বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বড় একটা দুঃসংবাদ দিতে যাচ্ছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। দেশের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসান আইসিসির ১৮ মাসের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে যাচ্ছেন।
দুই বছর আগে একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগে এক ক্রিকেট জুয়াড়ির (বুকি) কাছ থেকে অনৈতিক প্রস্তাব পেয়েছিলেন সাকিব। সেটি তৎক্ষণাৎ প্রত্যাখ্যান করলেও আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগকে না জানিয়ে গোপন করেন তিনি। যে কারণে এ শাস্তি হতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার গণভবনে আজারবাইজান সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সাকিব ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব গোপন করে একটা ভুল করেছে। এবিষয়ে সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ আইসিসির। আর আইসিসির সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমাদের খুব বেশি কিছু করার থাকে না। তবে বিসিবি ইতোমধ্যে জানিয়েছে, তারা সাকিবের পাশে থাকবে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ক্রিকেটারদের ধর্মঘট নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি হঠাৎ করে কোনো কিছু না জানিয়ে ক্রিকেটারদের আন্দোলনের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ধর্মঘট করতে গেলে একটা সময় দেয়, দাবি-দাওয়া জানায়, তারপর ধর্মঘট করে। আমার জীবনে আমি কখনো এভাবে ধর্মঘট করে দেখিনি। যাই হোক, সমস্যাটা মিটে গেছে।
ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া লোকমান হোসেন ভূঁইয়া এখনও কী করে বিসিবির পরিচালক পদে আছেন, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি (লোকমান) যে বহাল তবিয়তে আছেন একথা আপনারা কিভাবে বলেন? তিনি সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, দেশে এত ক্যাসেনা হলো কিন্তু কোনো পত্রিকাতো ক্যাসিনোর একটা খবরও প্রকাশ করল না। যা করার তা আমিই করেছি। আপনারা কেন করতে পারলেন না। কোনো পত্রিকা একটা রিপোর্টও প্রকাশ করেনি কেন?
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে সদ্য সমাপ্ত ১৮তম জোট নিরপেক্ষ সম্মেলন (ন্যাম) নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন শুরু হয় মঙ্গলবার বিকেল ৪টায়।
১২০টি উন্নয়নশীল দেশের ন্যাম সম্মেলনে যোগ দিতে ২৪ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত আজারবাইজান সফর করেন প্রধানমন্ত্রী। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুর বাকু ‘কংগ্রেস সেন্টার’-এ ২৫ ও ২৬ অক্টোবর দুই দিনব্যাপী এ ন্যাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
অন্য সদস্য দেশগুলোর সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানদের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী ন্যাম সম্মেলনে যোগ দেন। পরে প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রের লাঞ্চন হলে পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে প্রতিনিধিদলের প্রধানদের জন্য দেয়া ওয়ার্কিং লাঞ্চন-এ যোগ দেন।
ন্যাম সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিইয়েভ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি, আলজেরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট আবদেলকাদের বেনসালাহ্ ও ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকীসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকালীন আবাসস্থল হোটেল হিলটন বাকুতে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তার সফরকালে বাংলাদেশ ও আজারবাইজানের মধ্যে একটি সাংস্কৃতিক বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আজারবাইজান প্রেসিডেন্ট ইলহাম এলিয়েভের উপস্থিতিতে চুক্তিটি স্বাক্ষর হয়।