প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ শেরে বাংলা ও বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ভোগের নয়, ছিল ত্যাগের

শেরে বাংলা ও বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ভোগের নয়, ছিল ত্যাগের

গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হককে অনুসরণ করতে হলে আত্মোৎসর্গের রাজনীতিতে ফিরে আসতে হবে। পচন ধরা অবক্ষয়ের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সৃজনশীল এবং গুণগতমানের রাজনীতি পুনরুদ্ধার করতে হবে।

তিনি বলেন, রাজনীতি হতে হবে কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষসহ সারাদেশের মানুষের কল্যাণের রাজনীতি। রাজনীতি এমন হবে না যে আমি নেতা, আমি জমিদার আর সব মানুষ প্রজা। সে রাজনীতির দিন শেষ হয়ে গেছে।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর শেরে বাংলার মাজার চত্বরে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ১৪৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শেরে বাংলা জাতীয় সংসদ ও বিশ্ব বাঙালি সম্মেলনের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ছিলেন বাঙালি জাতির ইতিহাসের অন্যতম মহানায়ক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা একদিনে আসেনি। দীর্ঘ ধারাবাহিক পথপরিক্রমায় আন্দোলন-সংগ্রাম আর ত্যাগ স্বীকার করে বাঙালি একটি স্থানে এসে পৌঁছায়। সে ধারাবাহিকতায় বাঙালির অধিকার আদায়ের জন্য শেরে বাংলা যে সময় ভূমিকা রেখেছিলেন, সে সময় কথা বলার দুঃসাহস অনেকেই রাখতেন না। তিনি কখনো রাজনৈতিকভাবে, কখনো প্রশাসক হিসেবে, কখনো সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে নানাভাবে বাঙালির অধিকারের জন্য কাজ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, শেরে বাংলার অনুসৃত নীতিকে ধারণ করে বাংলাদেশে অনেকেই রাজনীতি করেছেন। কিন্তু শেরে বাংলার নীতিকে প্রকৃতভাবে অনুসরণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন বাঙালি জাতির ইতিহাসের শ্রেষ্ঠসন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলার রাজনীতি ছিল মানুষের জন্য। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিও তাই ছিল। শেরে বাংলা ও বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ছিল ভোগের নয়, ত্যাগের।

মন্ত্রী বলেন, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের যে স্বপ্ন ছিল, সে স্বপ্নকে ধারণ এবং বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সে স্বপ্নকে পরিপূর্ণতা দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমাদের দায়িত্ব শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতিবিরোধী ও অনৈতিকতাবিরোধী অভিযানে, বাঙালি জাগরণের অভিযানে তাকে দল-মত নির্বিশেষে সকলে মিলে সহযোগিতা করতে হবে।

তিনি আরও যোগ করেন, শেরে বাংলার জন্মবার্ষিকীতে আমাদের শপথ নিতে হবে- যারা অন্যায়, অবিচার, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদক, ইভটিজিংয়ে জড়িত তাদের রাজনীতির মাঠ থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে।

দুর্নীতির দায়ে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ ও তাদের সহযোগীদের ষড়যন্ত্র এখনও চলছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আবার তারা সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের চিন্তা করছে। কিন্তু অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের যে সুন্দর, নির্মল চরিত্র এটাকে আমাদের ধারণ করতে হবে। আজকের দিনে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্নকে ধারণ করে আমাদের শপথ নিতে হবে।

শেরে বাংলা জাতীয় সংসদ ও বিশ্ব বাঙালি সম্মেলনের সভাপতি মুহম্মদ আবদুল খালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

অনুষ্ঠানে শেরে বাংলা জাতীয় সংসদ ও বিশ্ব বাঙালি সম্মেলনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা শেরে বাংলার মাজারে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।