প্রচ্ছদ প্রচ্ছদ

মানিকগঞ্জে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন পাইলট আসিম জাওয়াদ

নিজস্ব সংবাদদাতা, মানিকগঞ্জ :

চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীতে বিধ্বস্ত বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট আসিম জাওয়াদ রিফাতের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার (১০ মে) দুপুর মানিকগঞ্জ শহরের সেওতা কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।

এদিকে নিহত পাইলট আসিম জাওয়াদ রিফাতের তৃতীয় জানাযায় মানিকগঞ্জ শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে হাজারো মানুষ সমবেত হয়। শুক্রবার দুপুর দুইটায় শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে এ নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে তাকে বহনকারী বিমানবাহিনীর-২১৯ হেলিকপ্টারটি মানিকগঞ্জের শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে অবতরণ করে।

বৈমানিক অসিম জাওয়াদ রিফাতের লাশের সঙ্গে তার বাবা ডা. আমানউল্লা, স্ত্রী অন্তরা আক্তার ও দুই সন্তান হেলিকপ্টারে আসেন। নিহত ছেলের বহনকারী হেলিকপ্টার দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মা নিলুফা খানমসহ স্বজনরা।

জানা গেছে, সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক শিক্ষক নিলুফা আক্তার খানম ও চিকিৎসক আমানুল্লাহর একমাত্র সন্তান ছিলেন আসিম জাওয়াদ রিফাত। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে কান্না করতে করতে মূর্ছা যাচ্ছেন মা নিলুফা।

নিহত পাইলটের মামা সুরুয খান জানান, অসিম জাওয়াদ খুবই মেধাবী ছাত্র ছিল। তিনি পরিবারের একমাত্র সন্তান । তার মৃত্যুর খবরে আমার বোন নিলুফা পাগলপ্রায়। তার মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

জাওয়াদের খালাতো ভাই মশিউর রহমান শিমুল জানান, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ এয়ারফোর্স একাডেমিতে (বাফা) যোগদান করে ২০১১ সালে অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন জাওয়াদ। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে আসিম চট্টগ্রাম বিমানবাহিনীর ঘাঁটি জহরুল হকের অফিসার্স আবাসিক এলাকার নীলিমাতে বসবাস করতেন।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর মোহনায় বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান ইয়াক-১৩০ বিধ্বস্ত হয়। বেলা পৌনে ১১টার দিকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পতেঙ্গার বানৌজা ঈসা খাঁ হাসপাতালে (নেভি হাসপাতাল) পাইলট জাওয়াদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

সিরাজদিখান উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেন মিলনের গণসংযোগ

সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি: আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সিরাজদিখান উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শেখ মনির হোসেন মিলন বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা ও মতবিনিময় করেছেন। বৃহস্পতিবার (৯ মে) দিনব্যাপী বালুচর, রাজনগর, কালিনগর, কৃঞ্চনগর ও ভাসানচর এলাকায় কুশলবিনিময়ের মাধ্যমে গণসংযোগ করেন।

গনসংযোগ কালে তিনি বলেন, আমি যদি ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হতে পারি তাহলে সুখে দুঃখে সকলের পাশে থাকাসহ বিশেষ করে তরুণ ও যুব সমাজের কর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। যাতে করে এলাকার তরুণ ও যুব সমাজ বেকারত্ব ও মাদকের অভিশাপ থেকে মুক্তি পায়।

মানিকগঞ্জের দুই উপজেলায় নির্বাচিত হলেন যারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, মানিকগঞ্জ :

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো (মোটরসাইকেল) প্রতীকে দেওয়ান সাইদুর রহমান এবং সিংগাইর উপজেলায় কাপ-পিরিচ প্রতীকে প্রথমবারের মতো মো.সায়েদুল ইসলাম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

বুধবার রাতে হরিরামপুর ও সিংগাইর উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা অফিস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক এবং সিংগাইর উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান সায়েদুল ইসলাম সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক।

এছাড়া সিংগাইর উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে (পুরুষ) তালা প্রতীকে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো.রমিজ উদ্দিন এবং মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে হাঁস প্রতীকে জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারা খাতুন বেসসরকারিভাবে নির্বাচতি হয়েছেন।

