প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ সব ধরনের গণপরিবহন চালুর প্রস্তুতি

সব ধরনের গণপরিবহন চালুর প্রস্তুতি

বিডি রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর ডটকম :

ধীরে ধীরে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়লেও শিথিল করা হচ্ছে বিধিনিষেধ। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সীমিত পরিসরে পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে।

দোকান’পাট-শপিং মল খুলছে ১০ মে। তারই ধারাবাহিকতায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও চালু করার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এজন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে কারিগরি নির্দেশনাও তৈরি করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় গত ২৮ মার্চ দেশের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহযোগিতার জন্য ৮ জন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞকে দায়িত্ব দিয়েছে। তাদের দেশের বিভিন্ন বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গৃহীত কার্যক্রম পর্যা’লোচনা ও সেবা বৃদ্ধি এবং কার্যকর করার লক্ষ্যে পরামর্শ দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে প্রস্তুতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে সমন্বয় করতেও তাদের বলা হয়। এরই মধ্যে কমিটি বেশ কিছু কারি’গরি নির্দে’শনা তৈরি করেছে।

রেলপথে যাত্রী পরিবহন :

রেল’পথে যাত্রী পরিবহনের জন্য যেসব নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো হচ্ছে: স্টেশনগুলাতে ব্যক্তিগত সু’রক্ষা স’রঞ্জাম সংরক্ষণ, জরুরি পরিকল্পনা প্রণয়ন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্র স্থাপন, প্রতিটি ইউনিটের জবাব’দিহি নিশ্চি’তকরণ এবং কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। কর্মীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক অবস্থা নথিভুক্ত করা। অসুস্থতা অনুভব”কারীদের সঠিক সময়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া। তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণের সরঞ্জাম স্টেশনগুলোর প্রবেশপথে স্থাপন করা। স্টেশনে আগত সবার তাপমাত্রা পরীক্ষা করা। যেসব যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা ৩৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকবে তাদের ওই এলাকায় অস্থায়ী কোয়ারেন্টিনে রাখা এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিতে হবে।

বায়ু চলাচল বৃদ্ধি, সেন্ট্রাল এয়ারকন্ডিশনার ব্যবহারের ক্ষেত্র স্বাভাবিক মাত্রায় চালানো এবং বিশুদ্ধ বাতাস চলাচল বৃদ্ধি করা। সব এয়ার সিস্টেমের ফিরতি বাতাস বন্ধ রাখতে হবে। জনসাধারণের ব্যবহারের স্থানগুলো জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। টয়লেটগুলোতে তরল সাবান থাকতে হবে। সম্ভব হলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং হাত জীবাণুনাশক যন্ত্র স্থাপন করা যেতে পারে। যাত্রীদের অপেক্ষা করার জন্য ট্রেন কম্পার্টমেন্ট ও অন্যান্য এলাকা যথাযথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

ট্রেনটিকে জীবাণুমুক্ত করতে হবে এবং সিট কভারগুলোকে প্রতিনিয়ত ধোয়া, পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করতে হবে। প্রতিটি ট্রেনে হাতে-ধরা থার্মোমিটার থাকতে হবে। যথাযথ স্থানে একটি জরুরি এলাকা স্থাপন করতে হবে। যেখানে সন্দেহজনক উপসর্গ আছে এমন যাত্রী’দের অস্থায়ী কোয়ারেন্টিনে রাখা যাবে।

যাত্রী’দের অনলাইনে টিকিট ক্রয় করার জন্য পরামর্শ দিতে হবে। সারিবদ্ধভাবে উঠানামার সময়ে যাত্রীদের পরস্পর থেকে এক মিটারেরও বেশি দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। যাত্রী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষার ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে। মাস্ক পরতে হবে এবং হাতের পরিষ্কার পরি’চ্ছন্নতার দিকে নজর রাখতে হবে। হাঁচি দেওয়ার সময় মুখ এবং নাক টিস্যু বা কনুই দিয়ে ঢেকে নিতে হবে।

পোস্টার ও ই’লেকট্রনিক স্ক্রিনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য জ্ঞান পরিবেশন জোরদার করতে হবে। মাঝারি ও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা দিয়ে যাতায়াত করা ট্রেনে টিকিটের মাধ্যমে যাত্রী সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও যথাসম্ভব যাত্রীদের আলাদা বসার ব্যবস্থা করতে হবে। যদি করোনা রোগী পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে টার্মিনালগুলোকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের গাইডলাইন অনুযায়ী জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

সড়ক পথে যাত্রী পরিবহন
যাত্রীবাহী পরিবহন স্টেশনে জন্য জরুরি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। নিরাপত্তা এবং জীবাণুমুক্তকরণ পদ্ধতি মানসম্মত করতে হবে। সব কর্মকর্তা-কর্মচা’রীর করোনা নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে। মাস্ক, গ্লাভস ও জীবাণুনাশক মজুত থাকতে হবে। কর্মীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক অবস্থা নথিভুক্ত করতে হবে। যারা অসুস্থতা অনুভব করবে তাদের সঠিক সময়ে চি’কিৎসা দিতে হবে।

বাস স্টেশনে আগত যাত্রী’দের তাপমাত্রা মাপার জন্য স্টেশনে ইনফ্রারেড থার্মোমিটার রাখতে হবে। যথাযথ শর্তাবলি মেনে একটি জরুরি এলাকা চিহ্নিত করতে হবে। যেসব যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা ৩৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকবে তাদের ওই জরুরি এলাকায় অস্থায়ী কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে এবং প্রয়োজন মতো চিকিৎসা সেবা দিতে হবে।

