প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ সৌদির সঙ্গে মিল রেখে কয়েক জেলায় ঈদ উদযাপন

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে কয়েক জেলায় ঈদ উদযাপন

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম :

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দেশের বিভিন্ন জেলায় আজ রোববার (২৪ মে) উদযাপন করা হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর।

দিনাজপুর, চাঁদপুর, ফরিদপুর, শরীয়তপুরসহ বিভিন্ন স্থানে  ঈদের নামাজ আদায় করেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। 

চাঁদপুর :

বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় চাঁদপুরের ৫ উপজেলার ৪০টি গ্রামে আজ রোববার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে দীর্ঘ ৯২ বছর যাবত এসব গ্রামে আগাম রোজা শুরু ও ঈদ পালিত হয়ে আসছে। চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, মতলব উত্তর, শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলার ৪০টি গ্রামের অর্ধ লক্ষাধিক মুসলমান সৌদির সঙ্গে মিল রেখে আগাম রোজা ও ঈদ পালন করেন।
    
হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা হামিদীয়া ফাজিল মাদরাসায় সকাল পৌঁনে ১০টায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের নামাজে ইমামতি করেন সাদ্রা দরবার শরীফের পীর  মাওলানা আরিফ চৌধুরী। এরপর ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ফরিদগঞ্জের টোরা মুন্সিরহাট জামে মসজিদের প্রধান মাওলানা আকরাম হোসেন জানান, দীর্ঘ ৯২ বছর যাবত এই দরবার শরীফের প্রথম পীর মাওলানা ইসহাক (রা.) এই দেশে চন্দ্রমাস হিসেব করে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র রোজা পালন এবং সেই হিসেবে দুটি ঈদ উদযাপন করেন।

এরপর তার অনুসারীরা এই ধারাবাহিকতা মেনে চলেছেন।চাঁদপুরে যেসব গ্রামে আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে, সে সব গ্রামগুলো হচ্ছে- হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলিপুর, বেলচো, জাঁকনি, প্রতাপপুর, বলাখাল, মনিহার, গোবিন্দপুর ও দক্ষিণ বলাখাল। ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর, কামতা, সেনাগাঁও, বাসারা উভারামপুর, উটতলী,মুন্সিরহাট, মূলপাড়া, গল্লাক, আইটপাড়া, বদরপুর, ভুলাচোঁ, সোনাচোঁ, পাইকপাড়া, সুরঙ্গচাইল, বালিথুবা, কাইতাড়া, নুরপুর, শাচনমেঘ, শোল্লা, হাঁসা ও চরদুখিয়া। পাঁচআনী কচুয়া উপজেলার উজানি গ্রাম ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার দশআনী, মোহনপুর গ্রামে। শাহরাস্তি উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের অংশ বিশেষ।

দিনাজপুর :

সৌদি আরবের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দিনাজপুরের সদর, চিরিরবন্দর,পার্বতীপুর, কাহারোল এবং বিরল উপজেলার কিছু এলাকায় আজ রোববার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে প্রায় ২ হাজার পরিবার। এসব পরিবারের মুসল্লিরা বিভিন্ন স্থানে ঈদের নামাজ আদায় করেছে। রোববার (২৪ মে) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দিনাজপুর শহরের বাসুনিয়াপট্টিতে একটি কমিউনিটি সেন্টারে (পার্টি সেন্টার) অনুষ্ঠিত ঈদের জামায়াতে প্রায় ৪শ’ মুসল্লি অংশ নেন। এখানে ইমামতি করেন মাওলানা সাইফুল রহমান। 
এছাড়াও জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার সাইতাড়া, কাহারোল উপজেলার জয়নন্দ ও গড়েয়া, বিরল উপজেলার বালান্দোর এবং পার্বতীপুর উপজেলায় আজ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়া বিরামপুর উপজেলার দুটি গ্রামের মানুষ ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন। রোববার সকালে দুই গ্রামের মানুষ মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন।সকাল পৌনে আটটায় উপজেলার বিনাইল ইউনিয়নের আয়ড়া বাজার জামে মসজিদে মাওলানা ইলিয়াস আলী এবং সকাল আটটায় জোতবানী ইউনিয়নের খয়েরবাড়ি-মির্জাপুর জামে মসজিদে মাওলানা দেলোয়ার হোসেন কাজী দুটি জামাতের ইমামতি করেন।

