প্রচ্ছদ সারাদেশ খুলনা বিভাগ ঋণ ও লোকসানের বোঝা নিয়ে ঝিনাইদহের চিনিকল আখ মাড়াই মৌসুম শুরু

ঋণ ও লোকসানের বোঝা নিয়ে ঝিনাইদহের চিনিকল আখ মাড়াই মৌসুম শুরু

ঝিনাইদহ থেকে, জাহিদুর রহমান তারিকঃ ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ চিনিকল (মেচিক) উদ্বোধনের পর ১৫ ঘন্টা আখ মাড়াই বন্ধ ছিল। শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সুগারমিল ২০১৮-১৯ আখ মাড়াই মৌসুম শুরু হয়। দুই ঘন্টা পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে বন্ধ করা হয়। শনিবার সকাল ১১টার দিকে মেরামত করে আবার আখ মাড়াই কার্যক্রম শুরু করা হয়। মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের কারখানা ব্যবস্থাপক শহিদুল হক জানান, উদ্বোধনের পরেই মিলহাউজের রির্টান কেরিয়ারে সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া বয়লালের ৪ নং টিউব লিক ধরা পড়ে। যার করনে আখ মড়াই বন্ধ করে মেরামতের পর শনিবার ১১টার দিকে আবার চালানো হয়। তিনি জানান, অনেক দিনের পুরানো এই সুগার মিলে যান্ত্রিক ত্রুটি হতেই পারে। জানা গেছে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের বৃহৎতম ও ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ সুগার মিল প্রায় ৩শ কোটি টাকা ঋণ ও লোকসানের বোঝা নিয়ে শুক্রবার (৭ডিসেম্বর ) আখ মাড়াই মৌসুম শুরু করে। মিলের ইতিহাসে এই মৌসুমটি সুগার মিলের ৫২তম আখ মাড়াই মৌসুম। এবার প্রায় ১ লাখ ৮হাজার ৪২৩ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৮ হাজার ১শ ৩২ মেট্রিকটন চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা রয়েছে সুগারমিল কর্তৃপক্ষের। চিনি আহরনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭.৫০%। আর এ মৌসুমে ৮০-৮৫ দিন আখ মাড়াই করা হবে। মিলে ১ হাজার শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর ২ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বর্তমানে মিলের গুদামে পড়ে আছে ২ হাজার ৫শ মেট্রিকটন চিনি যার মুল্য ১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এছাড়াও মিলে রয়েছে প্রায় ২ হাজার ৬৮৩ মেট্রিকটন চিটাগুড়। যার আনুমানিক মুল্য ৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। গত ৫১টি আখ মাড়াই মৌসুমের মধ্যে সুগারমিলটি লাভের মুখ দেখে মাত্র ১৬টি মৌসুম। যার পরিমান ছিল মাত্র ৩৮ কোটি টাকা। আর ৩৫টি আখ মাড়াই মৌসুমে সুগারমিলটি সরকারের কাছে ঋণ ও লোকসান প্রায় ৩শ কোটি টাকা। লোকসান ও চিনি বিক্রি নাহওয়ার কারণে মোবারকগঞ্জ সুগার এলাকায় আখ চাষের লক্ষমাত্রা দিন দিন কমে যাচ্ছে বলেও শ্রমিকরা জানান। উল্লেখ্য, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা শহরের নলডাঙ্গায় ১৯৬৫ সালে ৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ১৮৯.৮১ একর নিজস্ব সম্পত্তির ওপর নেদারল্যান্ড পদ্ধতিতে সরকার মোবারকগঞ্জ চিনিকলটি স্থাপন করে। এর মধ্যে ২০.৬২ একর জমিতে কারখানা, ৩৮.২২ একর জমিতে স্টাফদের জন্য আবাসিক কলোনী, ২৩.৯৮ একর জমিতে পুকুর ও প্রায় ১০০ একর জমিতে পরীক্ষামূলক ইক্ষু খামার স্থাপিত হয়।