অপরদিকে হরিরামপুর উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে বই প্রতীকে উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো.বিল্লাল হোসেন এবং মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ফুটবল প্রতীকে উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা আক্তার চায়না বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

জেলা নির্বাচন অফিসার মো.আমিনুর রহমান মিঞা জানান, কোন প্রকার অপ্রিতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে ১ম ধাপের মানিকগঞ্জের দুটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।সিংগাইর উপজেলায় মোট ভোটের ৩০.২৯শতাংশ এবং হরিরামপুর উপজেলায় ৪৪.৪৫শতাংশ ভোট পড়েছে।

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে আইওএম’কে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম :

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে আন্তর্জাতিক অভিভাসন সংস্থাকে (আইওএম) উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (৭ মে) সকালে প্রধানমন্ত্রী তার বাসভবন গণভবনে আইওএম’র মহাপরিচালক অ্যামি পোপের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আহ্বান জানান। সাক্ষাৎ শেষে এ বিষয়ে পরে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

আন্তর্জাতিক যেসব অংশীদার রোহিঙ্গাদের সহায়তা দিচ্ছিল তার পরিমাণ অনেকটা কমে গেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় নতুন অংশীজন খোঁজার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জন্য আরও তহবিল সংগ্রহেরও আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় আইওএম’র মহাপরিচালক অ্যামি পোপ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের কথা উল্লেখ করে ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে ক্যাম্পগুলো অত্যধিক ঘনবসতিপূর্ণ। মিয়ানমারে সংঘাত চলছে, ক্যাম্পগুলোর ভেতরে নানান দল-উপদল আছে, গ্রুপিং আছে, তাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্ধ-সংঘাত আছে। সেগুলোর কারণে তাদের মধ্যে অনেক সংর্ঘষ হয়।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সেখানে পর্যাথপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

কক্সবাজারের পরিবেশের কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, কক্সবাজারে এখন স্থানীয় জনগণই সংখ্যালঘু হয়ে গেছে। রোহিঙ্গারাই সংখ্যায় বেশি। সেখানে যে সীমিত সম্পদ আছে তা নিয়ে অনেক সময় দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হচ্ছে।

ভাষাণচরে অধিকতর ভালো আবাসন ব্যবস্থা করার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ভাসানচরে সব ধরনের সুবিধা সম্বলিত অবকাঠামো তৈরি করেছি। সেখানে রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা, বাচ্চাদের শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওখানে আরও মানুষের আবাসনের সুযোগ আছে। সেখানে এক লাখ মানুষের আবাসনের ব্যবস্থা আছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০-৩৫ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাষাণচরে স্থানান্তর করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।

ভাষানচরে আরও রোহিঙ্গা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অভিভাসন সংস্থার সহযোগিতা চান প্রধানমন্ত্রী।

সাক্ষাৎকালে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রুহুল আমিন উপস্থিত ছিলেন।

হজ ভিসায় ৩ শহরের বাইরে যেতে মানা

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম :

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে হজ ভিসা নিয়ে নতুন বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছে সৌদি সরকার।

দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় বলেছে, হজ ভিসায় শুধু জেদ্দা, মদিনা ও মক্কা শহরে চলাচল করা যাবে। নির্ধারিত শহরের বাইরে ভ্রমণের জন্য এই ভিসা বৈধ হবে না।

এ ছাড়া এই ভিসা সৌদিতে কাজ করা বা বসবাসের জন্যও বৈধ হবে না।

দুবাইভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ জানায়, এই বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর পাশাপাশি ভবিষ্যতে আর হজে আসা নিষিদ্ধ করা হতে পারে।

এদিকে, বাংলাদেশের হজ যাত্রীদের আগামী ৯ মে প্রথম ফ্লাইট শুরু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার (৮ মে) হজ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।

উল্লেখ্য, এ বছর বাংলাদেশ থেকে ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ পালন করবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র ৩৫ হাজারের মতো হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়েছে।

নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীরা প্রভাব বিস্তার করলে ব্যবস্থা : সিইসি

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম :

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন না। তবু কোনো মন্ত্রী ও এমপি (সংসদ সদস্য) ভোটে প্রভাব বিস্তার করেন কি না, তা কেন্দ্রীয়ভাবে নজরদারি করা হবে। নির্বাচন প্রভাবিত করতে চাইলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

