প্রচ্ছদ সারাদেশ ঝিনাইগাতীতে পাহাড় কেটে পাথর ও বালু লুটপাটের মহোৎসব

ঝিনাইগাতীতে পাহাড় কেটে পাথর ও বালু লুটপাটের মহোৎসব

আরএম সেলিম শাহী; শেরপুর :

শেরপুরের ঝিনাগাতী উপজেলার গারো পাহাড় থেকে অবৈধভাবে পাথর ও বালু লুটপাটের মহোৎসব চলছে। স্থানীয় বালুদস্যুরা গারো পাহাড় কেটে অবাধে পাথর ও বালু লুটপাট করে আসছে। পাহাড় কেটে অবাধে পাথর ও বালু উত্তোলন করায় গারো পাহাড়ের সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা গেছে হালচাটি, বাকাকুড়া, গজনী, ছোট গজনী, শিলঝোড়া, মঙ্গলঝোড়া, সোমেশ্বরী নদীর তাওয়াকোচা, বালিজুরি, খাড়ামোড়া, কালঘোষা নদীর গান্ধিগাওসহ গারো পাহাড়ের বিভিন্ন স্থান থেকে পাহাড় কেটে অবাধে পাথর ও বালু লুটপাট করা হচ্ছে।

পাহাড় কেটে পাথর ও বালু লুটপাটের ফলে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়েছে গারো পাহাড়। বালুদস্যুরা ক্ষমতাসীন দলের ছত্র ছায়ায় থেকে দীর্ঘদিন ধরে পাহাড় কেটে পাথর ও বালু লুটপাট করে আসলেও এদের ভয়ে প্রশাসনের কেউ প্রতিবাদ তো দুরের কথা, মুখ পর্যন্ত খুলতেও সাহস পান না।

এমন অভিযোগও করেছেন, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের কোন কোন কর্তা ব্যক্তির কাছ থেকে। এভাবে পাহাড় কেটে পাথর ও বালু লুটপাট করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন অনেকেই।

কাংশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, অবৈধ পাথর ও বালু উত্তোলনের বিষয়ে বিভিন্ন সময় আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু কোন কাজে আসেনি। এসব পাথর ও বালু স্থানীয় ভাবে বিভিন্ন স্থানে রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট নির্মানে ব্যবহারের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হচ্ছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যেই অবৈধ পাথর ও বালু ভর্তি ট্রাক আটকও করা হচ্ছে।

আবার আটককৃত পাথরভর্তি ট্রাক রহস্যজনক কারনে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে যেসব অভিযান চালানো হয় তা আইওয়াস বলে অভিযোগ করেছেন অনেকেই।

রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা ইলিসুর রহমান বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়। তিনি বলেন, পাথর ও বালু উত্তোলনের খবর পাওয়া মাত্রই অভিযান চালিয়ে তা আটক করা হয়। কোন কোন সময় মামলাও দেয়া হচ্ছে। কিন্তু পাহাড় কেটে পাথর ও বালু লুটপাট বন্ধ হচ্ছে না।

অভিযোগে প্রকাশ অবৈধ পাথর ও বালু লুটপাটকারীরা স্থানীয় এক শ্রেণীর অসাধু বন কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজসে অবাধে পাথর ও বালু লুটপাট চালিয়ে আসছে। গারো পাহাড় কেটে নির্বিচারে পাথর ও বালু উত্তোলন করায় একদিকে যেমন গারো পাহাড়ের সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। অপরদিকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে বিপুল পরিমাণের রাজস্ব আয় থেকে। শেরপুরের সহকারী বন সংরক্ষক ড. প্রাণতোষ চন্দ্র রায় বলেন, ৯ জুন মঙ্গলবার তিনি অভিযান চালিয়ে ১ হাজার ঘনফুট পাথর আটক করেছেন। তিনি বলেন, এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।