প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের ৩ বছর পূর্তি, যত কীর্তি বিন সালমানের

সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের ৩ বছর পূর্তি, যত কীর্তি বিন সালমানের

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম :

মুহাম্মদ বিন সালমান আল সৌদ হলেন সৌদি আরবের যুবরাজ, উপপ্রধানমন্ত্রী এবং পৃথিবীর সবচেয়ে কমবয়সী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। তিনি আল সৌদ রাজদরবারের প্রধান এবং অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন বিষয়ক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। তার পিতা বাদশাহ সালমানের পরেই তার ক্ষমতা বিবেচনা করা হয়।

২০১৭ সালের ২১ জুন মুহাম্মদ বিন নায়েফকে যুবরাজের পদ থেকে অপসারণ করা হয় এবং তার স্থলে মুহাম্মদ বিন সালমানকে যুবরাজ মনোনীত করা হয় একই সাথে রাজকীয় ফরমানের মাধ্যমে নায়েফকে তার সব পদ থেকে অপসারণ করে তার সকল ক্ষমতা মুহাম্মদ বিন সালমানকে দেয়া হয়।

তবে নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, মোহাম্মদ বিন সালমান গোপনে বিন নায়েফকে বহিষ্কার করে তার জায়গা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।

মুহাম্মদ বিন সালমান আল সৌদ জেদ্দায় ৩১ আগস্ট ১৯৮৫-এ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাদশাহ সালমানের তৃতীয় স্ত্রী ফাহদা বিনতে ফালাহ বিন সুলতানের পুত্র। যুবরাজ মুহাম্মদ সালমান বাদশাহ সৌদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের উপর স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেছেন।

স্নাতক শেষ করে তিনি ২০০৯ সালে তার বাবার সালমান বিন আব্দুল আজিজের বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার আগে রাষ্ট্রীয় বেশ কয়েকটি সরকারি দপ্তরে কাজ করেন। এছাড়া রিয়াদের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০১২ সালে, নায়ফ বিন আবদুল আজিজের মৃত্যুর পরে যুবরাজ মোহাম্মদকে ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তিন বছর পরে, বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ মারা যান এবং মুহাম্মদ বিন সালমানের পিতা ৭৯ বছর বয়সে সিংহাসন আরোহন করেন।

দ্য গার্ডিয়ান প্রত্রিকার বরাতে জানা যায়, বিন সালমান একজন “কাজপাগল” মানুষ হিসেবে পরিচিত যে তার অফিসে দিনের ১৮ ঘন্টা সময় ব্যয় করেন।

তবে তিনি সমালোচনা ভালভাবে গ্রহণ করেন না বলে জানা গেছে। গার্ডিয়ান জানায়, তার বিরুদ্ধে কোন বিষয়ে ভদ্রভাবে বা কূটনৈতিক শিষ্টাচারের সাথে বললেও তার রেহাই নেই।

সৌদি রাজ পরিবারের মোট সম্পদের পরিমান অজানা। তবে সৌদি রাজ পরিবারের একটি সংবাদ সংস্থা হাউজ অফ সৌদের মতে, সৌদি রাজপরিবারের মোট সম্পদের সম্ভাব্য পরিমাণ ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলার। যেখানে ব্রিটিশ রাজ পরিবারের আনুমানিক সম্পদের পরিমাণ ৮৮ বিলিয়ন ডলার।

কয়েক দশক ধরে তেল উৎপাদন বিক্রি থেকে এসব সম্পদ গড়ে উঠেছে বলে ধারণা করা হয়। সৌদি রাজ পরিবারের সদস্য সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। তবে তাদের মধ্যে ভাগ্যবান দুই হাজারের মতো সদস্যদের দ্বারা সৌদি আরব পরিচালিত হয়।

সৌদি রাজপরিবারের সবচেয়ে বড় আয়ের উৎসের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরমকো। রাষ্ট্রায়ত্ত জায়ান্ট তেল কোম্পানী ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শেয়ার বাজারে আসার পরে প্রায় দুই ট্রিলিয়ন ডলারের রেকর্ড মূল্যে পৌঁছেছে।

ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান কেনাকাটার জন্য বিখ্যাত। তিনি কয়েক শ’ কোটি ডলার ব্যয় করে প্রমোদ তরী, ব্যক্তিগত বিমান, হেলিকপ্টার, ফান্সে অট্টালিকা ও দুর্লভ শিল্পকর্ম ক্রয় করেছেন।