সিইসি বলেন, মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের অংশগ্রহণের কারণে কমিশন বেকায়দায় নেই। প্রথম দফায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। কেউ প্রভাবিত করার চেষ্টা করলে, মেনে নেয়া হবে না। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে, প্রভাব বিস্তার রোধে কাজ করছে কমিশন। কেন্দ্রীয়ভাবে উপজেলা নির্বাচন মনিটর করা হবে। প্রভাব বিস্তারের সমস্যাটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়াবে না।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের দলীয় সিদ্ধান্ত না মানার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কোনো দায় নেই। পুরোটাই রাজনৈতিক নৈতিকতার বিষয়।

সিইসি আরো বলেন, প্রার্থী-সমথর্ক সবাই ভোটের দিন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করবেন সেটাই প্রত্যাশা, পাশাপাশি নজরদারি করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যম। সবার সহযোগিতায় সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেটাই চায় কমিশন।

তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচন মোটেই নিয়ম রক্ষার ভোট না। নির্বাচন অনিবার্যভাবে প্রয়োজন। কোনো একটা দেশের শাসনব্যবস্থাকে চালু রাখতে হলে নির্বাচন প্রয়োজন।

উপজেলা নির্বাচনে অনেক রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাবিবুল আউয়াল বলেন, এবারের নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হচ্ছে না। কে কোন দল করেন, কে কোন দলের প্রার্থী, নির্বাচন কমিশন তা দেখে না। নির্বাচন কমিশন দেখে প্রার্থী। কে নির্বাচনে এলো, কে এলো না, তা দেখা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নয়। এবারের নির্বাচনে প্রতিটি উপজেলায় গড়ে চারজন প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে, প্রার্থী আছেন কি না।

হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচনে কে এলো, কে এলো না এটা নির্বাচন কমিশনের দেখার বিষয় না। নির্বাচনের কমিশনের কাজ হলো নির্বাচন আয়োজন করা।

৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সাথে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের কেমন পার্থক্য দেখেন- এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, একটা জাতীয় সংসদ নির্বাচন, আরেকটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এটাই পার্থক্য। তবে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে প্রতিযোগিতা বেশি। উৎসাহ, উদ্দীপনা ও উত্তেজনা বেশি। সে উত্তেজনা যাতে সহিংসতায় রূপ না নেয়, নির্বাচন কমিশন সে বিষয়ে সতর্ক আছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১৭ জন সদস্য থাকবেন। স্পর্শকাতর কেন্দ্রে থাকবেন ১৯ জন। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে তিনি সবার সহযোগিতা চান।

তিনি বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব মো: জাহাংগীর আলম ও অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ উপস্থিত ছিলেন।

