প্রচ্ছদ সারাদেশ ঢাকা বিভাগ উপজেলা নির্বাচন : হরিরামপুরে জনপ্রিয়তার শীর্ষে দেওয়ান সাইদুর রহমান

উপজেলা নির্বাচন : হরিরামপুরে জনপ্রিয়তার শীর্ষে দেওয়ান সাইদুর রহমান

জ.ই.আকাশ : সদ্য সমাপ্ত জাতীয় নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতে দেশের বিভিন্ন জেলা-
উপজেলায় আরও একটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে
সর্বত্র আলোচনার ঝড় বইয়ে চলছে। শুধু চায়ের দোকানেই সীমাবদ্ধ নয়, সামাজিক
যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুকে চলছে প্রচার প্রচারণার উত্তাল হাওয়া।
প্রসঙ্গ একটাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। ইসি থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে
আগামী মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই পাঁচটি ধাপে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের
সকল উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে সরকার দলীয় মহাজোটের
অন্যতম প্রধান দল অর্থাৎ আওয়ামী লীগের ব্যানারে নির্বাচনের টিকিট পাওয়ার
দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণে হরিরামপুরের উপজেলার প্রায় হাফ জজন
নেতা চষে বেড়াচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে গ্রামে।
বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে দেখা যাচ্ছে তাদের পদচারণা। শুধু তাই নয়, লবিং
চলছে দলীয় হাই কমান্ড পর্যন্তও। সরকার দলীয় প্রধান এবং প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ
হাসিনার সরাসরি নির্দেশ, প্রতিটি উপজেলার প্রার্থীদের প্রতি চুলচেরা
বিশ্লেষণের মাধ্যমে মনোনয়ন দেয়া হবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে। দুর্নীতি,
সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে ক্লিন ইমেজের প্রার্থীরাই পাবেন উপজেলা
পরিষদের টিকিট। যেমনটি দেখা গেছে জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রেও। তারই
ধারাবাহিকতায় সর্তক দলীয় আওয়ামী লীগ হাই কমান্ড। এই নির্বাচনকে ঘিরেই
মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলায় চলছে জোর আলোচনা সমালোচনা। ১৯৮৪ সালে
মানিকগঞ্জ মহকুমা থেকে যখন জেলায় পরিণত হয়। তখন এই জেলাকে ৭টি
উপজেলায় রূপান্তরিত করা হয়। মানিকগঞ্জ জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে
বৃহৎ এবং অন্যতম পূণ্য ভূমি হিসেবে পরিচিত পদ্মা অধ্যুষিত হরিরামপুর উপজেলা।
যার আয়নতন ২৪৫.৪২ বর্গকিলোমিটার। ১৩টি ইউনিয়ন ও ২৩৮টি গ্রাম নিয়ে
গঠিত হয় এই হরিরামপুর উপজেলা। ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এই উপজেলার
জন সংখ্যা ১,৭১,২৭৪। বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় দুই লক্ষাধিক দাঁড়িয়েছে।
যার ভোটার সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। ১৩ টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮টি ইউনিয়নের
সিংহভাগই পদ্মায় বিলীন গেলে আয়তনের পাশাপাশি জনসংখ্যাও কিছুটা কমে
যায়। নদী ভাঙনের ফলে অধিকাংশ মানুষ ছন্নছাড়া হয়ে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়
নেয়। কয়েক বছর যাবৎ ফরিদপুর সীমান্তবর্তী এলাকায় চর জেগে উঠলে ছন্নছাড়া

মানুষজন ওই চরে গিয়ে বসবাস শুরু করে। ৮টি ইউনিয়নের প্রায় কয়েকশত পরিবার
এখন চরাঞ্চলে বসবাস করছে। তাই ভোটের মাঠে চরাঞ্চল হয়েছে একটি ক্ষুদ্র
আয়তনের বড়সড় ভোট ব্যাংক। এই ভোট ব্যাংক হিসেবে খ্যাত চরাঞ্চলের দিকেও
প্রার্থীদের দৌড় ঝাঁপ রয়েছে ব্যাপক আকারে। তাই মতবিনিময় করে মন জয় করার
জোর প্রচেষ্টা চলছে চরাঞ্চলের মানুষের সাথে প্রতিটি প্রার্থীর। এ পর্যন্ত
লোকমুখে জানা যায়, সরকার দলীয় প্রধান দল আওয়ামী লীগের প্রায় হাফ ডজন নেতা
মনোনয়নের জন্য দৌড় ঝাঁপ করেছে। অপর দিকে বিশ দলীয় জোটের প্রধান শরীক দল
বিএনপি’র পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে না। তারা
