প্রচ্ছদ আর্ন্তজাতিক সৌদি যুবরাজ শীঘ্রই সৌদিকে মধ্যপ্রাচ্যের সেরা বিনোদন কেন্দ্র বানাতে চান

সৌদি যুবরাজ শীঘ্রই সৌদিকে মধ্যপ্রাচ্যের সেরা বিনোদন কেন্দ্র বানাতে চান

সৌদিকে মধ্যপ্রাচ্যের সেরা বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। ইসলামী রক্ষণশীলতা থেকে শীথিলতার দিকে অগ্রসর হয়ে নতুন নতুন বিনোদনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিশাল পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দেশটি। এতদিন সেখানে যা কল্পনাও করা যেত না তা এখন বাস্তব হতে শুরু করেছে।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংস্কারের অংশ হিসেবে এসব বাস্তবায়িত হবে। এসব বিনোদন ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে, ষাঁড়ের দৌড়, যাদু প্রদর্শন, মোমের মূর্তির যাদুঘর স্থাপনসহ বিভিন্ন প্রকল্প।

সৌদি আরব রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগে দেশের বিনোদন খাত উন্নয়নের যে উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা ব্যক্ত করেছে, সেই পরিকল্পনার মধ্যে স্পেনের প্যাম্পলোনার ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের দৌড় আয়োজনও রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের রক্ষণশীল রাজ্যটি মোমের মূর্তির একটি জাদুঘর তৈরির করবে। যার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালন করবেন জনপ্রিয় র‍্যাপার জে যি যেটি।

সৌদি আরবের নাগরিক বিনোদন কর্তৃপক্ষের প্রধান তুর্কি-আল-শেখ ধারণা করছেন এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিলিয়ন ডলার আয় করার সম্ভাবনা রয়েছে। সৌদি আরবকে ওই অঞ্চলের প্রধান বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত করার এই পরিকল্পনার মূল মদদদাতা যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।

মঙ্গলবার রিয়াদে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সৌদি বিনোদন কর্তৃপক্ষের ভবিষ্যৎ কৌশল তুলে ধরা হয়। যেখানে ২০১৯ সালে তাদের কী ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে তা তুলে ধরেন সংস্থার প্রধান তুর্কি-আল-শেখ।

প্যামপ্লোনার সান ফেরমিনের ষাঁড় দৌড়ের উৎসবের পাশাপাশি ই-গেমিং টুর্নামেন্টেরও আয়োজন করার বিষয়ে চিন্তা করছে তারা। এছাড়া অ্যানিমেশন ছবি আলাদিন এবং দ্য লায়ন কিং এর মত মিউজিক্যাল এবং এনবিএর (অ্যামেরিকার বাস্কেটবল লিগ) একটি ম্যাচও আয়োজন করার কথা ভাবছে তারা।

পরিকল্পনা রয়েছে কোরআন পাঠের একটি প্রতিযোগিতা আয়োজনের, যার প্রথম পুরস্কারের অঙ্কটা হবে প্রায় ১০ লাখ পাউন্ড। আরেকটি প্রতিযোগিতা হবে সবচেয়ে শ্রুতিমধুর আযানের।

জাদুবিদ্যার অনুশীলন সৌদি আরবে গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য হলেও বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জাদুকরদের নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজনের কথাও চিন্তা করছে কর্তৃপক্ষ। বিনোদন কর্তৃপক্ষের প্রধান তুর্কি-আল-শেখ বলেন, ‘এসব প্রকল্প লক্ষ লক্ষ না হলেও হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করবে। যেখান থেকে আয় হবে কোটি কোটি ডলার।’

তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে যুবরাজ মোহাম্মদ এবং সৌদি আরবের ভাবমূর্তি অনেকাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সৌদি সরকারের সমালোচক জামাল খাসোগিকে গত অক্টোবরে ইস্তান্বুলের সৌদি দূতাবাসে হত্যা করা হয়। সৌদি কৌসুলিরা বলেছেন, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের একটি দুরভিসন্ধিমূলক অভিযান চলাকালীন খাসোগিকে সৌদি আরবে ফিরে যেতে রাজী করানোর চেষ্টার সময় হত্যা করা হয়। এই ঘটনার জন্য এ মাসের শুরুতে ১১ জনকে বিচারের আওতায় এনেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।

তবে ওই অভিযান যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে বাস্তবায়ন করা হয়েছিল – পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এমন মত প্রত্যাখ্যান করেছেন অভিযুক্তরা।