প্রচ্ছদ অর্থনীতি আগে রাজস্ব খরচ, তারপর অর্জন : অর্থমন্ত্রী

আগে রাজস্ব খরচ, তারপর অর্জন : অর্থমন্ত্রী

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম :

এবারের ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ‘ব্যয়ের দৃষ্টিকোন’ থেকে দেয়া হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, অন্যবার রাজস্ব আহরণ করা হয় এবং তা খরচ করা হয়। এবার রাজস্ব খরচ করা হবে তারপর রাজস্ব অর্জন করা হবে। এবারের বাজেট একদিকে অর্থনীতির পাশাপাশি মানবিক। সংসদে সোমবার ২০১৯-২০ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট প্রসঙ্গে বলেন, এটা অর্থনীতির বাজেট নয়। এক দিকে অর্থনীতির বাজেট, পাশাপাশি এটা মানবিক বাজেট। অন্যবার রেভিনিউ (রাজস্ব) অর্জন করি এবং রেভিনিউ (রাজস্ব) খরচ করি। আমি এবার রাজস্ব খরচ করবো, তারপর রাজস্ব অর্জন করবো। পে অ্যাজ ইউ আর্ন। এখন যদি খরচ না করি, মানুষ বাঁচবে কেমন করে? আমরা এ বাজেটটি একটা এক্সেপেন্ডিচারের পার্সপেকটিভ (ব্যয়ের দৃষ্টিকোণ) থেকে দিয়েছি। বাজেট তৈরি করেছি দেশের মানুষকে সামনে রেখে। এবার বাজেটে দেশের সব মানুষ প্রাধিকার পাচ্ছে। দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে। এই মহামারি করোনাভাইরাস থেকে যতটা সম্ভব আমাদের চেষ্টা থাকবে তাদের রক্ষা করার।

সোমবার সকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হলে সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা শুরু হয়। আলোচনায় সর্বশেষ অর্থমন্ত্রী অংশ নেন।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, যদি বাজেট তৈরি না করি, তাহলে অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে তোলার কোনো ব্যবস্থা নেই। সাধারণত আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বাজেট করে থাকি। তাই বাজেটে অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিভিন্ন উপাদান প্রাধিকার পায়, এবার আমরা সেটা করিনি। এবার মানুষকে প্রাধিকার দিয়েছি।

তিনি বলেন, মানুষকে যদি বাঁচাতে না পারি, দেশ কার জন্য? দেশের বাজেট কার জন্য? ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে এ বাজেটটি ঘোষণা করেছি, সুতরাং এ বিবেচনাটি মাথায় রেখে আসুন সবাই একমত হই। দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হলে সবাইকে লাগবে, সবাইকে নিয়েই এ কাজটি করতে হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী গ্রামের মানুষকে গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী করার কথা বলেছেন। যারা গ্রামের পান দোকানদার, মুদি দোকানদার তাদের সবাইকে রক্ষা করতে হবে। তাদের দায়িত্ব নিয়েই এ বাজেট করেছি। অন্যবার রাজস্ব অর্জন করি এবং রাজস্ব খরচ করি। আমি এবার রাজস্ব খরচ করবো, তারপর রাজস্ব অর্জন করবো।

মুস্তফা কামাল বলেন, বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর অর্থনীতির অভিঘাত বিবেচনায় আমরা সমগ্র বাজেটে রাজস্ব আয়-ব্যয় এবং ঘাটতির কিছুটা সমন্বয় করেছি। জিডিপি’র প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রায় আমরা ৮ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ দশমিক ২ শতাংশ পুনঃনির্ধারণ করেছি। তাও যদি আমরা অর্জন করতে পারি, তা হবে পুরো দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ। যে কারণে সমন্বয়ের ফলে প্রাক্কলিত জিডিপি ২৮ লাখ ৮৬ হাজার ৮৭২ কোটি টাকার পরিবর্তে ২৮ লাখ ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা নির্ধারিত হয়েছে।

২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের সংশোধিত বাজেটে ৬ লাখ ৭০ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা থেকে নিট বরাদ্দ ৫ লাখ ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, করোনা দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য স্বাস্থ্য, সেবা খাত, চিকিৎসা বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে অতিরিক্ত ৩ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।