প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ ‘সীমিতভাবে’ ছাড়া হচ্ছে ঈদে বাসের অগ্রিম টিকেট

‘সীমিতভাবে’ ছাড়া হচ্ছে ঈদে বাসের অগ্রিম টিকেট

ঈদুল আজহা উপলক্ষে গতকাল থেকেই বাসের অগ্রিম টিকেট বিক্রির সময় নির্ধারিত থাকলেও আজ বাস চলাচল শুরুর পর একেবারে সীমিতভাবে দু-একটি বাস কোম্পানিতে তা শুরু হয়েছে। অধিকাংশ বাস কোম্পানি এখনো অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু করেনি।

গতকাল রোববার থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রির কথা থাকলেও পরিবহন মালিকদের অঘোষিত ধর্মঘটের কারণে বাস বন্ধ থাকায় তা হয়নি। আজ সোমবার সকাল থেকে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। রাজধানীর গাবতলী ও কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ডে দেখা গেছে শ্যামলী পরিবহন ও এনা পরিবহন শুধু তাদের কাউন্টার থেকে ঈদের অগ্রিম টিকেট বিক্রি করছে।

সকালে রাজধানীর কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, এনা ও শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন। এখান থেকে মূলত উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের বাসগুলো ছেড়ে যায়। সকালের বৃষ্টি উপেক্ষা করেই মানুষ এসেছেন বাসের টিকেট কাটতে। এখান থেকে আজ দূরপাল্লার বাসগুলোও ছেড়ে যাচ্ছে।

ঈদের অগ্রিম টিকেটের ব্যাপারে কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ডের শ্যামলী পরিবহনের এক কর্মকর্তারা বলেন, ‘গতকাল থেকেই ঈদের অগ্রিম টিকেট বিক্রি করার কথা ছিল। কিন্তু বাস চলাচল বন্ধ থাকায় গতকাল কোনো টিকেট বিক্রি হয়নি। মালিক সমিতি তো আগে থেকেই সময় দিয়ে রেখেছে। আজ গাড়ি ছাড়ার অনুমতি দিয়েছে। তো এটা আমাদের মধ্যেই আছে। আমরা সেই অনুসারে সবার সঙ্গে কথা বলে টিকেট ছেড়ে দিয়েছি।’

আজ একদিন পর থেকে টিকেট দেওয়া হচ্ছে। যতক্ষণ টিকেট থাকবে, ততক্ষণ টিকেট দেবেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।

যাত্রীরা জানান, তাঁরা অনিশ্চয়তায় ছিলেন টিকেট দেবে কি না। দু-একটি কাউন্টার থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি হচ্ছে। যত যাত্রী আছে, সবাই টিকেট পাবেন বলেই তাঁদের ধারণা।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২২ আগস্ট ঈদ হতে পারে। এটা ধরে নিয়েই এক সপ্তাহ আগে থেকেই ঈদের টিকেট বিক্রির কথা জানায় বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সেই হিসেবে ১৫ আগস্ট থেকে ঈদযাত্রা ধরে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ঈদের টিকেট বিক্রি শুরুর ঘোষণা দেন বাস মালিকরা।

গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলার বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ ছাড়া আহত হয় বেশ কয়েকজন। নিহত শিক্ষার্থীরা হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে এরই মধ্যে ২০ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছেন। নৌমন্ত্রী শাজাহান খানও নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীরা। রাজধানীসহ সারা দেশে নিরাপদ সড়কের দাবিতে তারা রাস্তায় নেমে আসে। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন যানবাহনের লাইসেন্স পরীক্ষা করতে শুরু করে। কিছু কিছু জায়গায় গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরই পরিপ্রেক্ষিতেই নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে রাজধানীসহ দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন মালিকরা। এতে করে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ একপ্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নয়টি দাবি করেছে। তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এখন তাদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার উচিত বলে জানান তিনি।