দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেছে রমজানের প্রায় অর্ধেকটা। শুরুর দিকের দিনগুলোতে এনার্জি ভরপুর থাকলেও সময় যাবার সাথে সাথে ক্লান্তি যেন চেপে ধরে। ইফতারের পর খারাপ তো লাগেই, বেশীরভাগ ক্ষেত্রে সেহেরির আগে বা পরেও অসুস্থতা বোধ হয়। সেহেরির সময় ঘুম থেকে উঠতে সমস্যা হওয়া, সেহেরির পর অস্বস্তি বোধ করা বা ঘুম না আসা, ঘুমের মাঝে দুঃস্বপ্ন দেখা, ঘুম হলেও সারাদিন ক্লান্তি বোধ করা, প্রচণ্ড পিপাসা পাওয়া ইত্যাদি সমস্যা কমবেশি সকলেরই হয়ে থাকে।
রমজানের অবশিষ্ট দিনগুলোতে একটু স্বস্তি চাই? তাহলে আজকের ফিচার আপনারই জন্য। সেহেরিতে এই পরিবর্তনগুলো আপনার রমজানের দিনগুলোকে করবে স্বস্তিদায়ক।
সেহেরি হোক পরিমিত
সারাদিন না খেয়ে থাকতে হবে ভেবে একসাথে অনেক কিছু সেহেরিতে খেয়ে ফেলবেন না। রমজানের শুরুর দিকে আয়োজন করে আহামরি সেহেরির আয়োজন হলেও সময়ের সাথে সাথে কমিয়ে ফেলুন। তেল-মশলা যুক্ত খাবার বাদ দিন একদম, এসিডিটি হতে পারে এমন যে কোন কিছু পরিহার করুন। বেছে নিন হালকা ও সহজপাচ্য খাবার। এই একটি কাজেই দেখবেন অর্ধেক অস্বস্তি দূর হয়ে গেছে, ঘুমার মাঝে দুঃস্বপ্নও দেখবেন না। সারাদিন অনেক ফুরফুরে বোধ হবে, ক্ষুধার অনুভুতিও কম হবে।
রাত না জেগে বরং শুয়ে পড়ুন
অনেকেই সাড়া রাত জেগে থাকেন, সেহেরির পর একবারে ঘুমাবেন মনে করে। এতে শরীর পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায় না, দিনের বেলা অধিক ঘুমিয়ে নেয়ার পরেও ক্লান্তি চেপে ধরে থাকে। ইফতারের পর হালকা রাতের খাবার সেরে আগেই ঘুমিয়ে পড়ুন। এতে সেহেরিতে উঠতে সুবিধা হবে। সেহেরির পর ঘুম না এলেও কোন সমস্যা হবে না। বরং নামাজের পর খুব ভোরে দিন শুরু করতে পারলে আপনি নিজেই সারাদিন অনেক বেশি প্রাণবন্ত বোধ করবেন।
সেহেরিতে অধিক পানি নয়
সারাদিন রোজা থাকবেন মানে এই নয় যে সেহেরিতে একবারে ৫/৭ গ্লাস পানি পান করে নিতে হবে। শরীরে পর্যাপ্ত পানির যোগান রাখা জরুরী আর সেটা করতে হবে ইফতারের পর থেকেই। অল্প অল্প করে প্রতি ঘণ্টায় পানি পান করুন। সেহেরিতে একবারে অনেক পানি পান করলেই সারাদিন আর পিপাসা পাবেন না, এটি একদম ভুল ধারণা। বরং ইফতারের পর থেকে সেহেরি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি পানের মাধ্যমে দেহকে হাইড্রেটেড রাখলে তবেই রোজা অবস্থায় পিপাসা কম পাবে। মনে রাখবেন, পাকস্থলী অতিরিক্ত ভরা থাকলে অস্বস্তিকর অনুভূতি ও ঘুমের সমস্যা হতে বাধ্য।
খাওয়ার সাথে সাথেই ঘুম নয়
কেবল সেহেরি কেন, কখনোই কিছু খাবার পর সাথে সাথে ঘুমাতে চলে যাওয়া ঠিক নয়। এতে হজম ক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়, গ্যাস ও এসিডিটি হবার সমস্যা বাড়ে। শেষ মুহূর্তে সেহেরি খাবার জন্য বসে থাকবেন না। একটু তাড়াতাড়ি সেহেরির পর্ব সেরে নিন, সেহেরির অন্তত ঘণ্টাখানেক পর ঘুমাতে যান।
চা- কফি ও সিগারেট বাদ দিন
সেহেরির পর ক্যাফেইন জাতীয় যে কোন কিছু পান করা আপনার শরীরে পানিশুন্যতা সৃষ্টি করবে। একই ব্যাপার সিগারেটের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। দিনব্যাপি ক্লান্তি তো হবেই, ঘুমেও সমস্যা হবে।
দুটি খেজুর
সেহেরিতে দুই/তিনটি খেজুর রাখুন। এরে বাকি দিন প্রানশক্তিতে ভরপুর থাকবেন আপনি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, সেহেরিতে অধিক খেয়ে ফেললে সারাদিনে ক্ষুধার অনুভূতি বেশি হয়। রমজান সংযমের মাস। সেই সংযম ফুটে উঠুক সকল আচরণে।