প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ ‘এরা ছাত্রলীগের কর্মী, গুণ্ডাবাহিনীতে রূপান্তরিত হয়েছে’

‘এরা ছাত্রলীগের কর্মী, গুণ্ডাবাহিনীতে রূপান্তরিত হয়েছে’

কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত রবিবার শহীদ মিনারে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর উপর চড়াও হওয়ার ঘটনায় ছাত্রলীগকে দুষছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষক।

মঙ্গলবার ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের শিক্ষক লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। শিক্ষার্থীদের উপর একের পর এক হামলার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এসময় ক্ষোভও প্রকাশ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হক, সহযোগী অধ্যাপক রাজ্জাক খান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রুশাদ ফরিদী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তানজিম উদ্দীন খান প্রমুখ।

এ সময় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুর রাজ্জাক খান বলেন, ”আমি নির্দ্বিধায় বলতে চাই, এরা ছাত্রলীগের কর্মী, এরা গুণ্ডাবাহিনীতে রূপান্তরিত হয়েছে।”

ছাত্রলীগের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, “ছাত্রলীগ তাদের ইতিহাস জানে না, তাদের ঐতিহ্য জানে না। আগের ছাত্রলীগ আর এই ছাত্রলীগ এক নয়। এটা সিম্পলি গুণ্ডাবাহিনী। যাদের শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নেই, তারা কোথায় পড়েছে, আমি জানি না। এই ধরনের আচরণ আমি আমার ২০ বছরের শিক্ষক জীবন ও সাংবাদিকতা জীবনে দেখি নাই।”

সংবাদ সম্মেলনে ড. সামিনা লুৎফা বলেন, “আন্দোলনে যুক্তদের ‘বাম ঘরানার শিবির’, ‘জঙ্গির মতো’, ‘জামাত-শিবির’ ইত্যাদি অভিধায় ভূষিত করা হচ্ছে। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ব্যাপার, যারা নিপীড়ক তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপই গ্রহণ করা হচ্ছে না। কেবল যারা নিপীড়িত, তাদের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে, বক্তব্য প্রদান করা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দিক থেকে।”

শিক্ষক লাঞ্ছনার পরিপ্রেক্ষিতে পদক্ষেপ ও নিপীগনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংবাদ সম্মেলনে চারটি কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষকরা। এর মধ্যে আগামী ১৯ জুলাই বেলা ১১টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে শিক্ষকদের সংহতি সমাবেশ, ২৩ জুলাই কলাভবনের সামনে বটতলায় নিপীড়নবিরোধী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষক লাঞ্ছনার পরিপ্রেক্ষিতে পদক্ষেপ নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কাছে পত্র প্রেরণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আচার্যের কাছে স্মারকলিপি প্রদান।

প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপনের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর সম্প্রতি ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি স্থানে হামলা হয়। এজন্য ছাত্রলীগকেই দায়ী করে আসছিলেন আন্দোলনকারীরা। এর মধ্যে বিভিন্ন মামলায় আন্দোলনকারী বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক সেই সব শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে গত রবিবার শহীদ মিনারে মানববন্ধনে শিক্ষকদের উপর চড়াও হন ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী; পরে তারা মারধর করে দুজন শিক্ষার্থীকেও। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় সংগঠনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।