আদৌ নির্বাচনে অংশ নিবে কিনা সেটাও এখনও পরিস্কার নয়। এ উপজেলাটির
বর্তমান চেয়ারম্যান বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সাইফুল হুদা খান শাতিল। ২০১৪
সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমানকে
নাটকীয়ভাবে পরাজিত করে নির্বাচিত হন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সাইফুল
হুদা খান শাতিল। ওই নির্বাচনে দলীয় প্রতিকে নির্বাচন না হলেও দলীয় সমর্থনেই
প্রার্থীরা নির্বাচন করেন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে অংশ
গ্রহণ করেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বর্তমান মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও
প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাজী মো. ইউসুফ মিয়া। দলীয় সমর্থন পেয়েও অজ্ঞাত
কারণে তিনি নির্বাচনের এক সপ্তাহ পূর্বে নির্বাচন বর্জন করেন। দলীয়
ক্রোন্দলের কারণে আওয়ামী লীগের বৃহৎ একটা অংশ নির্বাচনের প্রচরণা থেকে সরে
দাঁড়ান। ফলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমে ওঠে ২০০৯ সালের নির্বাচিত
চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান ও সাইফুল হুদা খান শাতিলের মাঝে। আওয়ামী
লীগের দলীয় ক্রোন্দলের জের ধরেই অনেক নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে দেওয়ান সাইদুর
রহমানকে পরাজিত করে সাইফুল হুদা খান শাতিলকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু এবারের নির্বাচন হবে সম্পূর্ণ দলীয় প্রতিকে। তাই দলের সমর্থন নিয়ে
মনোনয়ের পাওয়ার জোর প্রচেষ্টা চলছে সম্ভব্য প্রার্থীদের মধ্যে। হরিরামপুরের
আলোচিত জনপ্রিয় নেতা সাবেক চেয়ারম্যান এবং মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী
লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক দেওয়ান সাইদুর রহমানের পাশাপাশি এবার সরকার
দলীয় আওয়ামী লীগ থেকে বেশ কয়েকজন নতুন মুখ প্রার্থী হিসেবে
আত্মপ্রকাশ করছে বলে জন মুখ ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের
বরাদ দিয়ে জানা যায়। নতুন মুখ হিসেবে রয়েছে মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী
লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আবিদ হাসান বিপ্লব। তিনি দীর্ঘ দিন ধরেই
উপজেলার বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করে প্রচার প্রচারণা করছেন।
নাম শোনা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা এবং মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের
সম্মানিত সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সালাম চৌধুরী। তিনি অবশ্য অনেক বড়
একটা বহর নিয়ে এবারের জাতীয় নির্বাচনের মনোনয়নও সংগ্রহ করেছিলেন।
কিন্ত শেষ পর্যন্ত তিনি দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে তা প্রত্যাহার করে নেন এবং আশা

করছেন আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলীয় মনোনোয়ন নিবেন। হাইব্রিড
প্রার্থী হিসেবে মানুষের কাছে পরিচিত আরেক প্রার্থী সেলিম মোল্লা।
তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কার প্রাপ্ত সহ-সভাপতি। এই সেলিম মোল্লার
রাজনীতিতে আবির্ভাব বছর ছয়েক আগে। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে
চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে অল্প দিনেই বেশ টাকা মালিক বনে যান।
ঢাকার শাজাহানপুর সহ নিজ গ্রাম ঝিটকার কালোয়তে রয়েছে তার বিলাশ বহুল
বহুতল ভবন। অল্প সময়ে বেশ টাকার মালিক হয়ে তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন।
উপজেলার বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্কুল এবং মাদ্রাসায় দান দীক্ষা করে
মানুষের মাঝে অল্প দিনেই বেশ আলোচনায় চলে আসে এবং কব্জা করেন উপজেলা
আওয়ামী লীগের দলীয় পদও। স্বপ্ন দেখেন উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অংশগ্রহণ
