ট্রাম্প বলেন, ‘জার্মানি রাশিয়া দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এটা একেবারে অপ্রত্যাশিত। গ্যাস কেনা বাবদ জার্মানি প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি ডলার রাশিয়ার হাতে তুলে দিচ্ছে। আমার কাছে মনে হয়, এ বিষয়ে ন্যাটোর মনোযোগ দেওয়া উচিত।’
ট্রাম্পের সঙ্গে খানিকটা বিরোধিতা করে স্টোলটেনবার্গ বলেন, ‘জোটের সদস্যদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে। তবে আলাদা আলাদ থাকার চেয়ে একসঙ্গে থাকলেই আমাদের শক্তি বাড়বে।’
স্টোলটেনবার্গের এ মন্তব্যের প্রতিবাদ করে ট্রাম্প পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘জার্মানি যেখানে রাশিয়াকে ধনী বানাচ্ছে, সেখানে ন্যাটো শক্তিশালী হবে কিভাবে! আমি যত দূর জানি, জার্মানি রাশিয়া দ্বারা প্রভাবিত।’
ট্রাম্প বলতে থাকেন, ‘জার্মানি ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ গ্যাস কেনে রাশিয়ার কাছ থেকে। এ ছাড়া গ্যাস সঞ্চালনের জন্য নতুন একটি পাইপলাইনের কাজ চলছে, যাতে জার্মানির সমর্থন আছে। এসব বিষয় ন্যাটোর জন্য খুবই খারাপ।’
জার্মানির বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ তোলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘তারা (জার্মানি) জিডিপির ১ শতাংশের চেয়ে সামান্য বেশি অর্থ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ব্যয় করে ৪.২ শতাংশ।’ উল্লেখ্য, ন্যাটো সদস্যরা একমত হয়েছে যে ২০২৪ সালের মধ্যে সবাই নিজেদের জিডিপির ২ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করবে। বর্তমানে শুধু যুক্তরাষ্ট্র, গ্রিস, এস্তোনিয়া, যুক্তরাজ্য ও লাটভিয়া এ লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করেছে। তবে ট্রাম্প যে পরিমাণের কথা বলেছেন, প্রকৃতপক্ষে জার্মানি প্রতিরক্ষা খাতে তার চেয়ে বেশি অর্থ (জিডিপির দেড় শতাংশ) ব্যয় করে। আর যুক্তরাষ্ট্র করে সাড়ে ৩ শতাংশের মতো।
ট্রাম্পের এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী উরসুলা ভন দের লিয়েন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের অনেক বিষয়ে বিরোধ আছে। কিন্তু বিরোধীদের সঙ্গে আপনার যোগাযোগ থাকতেই পারে।’
এদিকে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ন্যাটো সম্মেলনের এক ফাঁকে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ট্রাম্প। জার্মানি সম্পর্কে ট্রাম্প কঠোর সমালোচনা করার পরপরই এ বৈঠকের কথা জানায় হোয়াইট হাউস।
বর্তমানে বাণিজ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এ অবস্থায় এবারের ন্যাটো সম্মেলনে ট্রাম্প তোপের মুখে পড়তে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।