প্রচ্ছদ জাতীয় ধুলা দূষণ রোধে ‘স্পেশাল ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ চালু করল ডিএসসিসি

ধুলা দূষণ রোধে ‘স্পেশাল ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ চালু করল ডিএসসিসি

পরিবেশ দূষণ মোকাবিলার অংশ হিসেবে ধুলি দূষণ কমিয়ে আনতে নগরীতে পানি ছিটানোর ‘স্পেশাল ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ চালু করল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। আজ থেকে ৯টি গাড়ি দ্বারা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন আওতাধীন এলাকায় পানি ছেটানো হবে।

রোববার (১ ডিসেম্বর) ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নগর ভবন প্রাঙ্গণ থেকে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকন।

এসময় মেয়র বলেন, ধুলা দূষণ নিয়ন্ত্রণে ডিএসসিসি বরাবরই কাজ করছে। তিনি বলেন, আদালত কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। ধুলা দূষণ নিয়ন্ত্রণের মূল দায়িত্ব পালন করে মূলত পরিবেশ অধিদফতর। কিন্তু নাগরিকদের কথা বিবেচনা করে আমরা আজ থেকে একটি বিশেষ ক্র‍্যাশ প্রোগ্রাম চালু করছি। ডিএসসিসির যেসব প্রাইমারি রোডগুলো আছে, সেগুলোতে আমরা সকালে এবং বিকেলে দুই বেলা পানি ছিটিয়ে ধুলা এবং বায়ু দূষণ রোধ করার চেষ্টা করব।

তিনি আরও বলেন, সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে উন্নয়নের কাজ চলছে। যেসব স্থানে খোঁড়াখুঁড়ির মাধ্যমে অযথা যদি কেউ ময়লা ফেলে বা বায়ু দূষণের পরিবেশ সৃষ্টি করে রাখে, তাহলে আমরা প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করব।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কাকড়াইল থেকে মৎস্যভবন, গুলিস্তান রোড পর্যন্ত প্রতিদিন পানির গাড়ি দিয়ে দুই ট্রিপে পানি ছিটানো হবে। তোপখানা রোড, সেগুনবাগিচা, আনন্দবাজার, পলাশী, শাহবাগ, কাটবন, সাতমসজিদ রোড, হাজারীবাগ, ঝিগাতলা, সায়েন্সল্যাব, নীলক্ষেত, হাতিরপুল, মগবাজার, কাকরাইল, শান্তিনগরসহ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন প্রায় সব এলাকায় সারাদিনে দুইবার পানি ছিটানো হবে।

এই কার্যক্রম উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. ইমদাদুল হক, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক এয়ার কমোডোর জাহিদ হোসেন, অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক মিল্লাতুল ইসলাম, কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক প্রমুখ।

এদিকে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণ রোধে নীতিমালা প্রণয়নের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই কমিটি বায়ুদূষণ রোধে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং আরও কী কী উপায়ে বায়ুদূষণ রোধ করা যায় সে ব্যাপারে সুপারিশ করবে।

জনস্বার্থে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। কমিটিকে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এছাড়া ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ এলাকায় অবৈধ ইটভাটা ১৫ দিনের মধ্যে বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নির্দেশ দেন আদালত। সেই সঙ্গে রাজধানীর রাস্তা ও ফুটপাতে ধুলাবালি, ময়লা ও বর্জ্য অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে ঢাকা শহরের যেসব এলাকায় উন্নয়ন ও সংস্কার (রাস্তা ও নির্মাণাধীন কাজের জায়গা) কাজ চলছে, সেসব এলাকা ঘেরাও করে কাজের পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন এ আদেশ পালন করে এর দুই সপ্তাহের মধ্যে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিফতরের মহাপরিচালককে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া যেসব এলাকায় উন্নয়ন ও সংস্কারকাজ চলছে এবং যেসব এলাকায় ধুলাবালি বেশি, সেসব এলাকায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দিনে দুবার পানি ছিটাতে দুই সিটির মেয়র ও নির্বাহীদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ আদেশ অনুসারে বিবাদীরা হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন। পরে এ নিয়ে দুই সিটির নির্বাহীকে তলব করেন হাইকোর্ট।