মাদারীপুর প্রতিনিধি।। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় ভূরঘাটার পাশে একটি ব্রিজের কাছে মানুষ ধরে এনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিতো পাকবাহিনী। কালকিনি উপজেলার ৫ জন কমান্ডারের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা কালকিনি উপজেলার সিডিখান, এনায়েতনগর, সমিতিরহাট ছাড়াও পাশের বরিশালের গৌরনদী ও মুলাদী উপজেলা ও কালকিনির সীমান্তবর্তী ৩টি স্থানে মুখোমুখি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পাকবাহিনীকে পরাস্ত করে ৮ ডিসেম্বর কালকিনি উপজেলা হানাদার মুক্ত করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের সময় এপ্রিল মাসের শেষের দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে কালকিনি উপজেলার ভূরঘাটায় ক্যাম্প স্থাপন করে পাকবাহিনী। সেখানে মানুষ ধরে এনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিত পাকবাহিনী। ব্রিজের নিচের পানি মানুষের লাল রক্তে রঞ্জিত হওয়ায় পরে এই ব্রিজের নাম হয় লালপোল বা লালব্রিজ যা এখনও মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত।
১৯৭১ সালের এই দিনে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে কালকিনি ত্যাগ করে পাক হানাদার বাহিনী। এরপর ৮ ডিসেম্বর মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা হানাদার মুক্ত হয়। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও আটকে পরা পাকবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ২২ দিন যুদ্ধ হয় বরিশালের গৌরনদীর এলাকায়। সেখানেও অংশগ্রহণ করে মাদারীপুরের কালকিনির মুক্তিযোদ্ধারা।
বর্তমান সরকার মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করায় দেশ আজ কলঙ্কমুক্ত হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বাড়ানোসহ এবং মুক্তিযোদ্ধার ইতিহাস নিয়ে একটি মুক্তিযোদ্ধা ইতিহাস নিয়ে একটি যাদুঘর করার দাবী জানিয়েছে।
কালকিনি উপজেলার বালীগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক ইউনিয়ন কমান্ডার বলেন সামচুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, বর্তমান প্রজম্ম মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানে না। তাদের জন্য কালকিনিতে একটি মুক্তিযোদ্ধা ইতিহাস নিয়ে একটি যাদুঘর করলে ভাল হয়। তাছাড়া আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা বিভিন্ন স্থানে গেলে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিলে সনদ নিয়ে যেতে হয়। আমি সরকারের কাছে একটা দাবী জানাই আমাদের ভোটার আইডি কার্ডে(ন্যাশনাল আইডি কার্ড) মুক্তিযোদ্ধ কথাটা উল্লেখ করলে ভাল হয়।
কালকিনি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল মালেক হাওলাদার, আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা যে ভাতা পাই তা বর্তমান যুগে অতি সামান্য, আমাদের কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা মাসিক ভাতা হওয়া উচিত। তাছাড়া সরকার আমাদের বিশেষ বিশেষ(১৬ ডিসেম্বর, দুই ঈদ, বৈশাখী, ২১শে ফেব্রয়ারী, ২৬শে মার্চ) যে ভাতা দেয়ার কথা বলেছে সেগুলো শ্রীঘই চালূ করা উচিত।
কালকিনি উপজেলা সাবেক কমান্ডার জলিল আকন বলেন ভুরঘাটা লালব্রীজ অনেক লোক ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়, মাইজপাড়া, ফাইসাতলা হাটসহ তিনটি স্থানে গনহত্যা করা হয়। আমি তিনটিস্থানে সৃতিস্তম্ভ করার দাবী করে আসছি। এবং দাবী জানাচ্ছি।
মাদারীপুর-৩ আসনের আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী আব্দুস সোবাহান মিয়া গোলাপ বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে মনেকরি, মাদারীপুর -৩ আসনে জয়ী হতে পারলে যারা অসহায় মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে তাদের সরকারের সহযোগীতাসহ অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের স্বচ্ছল করার চেস্টা করবো।
