প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ হয়রানির অভিযোগ পেলেই বরখাস্ত: ভূমিমন্ত্রী

হয়রানির অভিযোগ পেলেই বরখাস্ত: ভূমিমন্ত্রী

‘আমাদের চেয়ে বড় অফিসার হয়ে গেছ? মানুষকে ক্ষমতা দেখাও? হোয়াট ননসেন্স ইজ দিস? এটা তো আমি টলারেট করব না।’রোববার দুপুরে হঠাৎ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় সারপ্রাইজ ভিজিটে গিয়ে অভিযুক্ত এক কর্মকর্তাকে এভাবেই শাসান ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।

এসময় হয়রানির অভিযোগ পেলেই ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের বরখাস্তের হুঁশিয়ারি দেন।সেখানে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয় ভুক্তভোগী বাঁশখালীর শিহাব উদ্দিনের। শিহাব উদ্দিন মন্ত্রীকে জানান, নিজ জমির কাগজপত্রের বিষয়ে জেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার পরমেশ্বর চাকমার কাছে এসেছেন। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে তার ফাইল আটকে রেখে নানাভাবে হয়রানি করছেন এ সার্ভেয়ার।সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্ত সার্ভেয়ার পরমেশ্বর চাকমাকে ডেকে পাঠান মন্ত্রী।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘ফাইল আটকে রাখার প্রবণতা কেন? মানুষকে ঘুরানো, হয়রানি করা- এসব কেন? আমরা তো মানুষের সেবা করতে চাচ্ছি। তোমরা কি অনেক বড় অফিসার হয়ে গেছ?’তিনি আরও বলেন, ‘নিচের লেভেলের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যদি আমার কাছে, ডিসির কাছে কিংবা এডিসির কাছে কোনও কমপ্লেন আসে, নিচের লেভেলে ফাইল আরও স্লো হয়ে যায়। তখন নানা আইন বের হয়ে যায়। এসবের কারণ কি?’

ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘একটা মানুষের কত টাকা দরকার। ১২ পার্সেন্ট, ১৫ পার্সেন্ট টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ শুনছি আমি। সরকার বেতন দিচ্ছে না? হারামের পয়সা খাও, লজ্জা করে না?’দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে সর্বত্র তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। বিশেষ করে ভূমি অফিসের দুর্নীতিবাজদের ধরতে হঠাৎ করে ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বিভিন্ন শাখায় হাজির হচ্ছেন স্বয়ং মন্ত্রী।

এ সময় মন্ত্রী ভুক্তভোগীদের অভিযোগ শোনেন। তিনি দুই কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মৌখিকভাবে সতর্ক করেন। হয়রানির অভিযোগ শুনলে বরখাস্তসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন।মন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রামে বেশ কিছু ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। কিছু অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। অধিগ্রহণের চেক থেকে ১২-১৫ শতাংশ দিতে হয়। এটা অনেক গুরুতর অভিযোগ। চেক দিলে ওই চেক চলে যাচ্ছে দালালের হাতে। এ জন্য ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার বা ইএফটি করার বিষয়টি চিন্তাভাবনা চলছে। ভূমি অফিসের নিচের পর্যায়ে সমস্যা রয়ে গেছে। সার্ভেয়ার-কানুনগোদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বেশি। মন্ত্রী কিংবা ডিসিকে অভিযোগ করা হলে হয়রানি আরও বেড়ে যায় বলে শুনেছি।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন হয়রানির কথা স্বীকার করে বলেন, একটি দালালচক্র বাইরে থেকে লোকজনকে হয়রানি করছে। এর মধ্যে ভূমি অফিসের কিছু কর্মচারী রয়েছে। চারজনকে গত সপ্তাহে বদলি করা হয়েছে।এর আগে, গতকাল শনিবার বিকেলে নগরীর সদরঘাট এলাকায় কর্ণফুলী তীরে উচ্ছেদ কার্যক্রমের পূর্বপরিস্থিতি দেখতে এলে হৈ-চৈ পড়ে যায়।

সেসময় তিনি বলেন, কর্ণফুলী আমাদের চট্টগ্রামের সম্পদ। যেভাবে হোক দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে আমাদের এটিকে রক্ষা করতে হবে। কারণ কর্ণফুলী নদী বাঁচলেই চট্টগ্রাম বাঁচবে।