প্রচ্ছদ সারাদেশ মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ইউএনওর মানবিক সহয়তা পেলো বিধবা চপলা রাণী দাশ

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ইউএনওর মানবিক সহয়তা পেলো বিধবা চপলা রাণী দাশ

সায়েম খান, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

“মানুষ বাঁচে তার কর্মে, বয়সে নয়”। একজন মানুষ মহৎ হয়ে ওঠেন তার কর্মগুণে। পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা তাদের কর্ম, ধ্যান-জ্ঞান, অর্জন সবকিছু উৎসর্গ করেন দেশের স্বার্থে, মানুষের কল্যাণে।

অসহায় মানুষের সেবা করাই যার লক্ষ্য তিনি হলেন, মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম। গত ২৩শে আগস্ট কয়েকটি গনমাধ্যমে প্রকাশিত হয় পঞ্চাশোর্ধ বয়স্ক চপলা রাণী দাসের ১৮ বছর খেয়া ঘাটে মানুষ পাড়াপারের সংবাদ তিনি উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের গোপীনাথপুর উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত সুবাস চন্দ্র দাসের স্ত্রী। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে সংসার জীবনে এ দম্পতি ছিলেন চার সন্তানের জনক জননী। বড় মেয়ে স্বরস্বতী রাণী দাস বিয়ে হয়েছে অনেক আগেই। বড় ছেলে সঞ্জীব চন্দ্র দাস।

সে পেশায় কাঠমিস্ত্রিরির সহকারী হিসেবে কাজ করে। সে টাঙ্গাইলে বিয়ে করে ওখানেই কাঠমিস্ত্রীরির কাজ করে। ছোট মেয়ে তুলশী রাণী দাস ও ছোট ছেলে আকাশ চন্দ্র দাস এই দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে স্বামীর রেখে যাওয়া চার শতাংশ জায়গার ওপর প্রায় পনের বছর আগে কারিতাসের দেয়া একটি ঘরে বসবাস করেন চপলা রাণী দাস। ঘরটিও টাকার অভাবে মেরামত করতে না পারায় জরাজীর্ণ অবস্থায় বাস করছেন। ১৬ বছর আগে ব্রেণ স্ট্রোকে মারা যান সুবাস চন্দ্র দাস।

তখন থেকেই শিশু সন্তানদের নিয়ে স্বামীর রেখে যাওয়া খেয়া নৌকা চালিয়ে সংসারের হাল ধরেন চপলা রাণী দাস। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম এঁর দৃষ্টিগোচর হলে চপলা রাণী দাসকে এক বান জিআর ডেউটিন ও নগদ ৩ হাজার টাকা দেয়ার বিষয়টি গতকালই নিশ্চিত করেন।

আজ মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টায় উপজেলা ভবনের সামনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম একবান জিআর ঢেউটিন ও নগদ ৩ হাজার টাকা চপলা রানী দাসের হাতে তুলে দেন। এছাড়াও তিনি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ আরও ৫ হাজার টাকা প্রদান করেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো.মানিকুজ্জামান, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মালা বড়াল প্রমুখ। সরকারি সহায়তা পেয়ে চপলা রাণী দাস উপজেলা প্রশাসনের প্রতি চির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, গতকাল গণমাধ্যমে চপলা রাণীর এমন জীবনযুদ্ধের সংবাদ প্রকাশে বিষয়টি আমি জানতে পারি। সাথে সাথে আমি গতকালই জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানাই এবং প্রাথমিকভাবে একবান জিআর ঢেউটিন ও ৩ হাজার টাকা এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও ৫ হাজার টাকাসহ মোট ৮ হাজার টাকা নগদ প্রদান করি।

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য উপজেলা প্রশাসন সবসময়ই পাশে আছে এবং থাকবে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা তুলে ধরে এমন সংবাদ পরিবেশনের জন্য উপজেলার সাংবাদিকের তিনি ধন্যবাদ জানান।