প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ তামাকে উচ্চহারে কর আরোপের আহ্বান

তামাকে উচ্চহারে কর আরোপের আহ্বান

তরুণ প্রজন্মকে তামাকে আসক্ত করতে নানা প্রতারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে তামাক কোম্পানিগুলো। তাদের মুনাফার বলি হচ্ছে দেশের সম্ভাবনাময় তরুণরা। পাশাপাশি তামাক ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নীতিতে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন এবং তামাকের কর বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে তামাক কোম্পানিগুলো।

তরুণ প্রজন্মকে তামাক ব্যবহারে নিরুৎসাহিতকরণ ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে এর ওপর উচ্চহারে কর আরোপ ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সব নীতিতে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ বন্ধ জরুরি।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র আয়োজনে ‘তামাকের ওপর কর বৃদ্ধিতে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ বন্ধ করা হোক’ শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি বক্তারা এ আহ্বান জানান।

জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতির (নাটাব) প্রকল্প সমন্বয়কারী একেএম খলিল উল্লাহর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান, এইড ফাউন্ডেশনের সিনিয়র অ্যাডভোকেসি অফিসার কাজী মো. হাসিবুল হক, বাপার জাতীয় কমিটির সদস্য মো. নাজিমুদ্দিন, টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল এর প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন প্রমুখ। কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের নেটওয়ার্ক কর্মকর্তা শুভ কর্মকার।

বক্তারা বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রণীত বিভিন্ন নীতি ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করতে বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করে আসছে। প্রতি বছর তামাক কোম্পানিগুলোর বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদানের জন্য কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় তামাকজাত দ্রব্যের ওপর কর বৃদ্ধি সম্ভব হচ্ছে না। কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণে উচ্চহারে কর বৃদ্ধির বিকল্প নেই।

বাংলাদেশে ৪৯ শতাংশ মানুষ বয়সে তরুণ। দেশে কর্মক্ষম জনসংখ্যা ১০ কোটি ৫৬ লাখ। তামাক কোম্পানিগুলো এই কর্মক্ষম তরুণ জনগোষ্ঠীকে তামাকজাত দ্রব্যের ভোক্তা হিসেবে পেতে মরিয়া। তাদের এ অপতৎপরতা প্রতিহত করতে হবে। সুনাগরিক হিসাবে গড়ে ওঠতে ও স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য তরুণদের ধূমপানসহ সব ধরনের নেশা থেকে দূরে থাকা দরকার। বর্তমান যুবকদের অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে সচেতন করতে পারলে আগামীতে প্রবীণদের মাঝে এ রোগ কমে আসবে। ফলে দেশের সামগ্রীক প্রবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারবে দেশের যুবসমাজ।

বক্তরা আরো বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় রাজস্ব প্রয়োজন কিন্তু রাষ্ট্রের জনগণকে ক্ষতিকর নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবনের মাধ্যমে রাজস্ব প্রাপ্তি কখনোই কাম্য নয়। তামাক কোম্পানিগুলো যে পরিমাণ রাজস্ব প্রদান করে তারচেয়ে অনেক বেশী মানুষ প্রতি বছর তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের কারণে অকালে মৃত্যুবরণ করে এবং পঙ্গুত্বের শিকার হয়। সারা বছর তামাক কোম্পানিগুলো কোনো কর্মসূচি পালন না করলেও প্রতি বছরই বাজেট প্রণয়নের সময়কালে অর্থাৎ (মে-জুন মাসে) তামাকজাত দ্রব্যের ওপর শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে তারা নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। বাজেট চলাকালীন সময়ে এসব কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য থাকে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরির মাধ্যমে তামাকের কর এবং প্রকৃত মূল্যবৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা। তামাক কোম্পানিগুলো বছরে শত শত কোটি টাকার কর ফাঁকি দিচ্ছে। তাদের কাছ থেকে কর আদায়ের রাজস্ব বিভাগকে আরো সক্রিয় হতে হবে। কর ফাঁকি প্রতিরোধে সকল তামাক কোম্পানিকে নিবন্ধনের আওতায় আনারও দাবি জানান তারা।

কর্মসূচিতে প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠন, হিমু পরিবহন, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিং, উন্নয়ন সংগঠক সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।