির বিধান রেখে নতুন একটি আইনের অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এটি অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৈঠক শেষে দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মাছ আমদানির ক্ষেত্রে কোনো ক্ষতিকারক জীবাণু বহন করে বা নিয়ে আসে, সেটার জন্য কোনো আইন নেই। সবজির জন্য আইন আছে। এ আইনটি নতুন তৈরি করা হয়েছে। নতুন আইনে মাছ আমদানির সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া মাছ আমদানির ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক জীবাণু বহনের অপরাধ কী এবং তা প্রতিরোধে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।

মাছ আমদানির সংজ্ঞা জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মাছ আমদানি বলতে জল, স্থল, আকাশ পথে অন্য কোনো দেশ থেকে বাংলাদেশে মাছ নিয়ে আসা। আর মৎস্য বলতে সব ধরনের কোমল ও কঠিন অস্থি বিশিষ্ট মাছ, স্বাদু ও লবণাক্ত পানির চিংড়ি, উভচর জলজ প্রাণী, কচ্ছপ, কুমির, কাঁকড়া জাতীয় প্রাণী, শামুক বা ঝিনুক জাতীয় জলজ প্রাণী, ব্যাঙ বা সরকারি প্রজ্ঞাপনে ঘোষিত জলজ প্রাণী বোঝাবে।

তিনি বলেন, এমন আইন পৃথিবীর মোটামুটি প্রায় সব দেশেই আছে। আমাদের দেশে আগে ছিল না, এবার নতুন করা হয়েছে। নতুন এই আইনে একটি সঙ্গনিরোধী কর্তৃপক্ষ গঠন করার কথা বলা হয়েছে। অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশে মাছের রোগ-জীবাণু অনুপ্রবেশ ও বিস্তার রোধে মৎস্য, মৎস্যপণ্য, উপকারী জীবাণু বা প্যাকিং দ্রব্যাদির আমদানি নিয়ন্ত্রণসহ কর্তৃপক্ষকে ১০টি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে সবকিছু দেখভাল করবে মৎস্য অধিদপ্তর।

আইনে অপরাধ ও তার শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে, জানিয়ে মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, অনুমতি ছাড়া মৎস্যপণ্য আমদানি করলে সর্বনিম্ন ১ বছর ও সর্বোচ্চ ৭ বছর করাদণ্ড অথবা ৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। তাছাড়া কোম্পানির ক্ষেত্রে তার পরিচালক, অংশীদার, ম্যানেজার বা অন্য কোনো কর্মকর্তা অনুমতি ছাড়া মৎস্যপণ্য আমদানি করলে অপরাধ হবে, ব্যক্তির অপরাধের মতো সাজা হবে যদি নির্দোষ প্রমাণ করতে না পারে।

তিনি বলেন, পুলিশ, র‌্যাব, কাস্টমস, বিজিবি, কোস্টগার্ড, ডাক বিভাগ, বন্দর কর্তৃপক্ষ, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, রেলওয়ে, শিপিং এজেন্সিসহ সমজাতীয় এজেন্সিগুলোর কর্মকর্তাকে এ আইনের পরিপন্থী কার্যক্রম রোধ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। মৎস্য সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তাও এ আইনে ক্ষমতা প্রয়োগ ও সহায়তা করতে পারবেন। মৎস্য সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তার অনুমোদন ছাড়া কোনো আদালত এ মামলা নেবে না বলে আইনে বলা হয়েছে।

‘তবে পুলিশ বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারবে না। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, মোবাইল কোর্টেও বিচার করা যাবে,’ বলেন সচিব।

সচিব আরো বলেন, আইনের অধীন লিখিত আদেশে কোনো আমদানি অনুমতিপত্র গ্রহিতা সংক্ষুব্ধ হলে ওই ব্যক্তি আদেশপ্রাপ্তির তারিখ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিকার লাভের উদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষ ও সরকারের কাছে আপিল করতে পারবেন। আপিল দাখিলের তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে।