প্রচ্ছদ খেলাধুলা নভেম্বরে মাঠে ফেরার আশা সাকিবের

নভেম্বরে মাঠে ফেরার আশা সাকিবের

তাকে নিয়ে শঙ্কা ছিল অনেক। সেই সঙ্গে ডালপালা মেলছিল অনেক গুঞ্জনও। সংক্রমণ হওয়া আঙুলের ব্যাপারে মতামত জানতে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পর থেকেই সেসব গুঞ্জনের শুরু, যার বেশিরভাগই ছিল তার মাঠে ফেরার সম্ভাব্য সময় নিয়ে। গতকাল অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফেরা সাকিব আল হাসান নিজেও নিশ্চিতভাবে বলতে পারলেন না মাঠে ফিরতে তার কত সময় লাগবে। তবে জানালেন, আগের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় রয়েছে আক্রান্ত আঙুল। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সামনের মাসেই মাঠে ফেরার সম্ভাবনার কথাও শোনালেন।

চোট পেয়েছিলেন গত জানুয়ারিতে দেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজে। এরপর সেই চোট নিয়েই খেলে গেছেন। তবে সমস্যা প্রকট হয় সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ খেলতে গিয়ে। টুর্নামেন্টের মাঝপথেই ফিরে এসেছিলেন দেশে। ফেরার পরই আঙুলে সংক্রমণ দেখা দেয়। ঢাকার এক হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর আঙুল থেকে বের করা হয় প্রায় ৭০ মি.লি. পুজ।

সংক্রমণ না কমলে অস্ত্রোপচার করা যাবে না আর দ্রুত অস্ত্রোপচার না হলে আঙুলের অবস্থা হতে পারে আরও খারাপ-এমন বাস্তবতার সামনে দাঁড়িয়ে গত ৫ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন সাকিব। সে সময় তার চোখেমুখে ঘাবড়ে যাওয়ার ছাপ ছিল বেশ স্পষ্ট। তবে অস্ট্রেলিয়া থেকে ফেরা সাকিব অনেকটাই হাসিখুশি। কারণ, ডাক্তারদের দেওয়া কিছু সুসংবাদ।

বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমকে সাকিব বলেন, আগের চেয়ে অনেকটাই কমে গেছে ব্যথা। পুনর্বাসনের মাধ্যমে হাতে পুরোপুরি শক্তি ফিরে পেলে নামতে পারবেন মাঠে, ‘হাতে এখন ব্যথাটা নেই। আগের চেয়ে অনেক ভালো অনুভব করছি। এই মুহূর্তে সংক্রমণটাও নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে প্রতি সপ্তাহে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে দেখতে হবে, এটা বেড়েছে কি-না। এখন দেখার ব্যাপার হচ্ছে, হাতের শক্তি কত তাড়াতাড়ি ফিরে আসে। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাড়াতাড়ি শক্তি ফেরানো সম্ভব। সেটা হলে, সামনের মাসেও মাঠে ফিরতে পারি।’

তবে এই ফেরার ব্যাপারটা নিয়ে যে কিছুটা অনিশ্চয়তা থেকে যাচ্ছে, সেটাও জানাতে ভুললেন না দেশসেরা এই অলরাউন্ডার, ‘এটা আসলে এমন একটা সমস্যা, যেটা ঠিক হওয়ার জন্য কোনো বাঁধাধরা সময় নেই। এক মাস পরও খেলতে পারি, আবার ছয় মাসও লাগতে পারে। আমি হয়তো আশা করছি, এক মাস পরই পারব। কিন্তু ব্যাপারটা যেহেতু হাতে শক্তি ফিরে আসার, সে ক্ষেত্রে এক মাসের চেয়ে বেশি সময়ও লাগতে পারে।’

তবে যে অস্ত্রোপচার নিশ্চিত করার জন্য এতকিছু, সেটা নিয়ে রয়ে গেছে কিছুটা অনিশ্চয়তা। সাকিব বললেন, ‘যেহেতু এখন ব্যথা নেই, তাই মনে হচ্ছে অস্ত্রোপচার ছাড়াই খেলতে পারব। এটা নিয়েই এখন চিন্তা করা হচ্ছে, অস্ত্রোপচার ছাড়াই কীভাবে খেলা যায়। কিন্তু পুনর্বাসনের পর যদি আবারও ব্যথা অনুভব করি, তাহলে অস্ত্রোপচার করাতেই হবে। কিন্তু সেটা ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে করা যাবে না। কারণ, সংক্রমণ যদি হাড়ের ভেতর অব্দি পৌঁছায়, তাহলে সেটা সারার সম্ভাবনা নেই। কারণ হাড়ের ভেতর যেহেতু রক্ত নেই, আর সেখানে যেহেতু অ্যান্টিবায়োটিক পৌঁছায় না, তাই অপেক্ষা করতে হবে। সংক্রমণ ওই পর্যন্ত গেছে কি-না, সেটা নিশ্চিত হওয়ার জন্যই আসলে ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে অস্ত্রোপচার করা হবে না।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে সাকিবের না খেলাটা নিশ্চিত হয়েছিল আগেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজেও তাকে পাওয়া নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। দলের সেরা খেলোয়াড় বলেই তাকে ছাড়া দল গঠনে বেশ বেগ পেতে হয় নির্বাচকদের। তবে সাকিব নিজের এই অনুপস্থিতিকে দেখছেন নতুন ক্রিকেটারদের জন্য একটা সুযোগ হিসেবে।

মনে করিয়ে দিলেন, তাকে ছাড়াই গত মাসে দল এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছে, ‘আমাকে ছাড়াই দল এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলেছে। তামিমও তো ছিল না। আমাদেরকে ছাড়া যদি এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলতে পারে দল, তাহলে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কেন ভালো করতে পারবে না? দু-একজন খেলোয়াড় মাঝে মাঝে ফিট থাকবে না, এটা খেলাধুলার অংশ। সবাই তো সবসময় খেলতে পারবে না। তবে এর ভালো দিক হচ্ছে, নতুন কয়েকজন খেলোয়াড় সুযোগ পায়। আশা করি, দলের নতুন খেলোয়াড়রা সেই সুযোগ কাজে লাগাবে এবং ভালো করবে।’