পশ্চিমা নেতাদের সঙ্গে দূরত্বের মধ্যেই এক বছরে এ নিয়ে তৃতীয়বার চীন সফরে এলেন পুতিন।
বাণিজ্য ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে দুই নেতার বন্ধন যে জোরদার হচ্ছে একে তারই প্রমাণ হিসেবেই দেখছেন পর্যবেক্ষকরা।
চীন ও রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন বাণিজ্য ব্লক সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দিতে এসে প্রথমেই শি-র সঙ্গে বৈঠক করেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
শনিবার থেকে বন্দরনগরী কিংদাওতে শুরু হওয়া দুইদিনের এসসিও সম্মেলনে অংশ নিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মামনুন হুসাইনও চীন পৌঁছেছেন বলে জানিয়েছে সিনহুয়া।
বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব পিপলে শুক্রবার চীন ও রাশিয়ার দুই রাষ্ট্রপ্রধানে বৈঠকে পুতিনের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) সাধারণ সম্পাদক শি।
“আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে যে ধরনের ওঠানামাই থাকুক, চীন ও রাশিয়া সবসময়ই সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে,” আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর আগেই পুতিনকে উদ্দেশ্য করে বলেন শি।
রুশ প্রেসিডেন্টকে ‘চীনের জনগণের পুরনো ও ভালো বন্ধু’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে গলায় পরিয়ে দেন স্বর্ণের ‘ফ্রেন্ডশিপ মেডেল’; অনুষ্ঠানটি চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।
“প্রেসিডেন্ট পুতিন এমন একটি দেশের নেতা বিশ্বে যার অসামান্য প্রভাব আছে। তিনি আমার সবচেয়ে ভালো, সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু.” বলেন শি।
এক বিলিয়ন ডলারের যৌথ বিনিয়োগ প্রকল্প ছাড়াও বেশ কয়েকটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন দুই নেতা। বিশ্ব মঞ্চে দুই দেশের গভীর সম্পর্ককে অব্যাহত রাখারও প্রতিশ্রুতি দেন চীনা প্রেসিডেন্ট।
“জাতিসঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে চীন ও রাশিয়া উভয়েরই অনেক দায়িত্ব। আমি এবং প্রেসিডেন্ট পুতিন একমত হয়েছি, জটিল এ আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে চীন ও রাশিয়া পারস্পরিক সমর্থন ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে সমন্বয় এবং কৌশলগত সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে,” বলেন শি।
চীনের সঙ্গে রাশিয়ার এ সম্পর্ক পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্কের তুলনায় একেবারেই বিপরীত, বলছেন পর্যবেক্ষকরা।
২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে ওয়াশিংটনের সঙ্গে মস্কোর টানাপোড়েন বৃদ্ধি পায়। রাশিয়া ওই নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছিল বলে অভিযোগ মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর।
মস্কো শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে; নির্বাচনের সময় রাশিয়ার সঙ্গে কোনো ধরনের আঁতাত হয়নি বলে দাবি করে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও।