প্রচ্ছদ খেলাধুলা আরও অনেক কিছু অর্জন করার বাকি : তামিম

আরও অনেক কিছু অর্জন করার বাকি : তামিম

প্রাপ্তির উপচে পড়া ভান্ডারেও অপ্রাপ্তির হাহাকার তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। সাফল্যের পুষ্পবৃষ্টিতে ভেসে যাবার সময়ও সমালোচনার কাঁটার ক্ষত ভোলেন না। সে কারণেই তামিম অনন্য। আরও বড় অর্জনের হাতছানিতে চন্দ্রাহতের মতো ছুটে চলেন তিনি।

নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশ দল। আর দলের সঙ্গে থাকা বাংলাদেশের ড্যাশিং ওপেনার তামিম বৃহস্পতিবার কথা বলেছেন ডয়চে ভেলের সঙ্গে।

নিজের ফর্ম নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তামিম বলেন, আমি আগে কী করেছি, তা নিয়ে একদমই ভাবি না। হয়তো এটি আমার এক শক্তির জায়গা। গত চার বছরে আমার ক্যারিয়ার-গ্রাফ সব সময়ই উর্ধমুখী। কিন্তু এ জিনিসটি মাথায় কখনো আসেনি। অমনটা হলে হয়তো কিছুটা আয়েশি হয়ে যাবো। আর কোনো ম্যাচে ৭০-৮০ কিংবা সেঞ্চুরি করলেও পরের খেলায় নামার সময় খুব নার্ভাস থাকি। ভাবতে থাকি, ব্যর্থ হওয়া চলবে না; রান করতে হবে–এসব। রান করাকে আমলে না নেওয়াটা আমার সাম্প্রতিক ভালো ফর্মের হয়তো একটা কারণ। সব সময় বিশ্বাস করি, আমার আরও অনেক কিছু অর্জন করার বাকি। এতোদিন যা করেছি, ভালোই করেছি। কিন্তু গর্বিত হওয়ার মতো স্পেশাল কিছু এখনো করিনি।

বাজে সম্পর্কে তামিম বলেন, আমার জন্য খুব কঠিন ছিল। কারণ, তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করলে তা আমি পড়তাম। দেখে খারাপ লাগতো। শুধু আমার পর্যন্ত গেলে তা-ও মেনে নিতাম, কিন্তু যখন পরিবার পর্যন্ত চলে যায়, তা মেনে নেওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে। তবে এখন মনে হয় আমি আগের চেয়ে মানসিকভাবে শক্ত। সবকিছু আর গোনার মধ্যে ধরি না। আমি বিশ্বাস করি, এ জিনিসগুলো আবার হবে। জীবনের কোনো একটা পর্যায়ে অমন সমালোচনা আবার হবে। এখন আমি আশা ও প্রার্থনা করি যে, গতবার যেভাবে তা সামলেছিলাম, সামনের বার যেন এর চেয়ে ভালোভাবে সামলাতে পারি।

রেকর্ডের বিষয় কথা বলতে মুমিনুলের প্রশংসা করেন তামিম। মুমিনুল যখন আমার আট সেঞ্চুরির রেকর্ড স্পর্শ করেছে, তখন মনে হয়েছে, ‘এই ছেলেটি আমার চেয়ে ৩০ কিংবা ২০ ম্যাচ কম খেলে (আসলে ২৩ ম্যাচ; তামিম টেস্ট খেলেছেন ৫৬টি, মোমিনুল ৩৩টি) আট সেঞ্চুরি করেছে। এখন পরের ২৫ টেস্টে আমি যদি খুব ভালো করি, তাহলে ওর সঙ্গে আবার পার্থক্যটা বাড়িয়ে নিতে পারব।’ এটি আমার ও মুমিনুলের মধ্যে চ্যালেঞ্জ; স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা। এমন নয় যে, নিউজিল্যান্ডে সেঞ্চুরি করে ও যদি আমার চেয়ে এগিয়ে যায়, তাহলে আমার খারাপ লাগবে। আমি তেমন মানুষ নই। ব্যাপারটিকে বরং চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেবো। সেঞ্চুরির সুযোগ পেলে যেন সেঞ্চুরি করতে পারি, তা নিশ্চিত করতে চাইবো। আগেও কেউ কেউ সেঞ্চুরি সংখ্যায় আমার কাছাকাছি এসেছিল। এরপর হয়তো কয়েকটি সেঞ্চুরি করে এগিয়ে গেছি। এবারও একই চেষ্টা থাকবে।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন প্রায় ১২ বছর। কখনো কোনো ব্যাটসম্যানকে দেখে মনে হয়েছে, ‘ইস্, যদি ওর মতো ব্যাটিং করতে পারতাম!’ খুব সহজ উত্তর, ভাই– বিরাট কোহলি।

ব্রায়ান লারার ব্যাটিং সেভাবে দেখেননি, বোঝা গেছে। শুরুর সময়ই তো লারার শেষ হয়ে গেল…

আসলে এখন ক্রিকেটের প্রতিটি খুঁটিনাটি যেভাবে দেখি কিংবা বোঝার চেষ্টা করি, ওই সময় হয়ত সেভাবে দেখতাম না৷ ব্রায়ান লারা ব্যাটিং করছে, তা দেখেই খুশি। জয়াসুরিয়া ব্যাটিং করছে, এতেই খুশি। কিন্তু এখন যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘কার মতো ব্যাটিং করতে চান’, তাহলে আমি বলবো বীরেন্দর শেবাগের মতো। পৃথিবীতে অনেক বড় বড় হিটার এসেছেন। কিন্তু শেবাগের মতো তিন ফরম্যাটে এমন দাপট নিয়ে কেউ খেলেছেন বলে আমার মনে হয় না। এ কারণেই কার মতো ব্যাটিং করতে চাই–এর উত্তরে শেবাগের কথা বলবো। সূত্র: ডয়চে ভেলে (সংক্ষিপ্ত)