প্রচ্ছদ শিক্ষাঙ্গন নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

রাবি প্রতিনিধি: ঢাকায় স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

এসময় নয় দফা দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই বিধান সংবিধানে সংযোজন করতে হবে, নৌপরিবহন মন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে, ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবেন না, বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া যাবে না। শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভারব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, প্রত্যেক সড়কে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিডব্রেকার দিতে হবে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্রছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে, শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে থামিয়ে তাদের নিতে হবে, ঢাকাসহ সারাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, গণমাধ্যমের খবরে জেনেছি আন্দোলনে অংশ নেয়া ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজের ৪৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। হোস্টেল ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। তারা রাত কাটিয়েছে হোস্টেলের বাইরে। অভিভাবকদের ফোন দিয়ে বলা হয়েছে আপনাদের সন্তানদেরকে নিয়ে যান। শিক্ষামন্ত্রীকে বলতে চাই, কোন শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন যেন একদিনের জন্যও নষ্ট না হয়। তাদেরকে মানসিকভাবে অত্যাচার করা না হয়। আর আমার ক্ষোভ পুলিশ প্রশাসনের প্রতি নয়, আমার ক্ষোভ পরিবহন ব্যবস্থার উপর। পরিবহন ব্যবস্থার এ অনিয়ম এবং দুর্নীতি সরকারকে খতিয়ে দেখা দরকার।

তিনি আরো বলেন, আজ কেন চলন্ত গাড়িতে নারীদের হয়রানি করা হয়? এ সমস্যাগুলো সমাধানে সরকারকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হবে।

চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের শিক্ষার্থী আল-আমিন প্রধান তারেক বলেন, আজ আমরা কোন দেশে বাস করছি, প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় অনেকের প্রান ঝড়ছে কিন্তু তার কোন সমাধান হচ্ছে না। এক জরিপে দেখা যায়, প্রতিদিন গড়ে ৬৪জন প্রান হাড়াচ্ছে এই সড়ক দুর্ঘটনায়। এসব কি প্রকৃতপক্ষে দুর্ঘটনা নাকি দূর্ঘটনার নামে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড? আমরা সরকারকে অনুরোধ করছি এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য, অন্যথায় আমরা তিব্র আন্দোলন করব।

মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিলা খাতুনর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন, সমাজকর্ম বিভাগের আরিফুল ইসলাম, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের জান্নাতুল নাঈম, ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাজ্জাদ হোসেন, ফলিত রসায়ন বিভাগের আবু শাহিন, চারুকলা বিভাগের আফরুকুন্নাহার ও আল-আমিন প্রধান তারেক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ইসরাফিল ইসলাম, পরিসংখ্যান বিভাগের নিয়ামুল ইসলাম, লোক-প্রশাসন বিভাগের সাদিয়া ইসলাম প্রমুখ।

গত রোববার রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বেপরোয়া বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী আবদুল করিম রাজীব ও দিয়া খানম মিমের মৃত্যুর ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ গড়িয়েছে চতুর্থ দিনে। শিক্ষার্থীদের অবরোধে গতকাল বুধবারও ঢাকা শহর কার্যত অবরুদ্ধ ছিল।