প্রচ্ছদ লাইফস্টাইল কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনে ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার পরিহার করার পরামর্শ

কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনে ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার পরিহার করার পরামর্শ

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম : 

করোনা ভাইরাসে  সেলফ-কোয়ারেন্টিনে এবং আইসোলেশনে থাকার সময় শিল্পোৎপাদিত ট্রান্স ফ্যাটমুক্ত খাবার খেতে পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ট্রান্স ফ্যাট এক প্রকার হাইড্রোজেনেটেড অয়েল। এই আংশিক হাইড্রোজেনেটেড তেলই শিল্পোৎপাদিত ট্রান্স ফ্যাটের প্রধান উৎস, যা ডালডা বা বনস্পতি ঘি নামেও পরিচিত। ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাদ্যদ্রব্য যেমন, প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্টফুড, স্ন্যাক্স ফুড, ভাজাপোড়া খাবার, বিস্কুট, কুকিজ, মার্জারিন পরিহারের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হৃদরোগীরা করোনা ভাইরাসে বশেি ঝূঁকপূর্ণ।  বাংলাদেশে প্রতিবছর ২ লাখ  ৭৭ হাজার মানুষ হৃদরোগে মারা যায়, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এছাড়াও  ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবারের কারণে স্ট্রোক এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়।  ট্রান্সফ্যাট যুক্ত খাবার হৃদরোগের অন্যতম প্রধান কারণ। তাই রোগ- প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের উপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

খাদ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো খাবার সংরক্ষণের সুবিধার্থে এবং বিভিন্ন ভাজা পোড়া ও বেকারি খাদ্য পণ্যের স্বাদ, ঘ্রাণ এবং স্থায়ীত্ব বাড়ানোর জন্য আংশিক হাইড্রোজেনেটেড তেল ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া ভাজা পোড়া খাদ্যে একই ভোজ্য তেল উচ্চ তাপমাত্রায় বারবার ব্যবহারের কারণেও খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাট সৃষ্টি হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেকোনো খাবারে শিল্পোৎপাদিত  ট্রান্স ফ্যাটের সর্বোচ্চ মাত্রা মোট ফ্যাটের ২ শতাংশ পর্যন্ত সীমিত রাখার পরামর্শ দিয়েছে। সেইসাথে ২০২৩ সালের মধ্যে শিল্পোৎপাদিত ট্রান্স ফ্যাটমুক্ত বিশ্ব অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) দেশে প্রচলিত ফাস্টফুড, বেকারিপণ্য, স্ট্রিট ফুড কিংবা রেস্তোরায় তৈরিকৃত ভাজা-পোড়া খাদ্যপণ্য তৈরিতে হাইড্রোজেনেটেড তেলের ব্যবহার কমাতে এবং ভোজ্যতেল বারবার ব্যবহার থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।

শিল্পোৎপাদিত ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড নির্মূল ক্রমেই বিশ্বজুড়ে একটি অগ্রাাধিকার হয়ে উঠছে।

বিশ্বের  প্রথম দেশ হিসেবে ডেনমার্ক ২০০৩ সালে আইন করে খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটের সর্বোচ্চ সীমা মোট ফ্যাটের ২ শতাংশ নির্ধারণ করে। অস্ট্রিয়া, নরওয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা, থাইল্যান্ড, ইরান, ভারতসহ মোট ২৮টি দেশে খাদ্য দ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ কার্যকর করায় এসব দেশে ইতিমধ্যে শিল্পোৎপাদিত খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাটের পরিমাণ ব্যাপক হাওে হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া আরো ২৪টি দেশ ট্রান্স ফ্যাট নিয়ন্ত্রণ বাধ্যতামূলক করেছে, যা আগামী দুই বছরের মধ্যে কার্যকর হবে।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) সূত্রে জানা গেছে, ট্রান্স ফ্যাটের মাত্রা ২ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারনে তারা কাজ শুরু করেছে। কমিটি ইতিমধ্যে দুটি বৈঠক করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত  স্ট্যান্ডার্ড মেনেই শিগগিরই   এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।