প্রচ্ছদ খেলাধুলা রোনালদো জুভেন্টাসেও ইতিহাস গড়বেন

রোনালদো জুভেন্টাসেও ইতিহাস গড়বেন

রিয়াল মাদ্রিদ থেকে জুভেন্টাসে নাম লিখিয়ে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আলোড়ন তুলেছেন ইতালির ফুটবলে। সিরি ‘আ’তে অভিষেক হয়েছে গত সপ্তাহে, ঘরের মাঠে অভিষেক হবে আজ, লাৎসিওর বিপক্ষে। ডিএজেডএন টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বলেছেন, এখানেও ইতিহাস গড়বেন তিনি

প্রশ্ন: তুরিনে কেমন কাটছে?
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো: সত্যি খুব ভালো কাটছে। খুব আনন্দে আছি। আমাদের দলটিও খুব ভালো। আমি খুবই বিস্মিত। আমরা সবাই এখানে সব সময় কঠিন পরিশ্রম করি। সহজ দিন বলে এখানে কিছু নেই।
প্রশ্ন: ইতালিতে অনুশীলন সেশন নাকি খুব কঠিন?
রোনালদো: হ্যাঁ, ঠিক তাই। তবে এখানে তারা যেভাবে অনুশীলন করে সেটা আমার ভালো লাগে। এটা ভালো। এখানে সবাই খুব পেশাদার। আর এ কারণেই আমি সবকিছু উপভোগ করছি।
প্রশ্ন: জুভেন্টাসকে কেন বেছে নিলেন?
রোনালদো: জীবনে যেকোনো বিষয়ই কোনো না কোনো কারণে ঘটে। এটাও সে রকম একটা বিষয় ছিল। এই ক্লাবে খেলব বলে আশা করিনি। তবে বিষয়টা ঘটে গেছে। এটা সবারই জানা, জুভেন্টাস বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাব। তাই এখানে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা আমার জন্য খুব সহজ ছিল। এটা ঠিক যে রিয়াল মাদ্রিদে আমি যা করেছি, তা ছিল অবিশ্বাস্য। ক্লাবটিতে আমি সবকিছু জিতেছি। ওখানে আমার বন্ধু আর পরিবার আছে। এরপরও এই ক্লাবে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সহজ ছিল। তারা আমার জন্য সবকিছু করেছে এবং আমাকে একটি সুযোগ দিয়েছে। জুভেন্টাসেও আমি ইতিহাস গড়তে চাই।
প্রশ্ন: জুভেন্টাসের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে অন্যতম দর্শনীয় গোলটি করেছেন। জুভেন্টাসের সমর্থকেরাও উঠে দাঁড়িয়ে আপনাকে অভিবাদন জানিয়েছিল। তুরিনে আসার জন্য এটির কি কোনো ভূমিকা ছিল?
রোনালদো: কেউ কেউ এটাকেই আমার জুভেন্টাসে আসার কারণ বলে। কেউ হয়তো বলে এটাই কারণ নয়। আমি যেটা বলব তা হলো, শেষে এসে অনেক ক্ষুদ্র বিষয়ও সবচেয়ে বড় পার্থক্য গড়ে দেয়। সত্যি বলতে কী, এই মাঠে যেটা দেখেছিলাম তার ভূমিকা ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওই গোলটি আমি আমার এখনকার ক্লাবের বিপক্ষে করেছিলাম। তবে এটা এখন অতীত। আমার কাছে তো গোলটি আমার ক্যারিয়ার-সেরা। মাঠে সমর্থকেরা যখন হাততালি দিতে শুরু করেছিল, আমি অবাক হয়েছিলাম। এমনটা আমার জীবনে এর আগে কখনো ঘটেনি বলেই আমি এতটা বিস্মিত হয়েছিলাম। অবিশ্বাস্য এক মুহূর্ত ছিল সেটা।
প্রশ্ন: এই মৌসুমে নিশ্চয়ই চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে চান? 
রোনালদো: নিশ্চয়ই। জুভেন্টাসের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে চাই। আমি ও আমার সতীর্থরা এটির প্রতিই মনোযোগী থাকব। তবে এটি নিয়ে যে আমরা আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছি, তা নয়। আমরা ধাপে ধাপে এগোতে চাই। এরপর দেখব চ্যাম্পিয়নস লিগ আমরা এ বছর, পরের বছর, নাকি তিন বছর পর জিতি। জুভেন্টাসের লক্ষ্য সিরি ‘আ’ আর ইতালিয়ান কাপ জয়। আর চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে অবশ্যই আমরা নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টাই করব।
প্রশ্ন: আপনাকে ৭ নম্বর জার্সি দেওয়া হয়েছে…
রোনালদো: হ্যাঁ, এটা আমার পছন্দের নম্বর। আমি ক্লাব কর্তৃপক্ষ আর কুয়াদ্রাদোর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। সে আমাকে বলেছিল, ‘কোনো সমস্যা নেই। তুমি এই জার্সিটা পেলে আমি বরং খুশিই হব।’ সবকিছুই চমৎকারভাবে গেছে। জুভেন্টাস কর্তৃপক্ষ আর কুয়াদ্রাদো এত সহায়তাপ্রবণ দেখে আমি বিস্মিতই হয়েছি।
প্রশ্ন: একবার বলেছিলেন, স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন আপনার কাছে বাবার মতো। এখনো এটা মনে করেন?
রোনালদো: অবশ্যই, আমার ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। স্পোর্টিং থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নাম লেখানোর পরও আমার মধ্যে পর্তুগিজ মানসিকতা ছিল। বল ড্রিবলিং করতাম খুব বেশি। মাঠে মাঝেমধ্যে সঠিক সিদ্ধান্তই নিতে পারতাম না। তিনি আমাকে শিখিয়েছেন, একজন খেলোয়াড়কে কীভাবে উন্নতি করতে হয়। প্রিমিয়ার লিগের ডিফেন্ডাররা আর তিনিই আমাকে সব শিখিয়েছেন। এ কারণেই আমি তাঁকে সব সময় আমার ফুটবলের বাবা মনে করি।
প্রশ্ন: চাপ কীভাবে সামলান?
রোনালদো: এটা সহজ ব্যাপার নয়। কিন্তু কখনো কখনো আমি চাপের মধ্যে খেলাটা উপভোগ করি-ইতিবাচক চাপ। বেশি দায়িত্ব নেওয়াটা নেতিবাচক হয়ে যেতে পারে। তবে এটা কাজেরই অংশ। এটা সিআর সেভেন হওয়ার অংশ। এটা কোনো সমস্যা নয়। আমি জানি কীভাবে এটা সামলাতে হয়।