নিয়েও। সেই আলোকেই হরিরামপুরের প্রাণকেন্দ্র ঝিটকা অঞ্চলের বেশ কিছু
নেতাকর্মীও তিনি তার অনুসারী করে তোলেন। কিন্তু বিধি বাম। ২০১৮ সালের
মার্চ মাসের মাঝামাঝি অপহরণ ও অস্ত্র মামলায় ফেঁসে যান। র‌্যাপ-২ এর ২৫ জন
কর্মকর্তা বিশেষ অভিযান চালিয়ে তার নিজ কালোয় গ্রামের বিলাস বহুল বাড়ি
থেকে ছেলে হরিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল
হাসান রাজিবসহ ১০ জনকে আটক করে। রাজধানীর তেজগাঁও ও হরিরামপুর থানা
সহ পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় বেশ কয়েক মাস জেল হাজতে
থাকার পর জামিনে বেরিয়ে এসে আবার রাজনীতিতে পদার্পণ করে তার গোছালো
মাঠকে পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। হরিরামপুরের আরেক আওয়ামী লীগ
নেতা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. বিল্লাল হোসেনেরও দোয়া চেয়ে নির্বাচনী
শুভেচ্ছা পোস্টার দেখা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। তিনিও
হয়তো দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকে আরও একজন
নতুন প্রার্থীর দোয়া চেয়ে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীর পোস্টার দেখা যায়। তিনি
হলেন বাল্লা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, হরিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের
সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম হাজারী শামীম। তবে যে কয়েক
প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে শুধুমাত্র পরিষদের মসনদে বসার সুযোগ
হয়েছে একজনের। সাধারণ মানুষের কাছে যিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান
করছেন, তিনি হলেন দেওয়ান সাইদুর রহমান। হরিরামপুরের সাধারণ মানুষের কাছে
যিনি আস্থার পরিচয় দিয়েছেন। জয় করেছে হরিরামপুরের সাধারণ মানুষের মন। তার
রয়েছে বিপুল পরিমাণ ভোট ব্যাংক। যার সাথে রয়েছে হরিরামপুরের সাধারণ
মানুষের অতপ্রোত নিবিড় সম্পর্ক। যিনি স্বপ্ন দেখেন এই হরিরামপুর
উপজেলাকে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত করে দেশের একটি মডেল উপজেলা
বির্নিমাণের।

দেওয়ান সাইদুরের রহমান সম্পর্কে তথ্য নিয়ে যায়, ১৯৬৮ সালের ৩০ জানুয়ারি
হরিরামপুর উপজেলার রামক্ধৃসঢ়;ষ্ণপুর ইউনিয়নের ভাওয়ারডাঙ্গী গ্রামের এক সমভ্রান্ত
মুসলিম দেওয়ান পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। ষাটের দশকে রামকৃষ্ণপুরের ইউনিয়নের
ভাওয়ারডাঙ্গী গ্রামের বাড়িটি পদ্মায় ভেঙে গেলে বাড়ি করেন হরিরামপুরের প্রাণ
কেন্দ্র বয়রা ইউনিয়নের দাশকান্দি বয়রা। বাবা নূর মোহাম্মদ দেওয়ান। মাতা ছাহেরা
বেগম। আট ভাইবোনের মধ্যে তিনি ষষ্ঠ। ১৯৮৪ সালে পাটগ্রাম অনাথ বন্ধু উচ্চ
বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে কৌড়ি এম এ রউফ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে
এইচ.এস.সি ভর্তি হন। ১৯৮৬ সালে ওই কলেজ থেকেই এইচ.এস.সি এবং ১৯৮৮
সালে ডিগ্রী পাশ করেন। তার বড় ভাই দেওয়ান রওশন হরিরামপুরের অন্যতম মুক্তিযোদ্ধা
ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন।। বাল্যকাল হতেই দেওয়ান সাইদুর ছিলেন
অত্যন্ত সাহসী, নির্ভিক এবং পরোপকারী। যার ফলে হরিরামপুরের মানুষের মাঝে
ব্যাপক পরিচিত লাভ করেন। স্কুল জীবন থেকেই নানা প্রকার অনিয়ম ও অন্যায়ের
বিরূদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে সাহসী ভূমিকা রাখেন তিনি। ওই
সময়ের কিছু নির্যাতনকারী সমাজপতি, ফতোয়াবাজ, সুদখোর নীপিড়কদের
অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তিনি হরিরামপুরের নির্যাতিত ও নিপিড়ীত
অসহায় মানুষের নায়ক বনে যান। অর্জন করেন সাধারণ মানুষের আস্থা। তিনি
অত্যান্ত পরোপকারী ও গরীব হিতৈষী। গরীবের ব্যাথা তিনি বুঝতে পারেন। কথিত
আছে স্কুল ছাত্রাবস্থায় নিজের বাড়ী থেকে চাল, আটা তেল গোপনে অনাহারী
