প্রচ্ছদ রাজনীতি হঠাৎ জামায়াত নিয়ে সরগরম রাজনৈতিক মাঠ

হঠাৎ জামায়াত নিয়ে সরগরম রাজনৈতিক মাঠ

সম্প্রতি জামায়াতের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর আব্দুর রাজ্জাকের উপলব্ধি হয়েছে যে, দেশের স্বাধীনতা বিরোধীতা করে কোন দল টেকেনি। এ কথা বুঝতে উনার মত বিজ্ঞ ব্যক্তির এত সময় লেগে গেল? এ প্রশ্ন এখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ঘরপাক খাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।

জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি মূল্যায়ন করতে গিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, রাজনীতি করতে হলে সংশোধনের কোনো বিকল্প নেই। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের কৃতকর্মের জন্য জনগণের আস্থা হারিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এ আস্থা আর কখনও ফিরে আসবে না।ক্ষমতাসীন দলের অন্যতম মুখপাত্র আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতে ইসলামীর এ দেশে রাজনীতি করার কোনো নৈতিক অধিকারই নেই। তারা এ অধিকার অনেক আগেই হারিয়েছে।

একাত্তর সালে জামায়াতে ইসলামীর কর্মকান্ডের জন্য জাতির কাছে দলটির প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত। এই বোধদয় জামায়াতের আরও আগেই হওয়া উচিত ছিল। এছাড়া এটা জামায়াতের নতুন কৌশলও হতে পারে।গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী বলেছেন, শুধু জামায়াত ইসলামীকে নয় সকল ধর্মীয় রাজনীতি বন্ধ করাই সময়ের দাবি। ধর্মীয় রাজনীতির অধিকার যদি দেওয়া হয় জামায়াত ইসলামীকেও দিতে হবে।

আর ধর্মীয় রাজনীতি বাদ দিলে জামায়াত ইসলামীকে বাদ দিতে হবে ধর্মকে কখনও রাজনীতি সঙ্গে আনা ঠিক হবে না। কারণ ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করে বিভিন্ন জায়গায় খুনখারাবি হচ্ছে।জামায়াত কী রকম সংস্কার চায়, তার ওপর নির্ভর করছে তাদের ভবিষ্যৎ রাজনীতি বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক আলী রিয়াজ। জামায়াত কোন ধরণের সংস্কার গ্রহণ করছে, সেটা দেখতে হবে। কেবল ৭১- এ মহান মুক্তিযুদ্ধে কৃতকর্মের কারণে ক্ষমা চাওয়ায় নয়, জামায়াতের সংস্কারের বিষয়টা হতে পারে তাদের দলীয় আদর্শিক অবস্থানের পরিবর্তন।এখন জামায়াত যদি আদর্শিক সংস্কারের পথ বেছে নেয়, তাহলে তাদেরকে মওদুদীর পথ থেকে সরে আসতে হবে। আর সেটা তারা গ্রহণ করবেন কি না তা অনেক বেশি আলোচনার বিষয়।

তারা আদৌ সে রকম সংস্কার চাচ্ছে কি না এবং সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরার কোন কৌশলে তারা এগোবে তা দেখার বিষয়। কেবল সাংগঠনিক সংস্কারে এগোলে তারা গ্রহণযোগ্যতা পাবে না বলে মনে করেন আলী রিয়াজ।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, সদ্য বিদায়ী জামায়াত নেতা আব্দুর রাজ্জকের পদত্যাগ আইওয়াশ প্রহসন। কারণ জামায়াতের এখন বাঁচা মরার প্রশ্ন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে, সংগঠন হিসেবেও তাদের বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এজন্য তারা ভয় পাচ্ছে, বিচার থেকে বাঁচার জন্য সম্পদ রক্ষার জন্য। গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য এই ক্ষমার নাটক করতে যাচ্ছে।

শাহরিয়ার কবির আরও বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে জামায়াত ছাড়তে বলেছে। একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাইতে বলেছে।জামায়াত এখনও বলছে তারা একাত্তরে কোন গণহত্যা করেনি। তাদের মিত্র বিএনপি বলেছে জামায়াতের এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। এটা মূলত বিএনপি জামায়াতের অপকৌশল।