প্রচ্ছদ রাজনীতি কী আছে প্রধানমন্ত্রীর চিঠিতে

কী আছে প্রধানমন্ত্রীর চিঠিতে

আগামী বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে গণভবনে সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৮টায় বেইলি রোডে ড. কামাল হোসেনের কাছে প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ পৌঁছে দিয়ে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

চিঠি হস্তান্তর করে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা জানেন, গত পরশু যুক্তফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি আমাদের আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর পৌঁছে দেয়া হয়েছিল। দলের পক্ষ থেকে সেটা আমি রিসিভ করেছিলাম। সেটা আপনার দেখেছেন। চিঠির জন্য প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং আমার মাধ্যমে তার উত্তরে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।’

‘অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের এই গণতন্ত্র, সংবিধান সম্মতভাবে সকল বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুয়ার সকলের জন্য উন্মুক্ত,’ বলেন গোলাপ।

‘তাই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনসহ যুক্তফ্রন্ট নেতাদের ১ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমি নিজ হাতে ড. কামাল হোসেন সাহেবের কাছে পৌঁছে দিয়েছি,’ জানান তিনি।আওয়ামী লীগ-যুক্তফ্রন্ট-চিঠি-সংলাপের আমন্ত্রণ-সংলাপ

ঐক্যফ্রন্টের বক্তব্য
ড. কামাল হোসেন চিঠি গ্রহণের পর গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা কয়েকদিন আগে সংলাপের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি চিঠি দিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী আবদুস সোবহান গোলাপের কাছে আমরা চিঠি দিয়েছিলাম। তখনই তারা আমাদেরকে জানিয়েছিলেন খুব শিগগিরই তারা বসবেন এবং আমাদের সিদ্ধান্ত জানাবেন। সেই সঙ্গে আমরা কারা কারা যেতে চাই তাদের একটি লিস্ট আমাদের কাছে চেয়েছিলেন।আওয়ামী লীগ-যুক্তফ্রন্ট-চিঠি-সংলাপের আমন্ত্রণ-সংলাপ

আপনারা এখনই শুনলেন পহেলা নভেম্বর সন্ধ্যায় গণভবনে আমাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।”

কোন বিষয়ে আলোচনা করবেন জিজ্ঞাসা করলে মন্টু বলেন, “আমাদের ৭ দফার সঙ্গে বর্তমান ইস্যুগুলো অন্তর্ভুক্ত করে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যে বিষয়গুলো দরকার সবকিছু নিয়ে আমরা আলোচনা করব। পাশাপাশি আমাদের কাছ থেকে যদি সরকারের কোনো সাহায্য সহযোগিতার প্রয়োজন হয় সেগুলো আমরা করব। আমাদের নেতা ড. কামাল হোসেন সাহেব এ ব্যাপারে বিস্তারিত কথা বলতে পারবেন। যেহেতু তিনি সংবিধান প্রণেতাদের মধ্যে অন্যতম, তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলবেন।”

ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে কমবেশি ১৫ জন সেখানে আলোচনার জন্য যাবেন বলে জানান তিনি।

সোমবার হঠাৎ করেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে তাদের দল সংলাপে বসবে।

ধানমন্ডিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কারো কাছে নতিস্বীকার করে না। সংলাপের জন্য কোনো পূর্বশর্তও নেই। বঙ্গবন্ধু কন্যার দরজার কারও জন্য বন্ধ থাকে না। তাই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাথে সংলাপে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

এর আগে রোববার নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে জাতীয় নির্বাচনসহ ঘোষিত ৭ দফা দাবি ও ১১টি লক্ষ্য সম্বলিত একটি চিঠি আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে পৌঁছে দেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার কাছে দেয়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে সংলাপের আহ্বান জানানো হয়।

গত ১৩ অক্টোবর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিসহ চারটি দলের সমন্বয়ে নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আত্মপ্রকাশ করে।

নিরপেক্ষ নির্বাচনসহ সাত দফা দাবি এবং ১১ দফা লক্ষ্যও ঘোষণা করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।