সিক্স-জি নিয়ে হাজির জাপান, গতি ফাইভ-জি’র চেয়ে ২০ গুণ

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম :
সময়টা এখন ফাইভজি’র হলেও বিশ্বের অনেক দেশই এখনও ফোরজি মোবাইল নেটওয়ার্কে আটকে আছে। ফাইভজি নেটওয়ার্কের কিছু ডিভাইস আমাদের দেশের বাজারে মিলছেও, তবে আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গতির মোবাইল নেটওয়ার্ক বলতে ফোরজিই। বাংলাদেশের মতো বিশ্বের অনেক দেশের বাসিন্দাদের কাছেই যেখানে ফাইভজি নেটওয়ার্কের অভিজ্ঞতা নেওয়া একটা স্বপ্ন, সেখানে সিক্সজি নিয়ে হাজির হয়ে গেলেন জাপানের প্রযুক্তিবিদরা।
তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদ মাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের প্রথম সিক্স-জি ডিভাইস উদ্ভাবন করেছে জাপান। নতুন এ প্রটোটাইপ ডিভাইসটি তৈরি হয়েছে ডোকমো, এনটিটি করপোরেশন, এনইসি করপোরেশন এবং ফুজিটসুসহ দেশটির টেলিকম কোম্পানির যৌথ প্রচেষ্টায়।
গত মাসে নতুন ডিভাইসটির ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে দাবি করা হয়, তাদের সিক্স-জি প্রোটোটাইপটি ফাইভ জির চেয়েও ২০ গুণ বেশি দ্রুত গতিসম্পন্ন। প্রোটোটাইপটি ১০০ হার্জ ব্যান্ড ব্যবহার করে ১০০ জিবিপিএস গতি অর্জন করতে পারে। আর বাইরে একই গতি অর্জন করতে এটি ব্যবহার করে ৩০০ হার্জ ব্যান্ড।
বর্তমান বিশ্বে মোবাইল নেটওয়ার্কিংয়ে সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি বলে বিবেচিত ৫জি। এর তাত্ত্বিক গতি সর্বোচ্চ ১০ জিবিপিএস। তবে দেশভেদে ৫জি নেটওয়ার্কের গতি ভিন্ন ভিন্ন।
জাপান ছাড়াও সিক্স-জি নিয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন, সিক্স-জি’র আগমনের সঙ্গে মানুষ রিয়েল-টাইম হলোগ্রাফিক যোগাযোগ করতে সক্ষম হবে। ভার্চুয়াল এবং মিশ্র বাস্তবতার জগতেও মানুষ নতুন অভিজ্ঞতা লাভ করতে সক্ষম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাপানের নতুন প্রোটোটাইপটি ৩২৮ ফুট এলাকায় পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষায় যে ফল এসেছে, তা অবশ্যই প্রেরণাদায়ক। তবে, একে এখনই চূড়ান্ত সাফল্যের মাপকাঠিতে বিচার করা যায় না বলে মত প্রযুক্তিবিদদের।
তাদের মতে, নতুন সিক্স-জি শুধুমাত্র একটি ডিভাইসে পরীক্ষা করা হয়েছে। এ নিয়ে বিস্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যাপার রয়ে গেছে এখনও। তাছাড়া নতুন এ প্রযুক্তি কার্যকর করতে মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ারগুলোকে সম্পূর্ণভাবে প্রতিস্থাপন করতে হবে এবং সিক্স-জি ইনবিল্ট অ্যান্টেনাসহ নতুন স্মার্টফোন বাজারে আনতে হবে।

এসএসসির ফল প্রকাশের তারিখ ঘোষণা

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম :
আগামী ১২ মে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হবে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শিক্ষা সচিব বরাবর পাঠানো এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২ মে ফলাফল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সম্মতি দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-১ ইসমাত মাহমুদা চিঠিতে সই করেছেন।
আগামী ১২ মে সকাল ১০টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলাফলের সারসংক্ষেপ ও পরিসংখ্যান তুলে দেবেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এ সময় তার সঙ্গে থাকবেন ৯টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে একযোগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় গত ১২ মার্চ। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩ মার্চ থেকে ২০ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়।
এবার সারা দেশের ১১টি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে মোট ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল। তাদের মধ্যে ছাত্র ৯ লাখ ৯২ হাজার ৮৭৮জন এবং ছাত্রী ১০ লাখ ৩১ হাজার ৩১৪ জন। দেশের ২৯ হাজার ৭৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ৩ হাজার ৭০০ কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়।
বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় এ বছর মোট ২ লাখ ৪২ হাজার ৩১৪ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে। ছাত্র ১ লাখ ৪২ হাজার ৩১৪জন এবং ছাত্রী ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫২৬ জন। সারাদেশের ৯ হাজার ৬৭৯টি মাদ্রাসার পরীক্ষার্থীরা ৭১৮টি কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষা দেয়।
এছাড়া বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় ২০২৪ সালে মোট পরীক্ষা দিয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭৩ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৯৪ হাজার ৮৩১ জন, ছাত্রী ৩১ হাজার ৫৩২ জন। সারা দেশের ২ হাজার ৮৭৭টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ৭০৯টি কেন্দ্রে ভোকেশনাল পরীক্ষা দিয়েছে।

কারামুক্ত মামুনুল হক

নিউজ ডেক্স : হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক কারামুক্ত হয়েছেন।
শুক্রবার (৩ মে) সকাল ১০টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পেয়েছেন।
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা এ তথ্য জানিয়েছেন।
মামুনুল হকের জামিনে মুক্তি পাওয়ার খবরে কারা ফটকে ভিড় করেন তার সমর্থক ও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (২ মে) রাতে তিনি কারাগার থেকে মুক্ত হবেন, এমন খবরে তারা কারা ফটকে ভিড় জমান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আইনি জটিলতায় বৃহস্পতিবার তিনি ছাড়া পাননি।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। খবর পেয়ে হেফাজতের স্থানীয় নেতাকর্মীরা রিসোর্টে গিয়ে ভাঙচুর চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। ঘটনার পর থেকে ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় অবস্থান করেন মামুনুল হক। ১৫ দিন পর ১৮ এপ্রিল ওই মাদ্রাসা থেকে মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় তার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের মামলা করেন তার সঙ্গে রিসোর্টে অবরুদ্ধ হওয়া নারী। যদিও ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক। এরপর ওই মাসেই দেশের বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহসহ অর্ধশতাধিক মামলা হয়। পরে সেসব মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।

