প্রচ্ছদ সারাদেশ সিলেটে নিজ উদ্যোগে পাড়া-মহল্লা ‘লকডাউন’

সিলেটে নিজ উদ্যোগে পাড়া-মহল্লা ‘লকডাউন’

সিলেটে পাড়া-মহল্লাবাসীর উদ্যোগে নিজ নিজ এলাকায় লকডাউন করা হচ্ছে। খুব জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কিংবা কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এই লক ডাউনে আপাতত স্বস্তি মিলছে পাড়া ও মহল্লাগুলোতে। একই সঙ্গে পাড়ায় ও মহল্লাহ বিনা কারনে আড্ডা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

সিলেট নগরীর ৪ নং ওয়ার্ডের হাউজিং এস্টেট এলাকায় মিলেছে করোনা রোগি। এ কারনে সোমবার সকাল থেকে নিজ উদ্যোগে হাউজিং এস্টেট এলাকা লকডাউন করেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর ও এলাকার মানুষ।

এরপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাউজিং এস্টেট এলাকাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এ ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদি মানবজমিনকে জানিয়েছেন- ‘এলাকার মানুষ সচেতন। এ কারনে তারা আমাকে সঙ্গে নিয়ে আগে থেকেই লকডাউন করেছেন।’ তিনি বলেন- ‘খুব প্রয়োজন ছাড়া এলাকার কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না, কিংবা ভেতরে ঢুকছেন না।’

দুই দিন আগেই মহল্লাবাসীর উদ্যোগে লকডাউন করা হয় সিলেট নগরীর লামাবাজারের মনিপুরী পাড়া। এ পাড়ার দুটি প্রবেশমুখের ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে কেউ কেউ জরুরী প্রয়োজনে বের হতে পারলেও ভেতরে ঢুকতে পারছেন না কেউ। পাড়ার গেটের এক পাশে লাল কালিতে লেখা রয়েছে- ‘বহিরাগত প্রবেশ নিষেধ, ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন, লকডাউন’। গেটের অন্য পাশে লিখা রয়েছে ‘প্রবেশ নিষেধ, লকডাউন’। এই পাড়ার বাসিন্দারা জানান- দিন দিন দেশে করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারের একার পক্ষে এই করোনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় যদি না দেশের মানুষ সচেতন হন। নিজের সুরক্ষায় ও এ পাড়ার বাসিন্দাদের করোনার হাত থেকে বাঁচাতে নিজেরাই সচেতন হয়ে এই উদ্যোগ নিয়েছি আমরা।

নগরীর ১১ নং ওয়ার্ডে লালদিঘীর পাড় মণিপুরি পাড়ায় বাসিন্দারা একই ভাবে লকডাউন করেছেন। বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি অস্থায়ী গেট। সেই গেটে কালো কালি দিয়ে লেখা সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখা রয়েছে। সেখানে বড় করে লেখা রয়েছে ‘লকডাউন’। তারপরও যদি জরুরী প্রয়োজনে কেউ আসেন তাকে পাড়ার ভিতরে প্রবেশ করতে হয় সাবান পানি দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজারের মাধ্যমে হাতকে ভালো করে পরিষ্কার করে। পুরো শরীরে জীবাণুনাশক স্প্রে করার মাধ্যমে অনুমতি মেলে ভিতরে প্রবেশে। এলাকার বাসিন্দা বিমল সিং জানিয়েছেন- ঝুঁকি এড়াতে সচেতন এলাকাবাসী এ উদ্যোগ নিয়েছেন।

নগরীর ৪ নং ওয়ার্ডের আম্বরখানা এলাকার মণিপুরি পাড়ায়। ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাসহ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ পাড়ার বাইরে যেতে পারছেন। এখানে ২৪ ঘণ্টাই পাড়ায় প্রবেশের মূল ফটকটি বন্ধ রাখা হয় এবং ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে সতর্কবার্তা।

এভাবে নিজেদের পাড়া লকডাউন করা হয়েছে নগরীর শিবগঞ্জ মণিপুরি পাড়া, সুবিদ বাজারের লন্ডনী রোড, আম্বরখানা বড় বাজার মণিপুরি পাড়া, করেরপাড়া, নয়াসড়কের মিশন গল্লি বাগবাড়ি, শেখঘাট, উপশহর, টিলাগড়, শিবগঞ্জ, মদিনামার্কেট, শাহী ঈদগাহ সহ বিভিন্ন এলাকায়। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন- সিলেট নগরীর বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় ইতিমধ্যে অর্ধলাখ মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরন করা হয়েছে। আরো বিতরন করা হচ্ছে। নগরের মানুষ ঘরে বসে খাবার পাওয়ার পরপর নিজেরা উদ্যোগী হয়ে সতর্ক হয়ে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা লকডাউন করছেন। এটা ইতিবাচক দিক। সিটি করপোরেশন ঘরবন্দি মানুষের ঘরে আছে।