খয়েরবাড়ি-মির্জাপুর জামে মসজিদে ঈদের জামাতের ইমাম মাওলানা দেলোয়ার হোসেন কাজী জানান, ২০১৩ সাল থেকেই আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদের নামাজ আদায় করছি। বিগত বছরের তুলনায় এবারের জামাতে মুসল্লির উপস্থিতি বেশি হয়েছে।বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মনির জানান, সৌদির সঙ্গে মিল রেখে আজ বিরামপুর উপজেলার দুটি গ্রামের মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজ আদায়কে কেন্দ্র করে সেখানে যাতে কোনও ধরণের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেজন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

পটুয়াখালী :

পটুয়াখালীর ২৮ গ্রামের ২৫ হাজার মানুষ আজ আগাম ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন। বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশের সঙ্গে সংগতি রেখে পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর ও ছোট বিঘাই, গলাচিপা উপজেলার সেনের হাওলা, পশুরিবুনিয়া, নিজ হাওলা ও কানকুনি পাড়া, বাউফল উপজেলার মদনপুরা, শাপলাখালী, রাজনগর, বগা, ধাউরাভাঙ্গা, সুরদী, চন্দ্রপাড়া, দ্বি-পাশা, কনকদিয়া সাবুপুরা, বামনিকাঠী, বানাজোড়া ও আমিরাবাদ এবং কলাপাড়া উপজেলার দক্ষিণ দেবপুর, পাটুয়া, মরিচবুনিয়া, নাইয়া পট্টি, নিশানবাড়িয়া, শাফাখালী, তেগাছিয়া, ছোনখোলা ও বাদুরতলী গ্রামের এসব মানুষ ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন। 

এসব গ্রামের মধ্যে ঈদের প্রধান নামাজ অনুষ্ঠিত হয় বদরপুর দরবার শরীফের মসজিদে। সকাল সাড়ে ৯টায় অনুষ্ঠেয় নামাজে ইমামতি করেন মসজিদের খতিব মাওলানা মো. শফিকুল ইসলাম আবদুল গনি।  বদরপুর দরবার শরীফের খতিব মাওলানা মো. শফিকুল ইসলাম আবদুল গনি জানান,  বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশের সঙ্গে সংগতি রেখে ৯২ বছর ধরে তারা রোজা রাখেন এবং ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপন করে থাকেন। 

বরিশাল :

আজ বরিশালের ৬টি উপজেলার কিছু গ্রামে আগাম পবিত্র ঈদ-উল ফিতর পালিত হয়েছে। বরিশালের কিছু গ্রামে বসবাসরত চট্টগ্রামের চন্দনাইশ শাহসুফি দরবার শরিফ, সাতকানিয়া মির্জাখালী দরবার শরিফ এবং আহমাদিয়া জামাত অনুসারীরা দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করে আসছেন।আজ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের প্রায় ২ হাজার অনুসারীসহ জেলার হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ, মুলাদী, বাকেরগঞ্জের সুন্দরকাঠী, মহানগরীসহ সদর উপজেলার প্রায় ৫ হাজার অনুসারী প্রতি বছরের ন্যায় এবারও একদিন আগে ঈদ উদযাপন করেছে।বরিশাল নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তাজকাঠি, জিয়া সড়ক, টিয়াখালী, সিকদার বাড়িসহ সদর উপজেলার সাহেবের হাট এলাকায় সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

নগরীর ২৩ নং ওয়ার্ডের তাজকাঠি এলাকার হাজি বাড়ি জামে মসজিদের সভাপতি আমীর হোসেন মিঠু বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শরীয়তপুর :

শরীয়তপুরে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সাথে মিল রেখে আজ ঈদুল ফিতর পালন করছেন সুরেশ্বর দরবার শরীফের ভক্ত-অনুসারী ৩২টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ। শরীয়তপুরের নড়িয়া, ডামুড্ডা, ভেদরগঞ্জ ও সখিপুর থানার ৩২টি গ্রামের ১০ পরিবার ঈদ উদযাপন করেছেন।ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর দরবার শরীফে দুইটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। একটি সকাল ৯টায় ও অপরটি সকাল সাড়ে নয়টায় অনুষ্ঠিত হয়।  প্রথম জামাতে ইমামতি করেন সুরেশ্বর দরবার শরীফের গদিনশীন পীর শাহ সুফি হযরত বেলাল নূরী।

বরগুনা :

সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে বরগুনায় ‘কাদেরিয়া চিশতিয়া তরিকার’ অনুসারী ১৫ টি গ্রামের ২ শতাধিক পরিবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে। জেলার বেতাগী উপজেলায় ১৩০টি, আমতলী উপজেলায় ৬০টি এবং বরগুনা ও পাথরঘাটায় ১০টি পরিবারের রোববার ঈদ উদযাপন করার খবর পাওয়া গেছে।