প্রচ্ছদ সারাদেশ মানিকগঞ্জে বাল্লা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ও অপসারণের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

মানিকগঞ্জে বাল্লা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ও অপসারণের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক,মানিকগঞ্জ  :
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী রেজার বিরুদ্ধে অনাস্থা ও তার অপসারণ কার্যকর করার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২৩ জুন) দুপুরে বাল্লা ইউনিয়নের সকল ইউপি সদস্য উপস্থিত হয়ে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যানের নানা অনিয়ম ও অনস্থাপ্রস্তাবসহ তার অপসারণ কার্যকর করার দাবী করে সকলের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইউপি সদস্য মো.মনিরুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাল্লা ইউপি সদস্য মোতাহার হোসেন। লিখিত বক্তব্যে জানানো হয় বাল্লা ইউপি চেয়ারম্যান কাজী রেজা সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। তিনি নিজের ইচ্ছা মত ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করেন। কোন কিছু জানতে চাইলে ইউপি সদস্যদের সাথে অশোভন আচরন, গায়ে হাত তোলার মত ঘটনা ঘটিয়েছেন। এছাড়া মাসিক মিটিং না করেন না একক সিদ্ধান্ত অনিয়মসহ দুর্নীতি করছেন। এছাড়া বিগত দিনে টিআর, কাবিখা, কাবিটা, এলজিএসপি অর্থ, গৃহহীনদের ঘর বরাদ্দ, মাতৃত্বকালিন ভাতাসহ বিভিন্ন কার্ডের বিপরীতে চেয়ারম্যান সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন । অপর দিকে ২০১৯ সালে একটি বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান (এনজিও) দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চলতি ও বয়েকা ট্যাক্সের আদায় করা ১২ লক্ষ টাকা পরিষদের তহবিলে জমা না দিয়ে চেয়ারম্যান কাজী রেজা আত্মসাত করেছেন ।

গত ১৭ মে ইউপি সদস্যরা জরুরী সভা করে চেয়ারম্যান কাজী রেজার বিরুদ্ধে অনাস্থা আনাসহ তার অপসারন দাবি করেন। ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য মোতাহার হোসেন, মজিবুর রহমান, মজিবুর পীরসাহেব, মহিদুর রহমান খান, আব্দুল করিম, নূরুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, মনির হোসেন, বাসিয়া বেগম, সামসুন্নাহার ও বিলসিক বেগম। অনাস্থা প্রস্তাব আনার পর চেয়ারম্যানের লোকজন ইউপি সদস্যদের হুমকি ধামকি দিচ্ছেন।

ইউপি সদস্য মোতাহার হোসেন জানান গৃহহীনদের ঘর নির্মানে তাকে একটি প্রকল্পের সভাপতি করা হয়েছিল প্রকল্পের প্রথম কিস্তর ৭৫ হাজার টাকা পাওয়ার সাথে সাথে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কথা বলে চেয়ারম্যান কাজী রেজা ৪০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। এখন গৃহ নির্মানের ঠিকাদার ওই ৪০ হাজার টাকার জন্য চাপ দিচ্ছেন। অপর ইউপি সদস্য বিলকিস বেগম বলেন গৃহ নির্মানে একটি প্রকল্পের তাকেও সভাপতি করা হয়েছে। কিন্তু দুই কিস্তির টাকা উত্তোলন করা হলেও তৃতীয় কিস্তির ৭৫ হাজার টাকা তার স্বাক্ষর জাল করে চেয়ারম্যান কাজী রেজা উত্তোলন করেছেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানোর পরও কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করেন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থার বিষয়টি জেলা প্রশাসক নির্দেশ দেওয়ার পরও হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এখনো তদন্ত করেননি। দুই এক দিনের মধ্যে চেযারম্যানের বিরুদ্ধে আনিত অনাস্থা প্রস্তাব তদন্ত না হলে ইউপি সদস্যরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে অনশন করতে বাধ্য হবে।

মানিকগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক ফৌজিয়া খান বলেন, বাল্ল্ াইউপি সদস্যদের অভিযোগের বিষয়টি পাওয়ার পর হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেন এখনো তদন্ত হয়নি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলতে পারবেন।

হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন জানান, বাল্লা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার অভিযোগের বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। গৃহ নির্মানের নামে চেয়ারম্যান তার (ইউএনও) নামে টাকা আদায় করেছে এমন অভিযোগ ইউপি সদস্যরা তার কাছে করেনি।

 সংবাদ সম্মেলন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিল্পব চক্রবর্তী, সিনিয়র সাংবাদিক সাব্বিরুল ইসলামসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।