কে এই মিল্টন সমাদ্দার

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম : 

দুস্থ, অসহায় ব্যক্তিদের আশ্রয় ও সাহায্যের মতো মানবিক কাজের কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচিত ও আলোচিত ব্যক্তি বাংলাদেশের মিল্টন সমাদ্দার।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে এসব কাজের আড়ালে তার নানা অন্যায়-অনিয়মের অভিযোগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এরপর বুধবার এই মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

তার বিরুদ্ধে ডেথ সার্টিফিকেট জালিয়াতি, মানবপাচার, আশ্রয় দেয়া অসহায়, দুস্থ ব্যক্তিদের মৃত্যুর পর তাদের কিডনি বিক্রি, জমি দখলসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।

কে এই মিল্টন সমাদ্দার
মিল্টন সমাদ্দারের বাড়ি বরিশালের উজিরপুরে।

২০০৯ সালে রাঙ্গামাটির চন্দ্রঘোনা খ্রিস্টান হাসপাতাল থেকে নার্সিংয়ে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের পরিচয়ে তুলে ধরেন তিনি।

ভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় মিল্টন সমাদ্দার নিজের পরিচয় সম্পর্কে তিনটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

এসব প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার, চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার ফাউন্ডেশন ও মিল্টন হোম কেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড।

এর মধ্যে প্রথম দুইটি প্রতিষ্ঠানকে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মিল্টন হোম কেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটি কোম্পানি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

ফেসবুকে দাবি করা হয়েছে, রাস্তায় পড়ে থাকা অসহায় ও আশ্রয়হীন বৃদ্ধ ও শিশুদের খুঁজে বেড়ানো তার নেশা ও পেশা হয়ে গেছে। মানুষের দান আর নিজের ব্যবসা থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে কুড়িয়ে পাওয়া বৃদ্ধ ও শিশুদের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করেন তিনি।

এতে আরো দাবি করা হয়েছে, বৃহৎ পরিসরে সেবা দিতে ২০১৪ সালে ঢাকার পাইকপাড়ায় ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।

সমাদ্দার নিজের পেইজে যেসব ভিডিও প্রকাশ করেছেন সেখানে বিভিন্ন সময়ে তিনি এই প্রতিষ্ঠানকে আশ্রম বলে তুলে ধরেছেন।

যেভাবে আলোচনায় মিল্টন
শুরু থেকেই মিল্টন সমাদ্দার নানা মানবিক কর্মকাণ্ডের ভিডিও করে নিজের ফেসবুক পেইজে শেয়ার করেন। তার পেইজগুলোতে সড়কে পড়ে থাকা অসহায় বৃদ্ধ, মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি, আশ্রয়কেন্দ্রের শিশুদের অনেক ছবি ও ভিডিও শেয়ার করা রয়েছে।

এসব ভিডিওতে এ ধরনের ব্যক্তিদের রাস্তাঘাট থেকে উদ্ধার করা, চিকিৎসা ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার পুরো প্রক্রিয়ার ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।

এমনকি যেসব ব্যক্তিদের পরিবার রয়েছে তাদের স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের নিয়ে যাওয়া বা মৃত ব্যক্তিদের লাশ নিতে অনুরোধ করার ভিডিও রয়েছে।

ফেসবুকে প্রকাশিত বিভিন্ন ভিডিওতে এসব অসহায় মানুষদের সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন সময়ে সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যও চেয়েছেন তিনি। তার আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের বাবা-মা ও শিশুদের সন্তান বলে সম্বোধন করেন মিল্টন।

এসব ভিডিওর পাশাপাশি তার ফেসবুক পেইজে ১০টির বেশি মোবাইল ব্যাংকিং নম্বর রয়েছে। যেগুলোর মাধ্যমে অনুদান সংগ্রহ করা হয়। মানুষের অনুদানেই এসব কেন্দ্র পরিচালনা করা হয় বলে নিজের পেইজে প্রকাশিত বিভিন্ন ভিডিওতে বলেছেন মিল্টন।