তিনি ৫০০ মিলিয়ন ডলারে একটি প্রমোদ তরী, ৩০০ মিলিয়র ডলারে ফান্সে একটি অট্টালিকা ও ৪৫০ মিলিয়ন ডলার মূল্যে লিওনার্দো দা ভিঞ্চির একটি শিল্পকর্ম ক্রয় করেছেন বলে জানা গেছে।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন কেলেঙ্কারী নিয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছেন। মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং দমনমূলক আইনগুলোর জন্য সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন।

২০১৭ সালের শেষের দিকে ক্রাউন প্রিন্স কতৃক পরিচালিত দুর্নীতি দমন অভিযানে ২০০ বেশির বিশিষ্ট সৌদি নাগরিকদের গ্রেফতার করা হয় এবং কয়েকজনকে কয়েক সপ্তাহ ধরে রিটজ-কার্লটন নামের একটি হোটেলে আটক করা হয়েছিল।

আল জাজিরা জানায়, সৌদি আরবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সংখ্যা বাড়ছে। মুহাম্মদ বিন সালমান যুবরাজ হওয়ার প্রথম আট মাসে ১৩৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল।

২০১৮ সালের নভেম্বরে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি নাগরিক ও বিশিষ্ট সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার দায়ে চরম সমালোচনার শিকার হন। সিআইএ জানায়, তাকে যুবরাজের নির্দেশেই হত্যা করা হয়।

প্রথমে সৌদি আরব এসব বিষয় অস্বীকার করলেও পরে তা স্বীকার করে নেয়। এবং বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয় ও পাঁচজনের ফাঁসির আদেশ দেয়।

সৌদি যুবরাজের সাথে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা ও ইহুদিদের লবিস্ট জ্যারেড কুশনারের কয়েক বছর ধরে বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে বলে জানায় বিভিন্ন গণমাধ্যম।

যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভাল সম্পর্ক রাখার পাশাপাশি দেশটির শীর্ষ প্রযুক্তি সংস্থা গুগল, অ্যাপল ও অ্যামাজনের সাথে সুসম্পর্ক রয়েছে বিন সালমানের।

এছাড়াও মুহাম্মদ বিন সালমান ক্রাউন প্রিন্সের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই সৌদি আরবে সংস্কারের লক্ষে সামাজিক, অর্থনৈতিক, আইন, সাংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ধরণের মেগা প্রজেক্ট গ্রহণ করেন। যার মাধ্যমে সৌদি আরবকে রক্ষণশীলতার পরিবর্তে আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ব্যাপক কর্মকাণ্ড হাতে নেন।

আইন / সামাজিক সংস্কারের জন্য নেয়া পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে:
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে রাজকীয় ডিক্রি জারির মাধ্যমে নারী ড্রাইভিংয়ের উপর কয়েক দশক দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে। যা ২০১৮ সালে ২৪ জুন থেকে কার্যকর হয়।

একই বছরের অক্টোবরে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ভবিষ্যত বিনিয়োগ উদ্যোগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশকে মডারেট ইসলামি দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি করেন।

২০১৮ সালের মার্চে সৌদি বিচার মন্ত্রনালয় একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানায়, তালাকপ্রাপ্তা নারী যেন তাৎক্ষণিকভাবে তাদের সন্তানদের নিজের যিম্মায় রাখতে পারে। একই বছর মন্ত্রী পরিষদ যৌন হয়রারিকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত একটি আইন অনুমোদন করে।

২০১৯ সালে একটি রাজকীয় ডিক্রি জারে নারীদের ভ্রমণের বিধিনিষেধ রহিত করে জানায় ২০১৯ সালের ২০ আগস্টের পর থেকে ২১ বছর বা তার বেশি বয়সের নারীদের স্বাধীনভাবে ভ্রমণ করার অনুমতি রয়েছে। একই বছর সৌদি আরব ট্যুরিস্ট ই-ভিসা চালু করে। বিশ্বের ৪৯টি দেশের দর্শণার্থীরা নতুন এই ভিসা ব্যবহারের সুযোগ পায়।

২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্ট বেত্রাঘাত বন্ধ করে দেয় ও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের মৃত্যুদণ্ড রহিত করে।

অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্য নেয়া পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে:
২০১৭ সালে যুবরাজের নেতৃত্বে দ্য পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড(পিআইএফ) গঠন করা হয়। একই বছর যুবরাজের নেতৃত্বে রিয়াদে দ্য মিস্ক ফাউন্ডেশন নামে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। যেখানে দেশটির সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে যোগ্য তরুণদের একত্রিত করা হয়।

