প্রচ্ছদ সারাদেশ ঢাকা বিভাগ প্রেমঘটিত বিষয়ে শিবালয়ে কলেজ ছাত্র জিসান হত্যা, গ্রেপ্তার ৫

প্রেমঘটিত বিষয়ে শিবালয়ে কলেজ ছাত্র জিসান হত্যা, গ্রেপ্তার ৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, মানিকগঞ্জ :

মানিকগঞ্জের শিবালয়ে প্রেমঘটিত বিষয়ে মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের জেরে কলেজছাত্র মো. তানভীর আহাম্মদ জিসান হত্যার অভিয়োগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে শিবালয় থানা পুলিশ।

নিহত জিসান ঢাকার মোহাম্মদপুরের কাদেরাবাদ এলাকার শাহিন আলমের ছেলে এবং মোহাম্মদপুর হাজী মুকবুল হোসেন ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডের কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে আটককৃতরা। আজ শুক্রবার আসামিদের ১০ দিন রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, শিবালয় উপজেলার পাচুরিয়া এলাকার জুলহাসের ছেলে রাব্বি হোসেন ওরফে প্রান্তিক (১৮), ছোট শাকরাইল এলাকার ঝাড়ু মোল্লার ছেলে নাজমুল (১৮), সমেজ মোল্লার ছেলে শরিফ হোসেন (১৮), জামাল মোল্লার ছেলে আজিজুল (১৮) এবং ঢাকাইজুড়া এলাকার শামীম হাসানের ছেলে হাসিবুন হাসান (১৮)।

Manikganj Student Kill

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ১৫ তারিখে জিসান ঢাকা থেকে নানা বাড়ি যাবার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। জিসানের পরিবার অনেক খোঁজাখুজির পর রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় একটি জিডি করেন। এদিকে গত ১৮ তারিখে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটের কাছে পদ্মায় অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে জিসানের পরিবার ওই যুবকের জামা-কাপড় দেখে তাকে শনাক্ত করে।

পরে ঢাকার মোহাম্মদপুর পুলিশ শিবালয় থানায় বিষয়টি অবগত করে। এ ঘটনায় শিবালয় থানা পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৃহস্পতিবার সারারাত অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের আটক করতে সক্ষম হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিবালয় সার্কেল) তানিয়া সুলতানা জানান, আসামিদের ভাষ্যমতে, প্রধান আসামি রাব্বির সাথে এক মেয়ের সাথে প্রেমের সর্ম্পক ছিল। ওই মেয়ের সাথে দেখা করতে ঢাকায় আসলে জিসানের কয়েক বন্ধু ঢাকা থেকে রাব্বির মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং অপমান করে। এরপর থেকে রাব্বি প্রতিশোধ নেবার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। জিসান পূর্ব পরিচিত থাকার সুবাদে রাব্বি সুযোগ খুঁজছিল। জিসানের প্রেমিকার নানীর বাড়ি শিবালয়ের ছোট শাকরাইল এলাকায় থাকায় তাকে দেখা করতে খবর দেয় রাব্বি। চলতি মাসের ১৫ তারিখে রাতে সিজান গাড়িযোগে পাটুরিয়া ঘাটে এসে নামে। এসময় রাব্বিসহ পাঁচ বন্ধু মিলে তাকে পাটুরিয়া ট্রাক টার্মিনালের কাছে নদীর চরে নিয়ে রশি দিয়ে হাত বেঁধে চাকু দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে জিসানকে। চাকুর ৩২টি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে নদীর পানিতে ভাসিয়ে দেয়।

শিবালয় থানার ওসি ফিরোজ কবির জানান, আমরা জিসানের বিষয়টি ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার মাধ্যমে অবগত হবার পরই প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল ট্র্যাক করছিলাম। তখন জিসানের কললিস্টে প্রান্তিককে পাওয়া যায়। কিন্তু কোনভাবে আসামির বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারছিলাম না। পরে অনেক তদন্ত করে জানতে পারি প্রান্তিক নামের ছেলেটির আরেক নাম রাব্বি। পরে তাকে আমরা অভিযান করে আটক করলে বিষয়টি সামনে আসতে থাকে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) আশীষ কুমার সান্যাল জানান, এ ঘটনায় জিসানের বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে আসামিদের কোর্ট প্রেরণ করা হয়েছে।