প্রচ্ছদ সারাদেশ ঢাকা বিভাগ হরিরামপুরে ঝিটকা-মাচাইন সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন

হরিরামপুরে ঝিটকা-মাচাইন সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন

সায়েম খান, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা-মাচাইন সড়কটি দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্করণের অভাবে বেহাল অবস্থায় জনর্দুভোগের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তাটির অধিকাংশ জায়গায় পিচের আস্তরণ উঠে ছোট ছোট খানাাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় সকল প্রকার যানবাহন চলাচল কষ্টকর হয়েছে পড়েছে।
একটু বৃষ্টি হলেই খানাাখন্দ জায়গায় পানি জমে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত চলাচলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ। এছাড়াও এ রাস্তায় ঝিটকা ঠাকুরপাড়া ও ভাদিয়াখোলার গুনধরপট্টি নামক স্থানে দুটি ব্রীজ মাঝখানে ভেঙ্গে লোহার রড বেরিয়ে পড়েছে। ফলে এ সড়কে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়েই চলছে শতশত যানবাহন। রাস্তাটি ঝিটকা থেকে মাচাইন হয়ে টেপরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে মিলিত হওয়ার কারণে প্রতিদিন মালবাহী, ট্রাক, পিকআপসহ অটো রিক্সা, ভ্যান, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, নছিমন চলাচল করছে।
রাস্তাটিতে ঝিটকা থেকে মাচাইন পর্যন্ত প্রায় ৫০-৬০টি সিএনজি, টেম্পো ও ইজিবাইকে লোকজন যাতায়াত করছে। কিন্তু রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় এ সব যানবাহন চলাচলে কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও কাঁচাপাকাসহ ২৪ ফিট প্রস্থ এই জিসি সড়কটি ১৯৯৯-২০০০ অর্থ বছরে প্রথম পাকাকরণ করা হয়। ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরে রাস্তাটির ৯ কিমি প্রথম সংস্করণ, ২০০৬-২০০৭ অর্থবছরেও ৯ কিমি. দ্বিতীয় সংস্করণ, ২০১০-২০১১ অর্থবছরে জিরো পয়েন্ট থেকে ১৪৭৫মি.পর্যন্ত তৃতীয় সংস্করণ ও সর্বশেষ ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে ৭৩৭৫ মিটার সংস্করণ করা হলেও দীর্ঘ ছয় বছর ধরে আর কোনো সংকরণ করা হয়নি। ঝিটকা-মাচাইন রুটের ইজিবাইক মালিক সমিতির সভাপতি রনি আলম জানান, এই রাস্তায় টেম্পু, ইজিবাইক, সিএনজিসহ ৫০-৬০টি গাড়ী প্রতিদিন ঝিটকা-মাচাইন চলাচল করে। কিন্তু রাস্তাটির অধিকাংশ জায়গা পিচ ঢালাই উঠে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলে যাত্রীদের খুব কষ্ট হয়। তাই রাস্তাটি দ্রুত সংস্করণ করা জরুরি।
বাল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী রেজা জানান, এই রাস্তাটি প্রায় ছয় বছর যাবৎ কোনো সংস্করণ করা হয় না। দীর্ঘদিন ধরেই রাস্তাটির অবস্থা খুব খারাপ। এই রাস্তাটি এলজিইডি’র অধিনে। তাই পরিষদের পক্ষ থেকে কিছু করার সুযোগ নেই। তারপরেও রাস্তাটির পুণঃস্করণের জন্য আমি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছি। খুব দ্রুতই হয়তো কাজটি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক দেওয়ান সাইদুর রহমান বলেন, রাস্তাটি অত্যন্ত ব্যস্ততম ও অতি জনগুরুত্বপূর্ণ। এই রাস্তাটি বেশ কয়েকবার সংস্করণ করা হয়েছে। আবারও সংস্করণ করা খুব জরুরী। আকস্মিক বন্যায় আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বন্যায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানেরই রাস্তাঘাট ভেঙ্গে গেছে। যতদ্রুত সম্ভব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রাস্তাটি সংস্করণ করার ব্যবস্থা করব। এই উপজেলার যাতে একটা মানুষকেও কষ্ট করতে না হয়, সে জন্য আমি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব ইনশাল্লাহ।
উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী (এলজিইডি) মুহাম্মদ ইরাজ উদ্দিন দেওয়ান জানান, এই রাস্তাটি আমি বরাদ্দ দিয়েছি। করোনাকালীন ক্রান্তিকাল ও বন্যার কারণে বাজেট স্বল্পতার দরুণ রাস্তটি বর্তমানে করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে যতদ্রুত সম্ভব আমরা এটি করার ব্যাবস্থা করব। তিনি আরও জানান, আকস্মিক বন্যায় উপজেলার অনেক রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একবারে তো আর সব সম্ভব না, আস্তে আস্তে সবই সংস্করণ করা হবে।