২০১৮ সালে সৌদি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রণালয় ঘোষণা করে যে নারীদের নিজস্ব ব্যবসা শুরুর জন্য পুরুষ অভিভাবকদের অনুমতির প্রয়োজন নেই। এছাড়া সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেব দেশটিতে ৪০ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ করা হয়।

২০১৮ সালে মক্কা, মদিনা ও জেদ্দার মধ্যে ৪৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ দ্রুত গতির রেললাইন স্থাপন করা হয়। ভিশন ২০৩০ প্রকল্প অনুযায়ী হজ্জযাত্রীদের উন্নত সুবিধা দেয়ার লক্ষে এ প্রকল্প নেয়া হয়।

এবছরই ক্রাউন প্রিন্স সৌদি আরবের প্রথম নিউক্লিয়ার প্রজেক্ট হাতে নেয়। ১৬টি পারমাণবিক চুল্লী নির্মাণ করা হবে এই কার্যক্রমে। পরবর্তী ২৫ বছরের জন্য ৮০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে এ প্রকল্প নেয়া হয়।

২০১৯ সালে সৌদি মন্ত্রিসভা বিশেষ আকামা সুবিধা দেয়ার ঘোষণা দেয়, যার ফলে বিদেশি নাগরিকরা কোন স্পন্সর ছাড়াই দেশটিতে কাজ করা ও থাকার সুবিধা পাবে। একই বছর দেশটির শেয়ার বাজারে বিদেশিদের বিনিয়োগে বিশেষ সুবিধা গ্রহণ করে ও সৌদি আরামকো কোম্পানীর শেয়ার ছাড়লে এটি বিশ্বের এটি বিশ্বের বৃহত্তম আইপিও হিসেবে পরিণত হয়।

২০২০ সালে পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড বা পিআইএফ বোয়িং, সিটি গ্রুপ, ডিজনি এবং ফেসবুকের ৭.৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের শেয়ার কিনে নেয়।

মেগা প্রজেক্ট প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে:
ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান রিয়াদের ঠিক বাইরে কয়েক শ’ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে কিদ্দিয়া প্রকল্প ঘোষণা করেন। নতুন এই শহর বিনোদন, খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক শহর হিসেবে পরিচিত। বাদশাহ সালমান ২০১৮ সালে ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এটির উদ্বোধন করেন।

ক্রাউন প্রিন্স লোহিত সাগরের তীরে একটি মেগা পর্যটন প্রকল্প হাতে নেন যেখানে ৫০টি দ্বীপপুঞ্জকে ঘিরে হ্রদ তৈরি করা হবে। এখান থেকে বার্ষিক চার বিলিয়ান ডলার আসবে এবং ৩৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

২০১৭ সালে যুবরাজ তাবুক প্রদেশে ৫০০ বিলিয়ন ডলায় ব্যয়ে নিওম মেগা সিটি প্রকল্পের উন্মোচন করেন। বিশ্বের প্রথম স্বতন্ত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি লাভ করা এই মেগা সিটি সম্পূর্ণ বায়ু এবং সৌরশক্তিতে কাজ করবে।

যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান লোহিত সাগরের উত্তর-পশ্চিম উপকূলে আমালা নামে বিলাসবহুল রিসোর্ট প্রকল্প ঘোষণা করেছে।

ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমান মেগা-ট্যুরিজম আলুলায় প্রকল্প চালু করেছেন। এটি মাদায়েনে সালেহসহ প্রাচীন আমলের টুরিস্ট প্রকল্প। ফরাসী স্থপতি স্থপতি জিন নওভেলের ডিজাইন করা শরন প্রাকৃতিক সংরক্ষণাগার ও রিসোর্ট রয়েছে।

শিল্প, সংস্কৃতি এবং বিনোদনমূলক সংস্কারের জন্য নেয়া পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে:
২০১৮ সালে ৩৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে রিয়াদে প্রথম বাণিজ্যিক সিনেমা চালু হয়। যেখানে “ব্ল্যাক প্যান্থার” সিনেমা মুক্তি পায়। একই বছর সৌদি আরব প্রথমবারের মতো কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে অংশ নেয়।

২০১৮ সালেই সৌদি আরব প্রথমবারের মতো ভেনিস আর্কিটেকচার বিয়েনলে অংশ নেয়। এবছর রিয়াদের ফর্মুলা রেসে প্রথম আন্তর্জাতিক পারফর্মারদের মধ্যে এনরিক ইগলেসিয়াস, আমর দিয়াব এবং ব্ল্যাক আইড পিস অংশ নেয়, যাদের জন্য প্রথম পরীক্ষামূলক টুরিস্ট ভিসা মঞ্জুর করা হয়ে।