সামাজিক মাধ্যমে এসব ভিডিও প্রকাশের পর ব্যাপক প্রশংসিত হন সমাদ্দার। দুস্থদের স্থায়ী আবাসনের জন্য সাভারে ২৫ শতাংশ জমিতে ছয়তলা ভবন নির্মাণের কথাও ফেসবুকে বলা হয়েছে। ৪০০ থেকে ৫০০ ব্যক্তি এখানে স্থান পাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বছরের পহেলা মার্চ এটি উদ্বোধন করা হয়েছে।

ফেসবুকে এক কোটি ৬০ লাখ মানুষ তাকে অনুসরণ করে। বাংলাদেশে সামাজিক মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি অনুসারী যাদের, তাদের মধ্যে প্রথম সারিতেই অবস্থান এই মিল্টন সমাদ্দারের।

মানবিক কাজের জন্য তিনটি রাষ্ট্রীয় পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।

মিল্টনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ
সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে আছে মানবিক কাজের আড়ালে মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রির মতো গুরুতর অপরাধের অভিযোগও।

এছাড়া সাভারে জমি দখল, আর্থিক হিসাবে অস্বচ্ছতা, আশ্রিতদের হিসাবে গড়মিল, বরিশালে চার্চ দখলের চেষ্টা, বৃদ্ধদের চিকিৎসা না দেয়া, ডেথ সার্টিফিকেট জালিয়াতি, নিজের বাবা-মাকে মারধরের নানা অভিযোগ উঠে এসেছে এসব সংবাদে।

গত তিন দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। মিল্টন নিজেও এসব সংবাদ নিজের পেইজে শেয়ার করেছেন। অস্বীকার করেছেন অভিযোগ।

এসব অভিযোগের পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে মিল্টন সমাদ্দার লিখেছেন, ‘জীবনের বড় ভুল ছিল আরাম আয়েশের জীবনযাপন না করে অসহায় মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছিলাম। সেই ভুলের মাশুল হিসেবে আজকের সবচেয়ে বড় সহজ কাজ মনে হচ্ছে আত্মহত্যা করা। রাগ অভিমান, ধৈর্য আর নিজের মধ্যে বেঁধে রাখতে পারছি না।’

ফেসবুকে এসব অভিযোগ খণ্ডন করে বিভিন্ন ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে সমাদ্দারের পক্ষ থেকে।

মৃত ব্যক্তিদের কিডনি বিক্রির অভিযোগের বিষয় খণ্ডন করে যে মাওলানা মৃত ব্যক্তিদের জানাজা পড়াতেন ও গোসল করাতেন তার বক্তব্য সংবলিত ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।

মাওলানা ফয়সাল আহমেদ এই ভিডিওতে, মৃতদের শরীরে কোনো কাটাছেঁড়া না থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে এ অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।

এছাড়াও কিডনির অস্ত্রোপচারের বিষয়ে এস জেড এম হাসান নামে একজন চিকিৎসকের বক্তব্য ভিডিও করে প্রকাশ করা হয়েছে।

ওই ভিডিওতে চিকিৎসক বলেন, ‘কিডনির সার্জারি করতে যে ধরনের মেডিকেল যন্ত্রপাতি প্রয়োজন তা এই আশ্রয়কেন্দ্রে নেই। এমনকি যেসব ব্যক্তিদের কথা বলা হচ্ছে কিডনির অস্ত্রোপচারের মতো শারীরিক সক্ষমতাও তাদের নেই। এ ধরনের অপারেশন করতে প্রয়োজনীয় জনবলও তার নেই।’

তিনি বলেন, ‘অনেক সরকারি হাসপাতালেও এ ধরনের অপারেশনের সক্ষমতা নেই। মিল্টনের যে আশ্রম সেখানে এটা সম্ভব না। যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটা একেবারেই ভিত্তিহীন।’

এরই মধ্যে সমাদ্দারের সঙ্গে কাজ করা এবং নানাভাবে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তিও তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনেন।

নিজের বাবা-মাকে মারধরের অভিযোগও খণ্ডন করে ফেসবুকে ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। ওই ভিডিওতে মিল্টনের মা ছবি সমাদ্দার এ অভিযোগ নাকচ করে দেন।