মানুষের বাড়ী বাড়ী পৌছে দিতেন। স্কুল জীবন থেকেই তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ
বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে মনে লালন করেন।
১৯৮৪ সালে স্বৈরাচারী এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে নিজেকে সরাসরি মেলে ধরেন।
ওই বছরের শেষের দিকে হরিরামপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত
হন। মুলত ৭৫ পরবর্তী সময়ে তার সাহসিকতায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হরিরামপুরে
প্রকাশ্যে রাজপথে নেমে আসে।
১৯৮৬ সালে কৌড়ি কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগ অংশ নেয়। নির্বাচনে
এরশাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্রসমাজের সন্ত্রাস ও ভোট ডাকাতি প্রতিরোধ গড়তে
গেলে আর্মি পুলিশ ও গুন্ডাদের হাতে মারাত্বক আহত হন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে
সমগ্র হরিরামপুর উত্তাল বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। দেওয়ান সাইদুর রহমানের উদ্যোগেই
হরিরামপুরে বিচারপতি নুরুল ইসলাম কলেজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। ৯০’র
স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী গনআন্দোলনেও তাঁর অনন্য ভূমিকা ছিল। ১৯৯১ সালে
জীবন ও জীবিকার তাগিদে তিনি কানাডায় পাড়ি জমান। দীর্ঘ দিন পরে তিনি
দেশে ফিরে আসেন। অংশ নেন ২০০৯ সালে হরিরামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে। ওই
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে হেভিওয়েট প্রার্থী
তালিব হোসেন মাস্টারকে পরাজিত করে উপজেলার পরিষদের মসনদে বসেন দেওয়ান

সাইদুর রহমান। নির্বাচিত হওয়ার পর প্রতিদিন গড়ে ১৮ ঘন্টা জনগণের সাথে
জনকল্যাণে ব্যয় করতেন। হরিরামপুরের দুর্গম চরাঞ্চলে ডাকাত প্রবনতা বৃদিধ
পাওয়ায় চরাঞ্চলের সাথে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপনের জন্য নিজ উদ্যোগে
স্পীডবোট কিনে চরাঞ্চলের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন। এবং দুঃস্থ মানুষের
সেবায় তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেন। ফলে সাধারণ ও অসহায় দুঃস্থ মানুষের
একান্ত বন্ধু হিসেবে আতœপ্রকাশ পান।
এভাবেই হরিরামপুরের সাধারণ মানুষের মাঝে প্রিয় নেতা হিসেবে জনপ্রিয়তা
অর্জন করেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে দলীয় ক্রোন্দলের কারণে নাটকীয়ভাবে তিনি
পরাজয় বরণ করে আবার তিনি পাড়ি জমান সুদূর কানাডায়। দুই বছর অতিবাহিত
হলে ২০১৬ সালের ১১ নভেম্বর সাধারণ মানুষের ভালোবাসার টানে তিনি আবার ফিরে
আসেন হরিরামপুরে। ওই সময় এক অভুতপুর্ব ঘটনা প্রত্যক্ষ করলো হরিরামপুরবাসী।
প্রায় দুই কি.মি. জুড়ে পাঁচ শতাধিকেরও অধিক মোটরসাইকেল ও শতাধিক
প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের সমন্বয়ে তিনি ফিরে আসেন তার প্রাণ প্রিয়
মাটি হরিরামপুরের বুকে। রাস্তার দু’পাশ দিয়ে সেদিন উপচে পড়েছিল জনতার।
হাজার হাজার মানুষ তাকে একনজর দেখার জন্য সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার প্রহর
গুনছিল। আমার দেখা দৃষ্টিতে এই প্রথম একজন নেতার আগমন এতোটা উৎসব
মুখুর হতে পারে। বাংলাদেশের আর কোনো নেতার আগমনে এমনটা হয়েছে কিনা
আমার জানা নেই। তাই তো তিনি আজ সাধারণ মেহনতি মানুষের নেতা হয়ে
হরিরামপুরের জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছেন। সাধারণ মানুষের সাথে আলাপ
কালে তারা জানান, আমরা দল বল বুঝি না। এবার আমরা সাইদুর ভাইরেই ভোট দিমু।
সাইদুর ভাইরে আমরা যেভাবে কাছে পাই, অন্য কোনো নেতারা আমরা পাই না।
সাধারণ মানুষের এই আশা আকাঙ্খা কতটুকু পূরন হয়। তাদের প্রিয় নেতা
দেওয়ান সাইদুর রহমানকে উপজেলা পরিষদের মসনদে বসতে পারেন কিনা। দেওয়ান
সাইদুর রহমান বর্তমানে মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ
সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।