সৌদি আরবে প্রথম শীতকালীন ট্যান্টোরা ফেস্টিভ্যালে শুরু হয়। আন্তর্জাতিক অভিনেতা এবং বিশ্বের দর্শণার্থীদের আলুলায় নিয়ে আসা হয়।

২০১৯ সাল থেকে সৌদি আরব জুড়ে গানের উৎসব শুরু হয়। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানে পিটবুল এবং আকনের মতো আন্তর্জাতিক তারকারা সঙ্গীত পরিবেশনা করেন।

একই বছর দেশটির সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রিন্স বদর বিন ফারহান আল সৌদের নেতৃত্বে ১১টি সাংস্কৃতিক সংস্থা প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়।

২০১৯ সালেই সৌদি আরব আট বছরের পর ভেনিস বিয়েনলে যোগ দেয়।

২০২০ সালে ডেজার্ট এক্স আলুলার প্রথম সংস্করণে সৌদি আরব থেকে শিল্পীদের ১৪টি বড় আকারের ভাস্কর্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা হাতে নেয়। যেখানে সৌদি আরব, মধ্যপ্রাচ্য ও আমেরিকার শিল্পীরা অংশগ্রহণ করে।

খেলাধুলার জন্য নেয়া পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে:
২০১৭ সালে ভিশন ২০৩০-এর অন্যতম লক্ষ্য অনুসারে একটি ডিক্রি জারি করে স্কুলে মেয়েদের শারীরিক শিক্ষা কার্যক্রমকে অনুমোদন করে- যাতে আরো বেশি নাগরিক খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে পারে।

২০১৮ সালে জেদ্দায় আল-আহলি বনাম আল-বাটিন খেলায় প্রথমবারের মতো সৌদি নারীদের মাঠে বসে খেলা দেখার অনুমতি দেওয়া হয়। একই বছর ডাব্লুডব্লিউই এর রয়েল রাম্বল জেদ্দার কিং আবদুল্লাহ স্পোর্টস সিটিতে অনুষ্ঠিত হয়।

এ বছরই বিশ্বের বৃহত্তম ক্রাউন প্রিন্স ক্যামেল ফেস্টিভাল তাইফে যাত্রা শুরু করে। এছাড়া ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান আদ দিরিয়ায় প্রথম ফর্মুলা ই-প্রিক্স রেসে অংশ নেন।

২০১৯ সালে জেদ্দায় ইতালিয়ান সুপার কাপের জুভেন্টাস এবং এসি মিলানের ম্যধকার খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

এবছরই রিয়াদের দিরিয়া স্টেডিয়ামে অ্যান্টনি জোশুয়া ও অ্যান্ডি রুইজ জুনিয়রের মধ্যকার লড়াই দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম হেভিওয়েট বক্সিং ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।

২০২০ সালে সৌদি আরব ডাকার র‌্যালির আয়োজন করে। প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমিতে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

মুহাম্মদ বিন সালমানের বিদেশ ভ্রমণ:
২০১৮ সালে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান যুক্তরাজ্যে সফর শুরু করেন। এসময় রানী এলিজাবেথ দ্বিতীয়, প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে এবং ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপের সাথে সাক্ষাত করেন।

এবছরই যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক শহর সফরে ক্রাউন প্রিন্স মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাত করেন। পাশাপাশি মাইক্রোসফ্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এবং গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিনসহ একাধিক ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাত করেছেন।

২০১৮ সালে ফ্রান্স সফরকালে সৌদি আরবের আলুলাকে একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন ক্রাউন প্রিন্স।

ক্রাউন প্রিন্স ২০১৮ সালের বুয়েনস আয়ার্সে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে সৌদি আরবের প্রতিনিধিত্ব করেন।

২০১৯ সালে ক্রউন প্রিন্স পাকিস্তান, ভারত এবং চীন সফরের মধ্য দিয়ে এশিয়ার বেশ কয়েকটি শহর সফর করেন।

একই বছর দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে সফর করেন। এসময় জ্বালানি, গাড়ি, পর্যটন এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত চুক্তিগুলো তদারকি করেন।

২০১৯ সালে ওসাকা জি-২০ সম্মেলনে সৌদি আরবের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। ২০২০ সালের জি-২০ রিয়াদ শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

সূত্র : আরব নিউজ ও বিজনেস ইনসাইডার