প্রচ্ছদ সারাদেশ ঢাকা বিভাগ হরিরামপুরে পদ্মার ভাঙন রোধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনায় মানববন্ধন

হরিরামপুরে পদ্মার ভাঙন রোধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনায় মানববন্ধন

সায়েম খান, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি:

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নকে পদ্মার ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে মানববন্ধন করেছে আজিমনগর ইউনিয়নের জনগণ।

মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে হাতিঘাটা পদ্মাপাড়ে এবং আজিমনগর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে আজিমনগর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য মো. রাসেল মৃধা বলেন ‘‘আগে আজিমনগর চরের শিক্ষার হার বেশি ছিলো না। পরবর্তীতে আজিমনগর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় শিক্ষার হার বেড়েছে। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় আমরা আশার আলো দেখেছিলাম, এখন চোখে অন্ধকার দেখছি। বিদ্যালয় ভেঙে গেলে চরের ছেলেমেয়েরা কোথায় লেখাপড়া করবে? আমরা ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

আজিমনগর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য শেখ হালিম বলেন, ‘‘এখানে দুইটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে প্রায় দুইশত পরিবার বসবাস করে। দুইটি আদর্শ গ্রামও রয়েছে। নদীতে এগুলো ভেঙে গেলে এই লোকগুলো কোথায় যাবে?

হাতিঘাটা গ্রামের কাজী মোবারক হোসেন ওরফে মাসুম কাজী বলেন, ‘‘অনেক দুঃখ-বেদনা নিয়ে আজকে মানববন্ধনে এসেছি। পদ্মা নদী আজিমনগর ইউনিয়ন গ্রাস করে নিয়ে যাচ্ছে। ভিটেমাটি হারা মানুষ কষ্টে দিনযাপন করছে। গত মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা এখানে এসেছিলেন। তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, আজ-কালের মধ্যে কাজ শুরু হবে। কিন্তু এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও কাজ শুরু হয়নি। আমরা এখন হতাশায় ভুগছি।

আমাদের ভিটেমাটি টুকু যদি চলে যায়, তাহলে রাস্তায় থাকতে হবে। পদ্মায় ইউনিয়ন পরিষদ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, মসজিদ, ফসলি জমি, বাড়িঘর নিয়ে গেছে। স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বাজার, স্কুল, আশ্রয়ণ প্রকল্প সব ভেঙে যাবে। যে সমস্ত জমিতে সোনার ফসল ফলতো তা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।” মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনিই আমাদের শেষ ভরসা।

আপনার সহায়তার আশায় আমরা বুক বেঁধে রইলাম”। মো. কামাল শেখ বলেন, ‘‘জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছেন। আশ্রয়ণ প্রকল্প করে মাথা গোজার ঠাঁই করে দিয়েছেন। এগুলো ভেঙে গেলে আমাদের কোন ঠাঁই হবে না। আপনি দ্রুত আমাদের রক্ষার্থে বাঁধ করে দিন।

গত দুই সপ্তাহের ভাঙনে আজিমনগর ইউনিয়নের শতাধিক পরিবারের বসতভিটা, ফসলি জমি, পাকা সড়ক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, মসজিদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে আজিমনগর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়, ৫৭নং হারুকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুইটি আশ্রয়ন প্রকল্প, দুইটি আদর্শ গ্রাম, বাজারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।