প্রচ্ছদ খেলাধুলা টাইব্রেকারে ব্রাজিলের রেকর্ড কেমন

টাইব্রেকারে ব্রাজিলের রেকর্ড কেমন

দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই শুরু নক আউট পদ্ধতি। তাই নির্ধারিত সময়ে কোন খেলা অমীমাংসীত থাকলে, দেয়া হয় অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময়। তাতেও জয়-পরাজয় নির্ধারিত না হলে প্রয়োগ হয় পেনাল্টি শুট আউটের মাধ্যমে টাইব্রেকিং পদ্ধতি। টাইব্রেকার এমন এক নাম যেখানে এলে নিরব হয়ে যায় উত্তেজনাময় ফুটবলের সব উদ্দামতা, থমকে যায় স্টেডিয়ামসহ পুরো ফুটবল দুনিয়া। গোল লাইন আর ১২গজ দুরত্বের একটি বিন্দুর মধ্যে পেন্ডুলামের মত দুলতে থাকে ম্যাচের ভাগ্য। টাইব্রেকারকে অনেকে ‘কিক অব ডেথ’ বলেও সম্মোধন করে থাকেন।

এবার এখন পর্যন্ত দুটি ম্যাচে টাইব্রেকার হয়েছে। তাতে পুরো ১২০ মিনিট দাপটের সাথে খেলেও স্পেন হেরে গেছে রাশিয়ার কাছে, অন্যদিকে ক্রোয়েশিয়া হারিয়েছে ডেনমার্ককে। আজ ব্রাজিল খেলতে নামবে মেক্সিকোর বিপক্ষে। তার আগে জেনে নেয়া যাক দুই দলের টাইব্রেকারের ইতিহাস।

বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ব্রাজিল চার বার মুখোমুখি হয়েছে টাইব্রেকারের। এর মধ্যে প্রথমবার ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে ৩-৪ ব্যবধানে হারে তারা। ব্রাজিলের পক্ষে প্রথম শটটিই মিস করেন তারকা ফুটবলার সক্রেটিস। আর পঞ্চম শটটি মিস করেন জুলিও সিজার। ফ্রান্সের পক্ষে একটি মাত্র শট মিস করে কিংবদন্তী ফুটবলার মিশেল প্লাতিনি।

এরপর ১৯৯৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে ব্রাজিল মুখোমুখি হয় ইতালি। নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও বর্ধিত ৩০ মিনিটে গোল করতে পারেনি কোন দলই। টাইব্রেকারে প্রথম শট নিতে গিয়েই মিস করেন ব্রাজিলের সান্তোস। ইতালির পক্ষে প্রথম শটে গোল করতে ব্যর্থ হন বারেসি। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শটে ব্রাজিলের পক্ষে গোল করেন রোমারিও, ব্রাঙ্কো ও দুঙ্গা। ইতালি দ্বিতীয় ও তৃতীয় শটে গোল করলেও চতুর্থ শটে মিস করেন মাসারো। আর পঞ্চম শটে তো হিরো থেকে ভিলেই হয়ে যান রবার্তো ব্যাজিও। বার পোস্টের বাইরে দিয়ে উড়িয়ে মারেন ব্যাজিও। অথচ ইতালির ফাইনালে যাওয়ার প্রধান নায়ক ছিলেন তিনি। সেই বিশ্বকাপে ইতালিকে ফাইনালে তুলতে ৫টি গোলসহ তার ভুমিকা ছিল অদ্বিতীয়। তাছাড়া পরিসংখ্যান বলে ২২ বছরের ক্যারিয়ারে ৯১টি পেনাল্টির ৭৬টিই লক্ষ্যভেদ করেছেন রবার্তো বাজ্জিও। ইতালিয়ান ফুটবল ইতিহাসেই সেটা সেরা। সে ম্যাচে অবশ্য ইতালিয়ান ডিফেন্ডার ফ্রাঙ্কো বারেসিও কিক মিস করেন।

১৯৯৮-এর সেমিফাইনালে ব্রাজিল টাইব্রেকারে হারিয়েছিল নেদারল্যান্ডসকে (৪-২)। খেলার ১২০ মিনিট এক এক গোলে ড্র হলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ব্রাজিলের পক্ষে প্রথম চার শটেই গোল করেন রোনালদো, রিভালদো, এমারসন ও দুঙ্গা। প্রথম চার শটের দুটিই মিস করে নেদারল্যান্ড। তাই পঞ্চম শটে আর যেতেই হয়নি কোন দলকে।

আর গত বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে ব্রাজিল টাইব্রেকারে হারিয়েছিলো চিলিকে(৩-২)। ব্রাজিলের পক্ষে উইলিয়ান ও হাল্ক গোল করতে ব্যর্থ হলেও, চিলির পক্ষে মিস হয় তিনটি শট। তাদের মধ্যে ছিলেন দলের সবচেয়ে বড় তারকা অ্যালেক্সিস সানচেজও। ১৯৯৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে ইতালির বিপক্ষে জয়সূচক কিকটি নেয়ার পর ব্রাজিল দলপতি দুঙ্গা বলেছিলেন, ‘ব্রাজিলিয়ানরা পেনাল্টিকে এতই গুরুত্বপূর্ণ ভাবে যে তাদের মতে কেবল প্রেসিডেন্টকেই এই শট নিতে পাঠানো উচিত।’

১৯৮৬তে দেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে তারা ৪-১ ব্যবধানে হেরেছিলো পশ্চিম জার্মানির কাছে। আর ১৯৯৪ সালে দ্বিতীয় রাউন্ডে বুলগেরিয়ার কাছেও তারা হেরেছিলো একই ব্যবধানে।