সুষ্ঠু তদন্ত শেষে এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে দেশের আইন ও প্রশাসন যে শাস্তি দেবে তা মাথা পেতে নেয়ার কথা বলে গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মিল্টন সমাদ্দার।

গ্রেফতারের আগের দিন একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেয়া সাক্ষাৎকারে মিল্টন সমাদ্দার ডেথ সার্টিফিকেট জালিয়াতির কথা স্বীকার করেন। তবে আশ্রয়কেন্দ্রের আগের কর্মচারীরা চিকিৎসক ওস তার অজ্ঞাতসারে স্বাক্ষর জাল করেছেন বলে দাবি সমাদ্দারের।

ডেথ সার্টিফিকেট জাল করা অন্যায় হয়েছে স্বীকার করে এর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন মিল্টন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা চাইল্ড এন্ড ওল্ড এজ কেয়ারে আমরা মৃত ব্যক্তিকে দাফন কাফন করতে পারি না। না পারার বড় কারণ হলো তাদের জন্ম নিবন্ধন নাই, পরিচয়পত্র নাই, তাদের কাছে কোনো কাগজপত্র পাওয়া যায় না। শতকরা ৯৫ ভাগ বাবা-মাই তাদের পরিচয় দিতে পারে না। সেক্ষেত্রে তারা যখন মারা যায় তখন আমাদের দাফন কাফন করতে হেনস্থা হতে হয়। অনেক সময় হয়, একটু কাগজপত্র দিলে কথাবার্তা ছাড়াই মাটি দেয়া যায়। কবরস্থানে যেকোনো কাগজ চায়। একটা মেডিকেল সার্টিফিকেট হোক, সেটা জন্ম নিবন্ধন হোক, ভোটার আইডি হোক। অজ্ঞাত মানুষকে কবর দেয়ার সুবিধার্থে চিকিৎসকের সিল মেরে সই করে দেয়া হইছে। ঘটনাটা সত্যি।’

মিল্টনের আইনজীবী মো: ওহিদুজ্জামান বিপ্লব ফেসবুক ভিডিওতে দাবি করেছেন, ‘সাভারে আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য যে স্থায়ী ভবন বানানো হয়েছে, সেখানে জমি ও রাস্তা সংক্রান্ত জটিলতায় মিল্টনের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তোলা হয়েছে।’

সাভার থানায় এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে বলে ভিডিওতে বলেছেন ওই আইনজীবী।

অভিযোগ ওঠার পর গ্রেফতার মিল্টন
এরই মধ্যে বুধবার গ্রেফতার করা হয়েছে মিল্টন সমাদ্দারকে। গ্রেপ্তারের পর ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে সেগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হবে। প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না।’

মিল্টন সমাদ্দার লাশ দাফনের যে হিসাব দিয়েছেন, সেখানেও গড়মিল রয়েছে বলে গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে তিনি ৯০০ লাশ দাফন করেছেন। কিন্তু ৮৩৫টি লাশের হিসাবে গরমিল পাওয়া যায়। এসব লাশ দাফনের কোনও ডকুমেন্ট তার কাছে নেই। তিনি গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেছেন, নিজেই মৃত্যু সনদ তৈরি করে চিকিৎসকের স্বাক্ষর ও সিল জাল করতেন। তার আশ্রমের পাশে একটা মসজিদ আছে, সেখান থেকেও প্রশ্ন উঠেছে, লাশের শরীরে কিডনির পাশে রক্তের দাগ রয়েছে। এসব বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের সংখ্যা নিয়েও গড়মিল রয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ।

মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় তিনটি মামলা করা হয়। এসব মামলায় ডেথ সার্টিফিকেট জালিয়াতি, মানবপাচার, হত্যার উদ্দেশ্যে মানুষকে নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ডেথ সার্টিফিকেট জালিয়াতির মামলায় মিল্টন সমাদ্দারকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়।

তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাত দিন রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তিন দিন মঞ্জুর করে।

তবে বিকেলে শুনানি শেষে মিল্টনের আইনজীবী আব্দুস সালাম শিকদার ডেথ সার্টিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগ অস্বীকার করেন। এই মামলার কোনো ভিত্তি নেই বলে দাবি তার। সূত্র : বিবিসি