বায়ু চলাচল পদ্ধতি যেন স্বাভাবিক থাকে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যথাযথ তাপমাত্রায় বায়ু চলাচ’লের জন্য বাসে’র জা’নালা খুলে দিতে হবে। চলাচ’লের স্থানগুলো পরিষ্কার এবং জী’বাণু’মুক্ত রাখতে হবে। টয়লেটগুলোতে তরল সাবান থা’কতে হবে। সম্ভব হলে হ্যান্ড স্যানি’টাই’জার এবং হাত জীবা’ণুনাশক যন্ত্র স্থাপন করা যেতে পারে। যাত্রীদের অপেক্ষা করার স্থান, বাস কম্পার্টমেন্ট ও অন্যান্য এলাকা পরি’চ্ছন্ন রাখতে হবে।

প্রতি’বার বাস ছেড়ে যাও’য়ার আগে সিট এবং বাসের মেঝে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। জ’নগণের জন্য ব্যবহার্য জিনিসপত্রগুলো পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করতে হবে। সিট কভা’রগু’লোকে প্রতিনিয়ত ধোয়া, পরিষ্কার এবং ‘জীবাণুমু’ক্ত করতে হবে। যাত্রীদের অপেক্ষা করার স্থানে মাস্ক, গ্লাভস ও জীবা’ণুমুক্ত’করণ দ্রব্যাদি’র পর্যাপ্ত মজুত থাকতে হবে। সব বাসে হাতে-ধরা থার্মোমিটার থাকতে হবে। যথাযথ স্থানে একটি জরুরি এলাকা স্থাপন কর’তে হবে। যেখানে স’ন্দেহ’জনক উপসর্গ আছে এমন যা’ত্রীদের অস্থায়ী কো’য়ারে’ন্টিনে রাখা যাবে। যাত্রী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী’দের ব্যক্তিগত সুর’ক্ষার ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে।

যাত্রীদের অন’লাই’নে টিকিট কেনার পরা’মর্শ দিতে হবে। সা’রিব’দ্ধভাবে ওঠা এবং নেমে যাওয়া’র সময়ে যাত্রী’দের পরস্পর থেকে এক মি’টারেরও বেশি দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। যা’ত্রীদের স্বাস্থ্য সচেতন করার জন্য রেডিও, ভিডিও ও পোস্টা’রের মাধ্যমে সচে’তনতামূ’লক বক্তব্য প্রদান করতে হবে।

নৌপথে যাত্রী পরিবহন
নৌপথে যাত্রী’বাহী পরিবহন স্টেশ’নে জরুরি পরিকল্পনা তৈরি কর’তে হবে। নিরাপত্তা এবং জীবা’ণুমুক্ত’করণ পদ্ধতি মানসম্মত করতে হবে। সব ক’র্মকর্তা-কর্মচা’রীর করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্র’ণ সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে। মাস্ক, গ্লাভস ও জী’বাণমুক্তক’রণ দ্রব্যাদির পর্যাপ্ত মজুত থাকতে হবে।

কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা স্থাপন করতে হবে এবং তাদের স্বাস্থ্য অবস্থা প্রতিদিন রেজিস্ট্রি করতে হবে। যারা অসুস্থতা অনুভব করবেন তাদের যথাসময়ে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। স্টে’শনে আগত এবং যাওয়া যাত্রী’দের তাপমাত্রা মাপার জন্য ফেরি বা টার্মিনা’লে তাপমাত্রা নির্ধার’ক যন্ত্র স্থাপন করতে হবে বা ইনফ্রারেড থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা পরিমা’পের ব্যবস্থা রাখতে হবে। যথাযথ শর্তাবলি মেনে ফেরি টার্মিনালে একটি জরুরি এলাকা থাকতে হবে। যেসব যা’ত্রীর শরীরের তাপমা’ত্রা ৩৭.৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থা’কবে তাদের ওই জরুরি এলা’কায় অস্থায়ী কো’য়া’রেন্টিনে রাখতে হবে এবং প্রয়োজন মতো চিকিৎসা দিতে হবে।

বায়ু নির্গ’মন পদ্ধতি যেন স্বাভাবিক থাকে তা নি’য়ন্ত্রণ করতে হবে। নৌ-চলা’চলের সময়ে সর্বোচ্চ বায়ু চলাচল করতে দিতে হবে। যথাযথ তাপ’মাত্রায় বায়ু চলাচলের জন্য কেবিনের জানালা খুলে রাখতে হবে। ফেরি বা টার্মিনা’লগুলোকে পরিষ্কার এবং জীবা’ণুমুক্ত রাখতে হবে। টয়লে’টগু’লোতে তরল সাবান থাকতে হবে। সম্ভব হলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং হাত জী’বাণুনাশক যন্ত্র স্থাপ’ন করতে হবে।

ফেরি টার্মিনাল এবং নৌযানগু’লোকে তাদের পরিবেশ পরিষ্কার পরি’চ্ছন্ন রাখতে হবে। আবর্জনা যথা’সময়ে সরিয়ে ফেলতে হবে এবং জনগণের জন্য ব্যবহার্য এবং জনসাধারণের চলাচলের স্থানসমূহ পরিষ্কার করতে হবে এবং প্রতিনিয়ত জী’বাণুনা’শক দিতে হবে।

প্রতিবার নৌযান ছেড়ে যাওয়ার আগে কেবিন এবং ব্রিজের তল পরি’ষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। ব্যবহারে’র জিনিসপত্র প্রতি’নিয়ত পরি’ষ্কার এবং জীবাণু’মুক্ত’ করতে হবে। সিট কাভারগুলোকে প্রতিনিয়ত ধোয়া, পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করতে হবে। যাত্রী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী’দের ব্যক্তিগত সুরক্ষার ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে। মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং হাতের পরিষ্কার পরিচ্ছ’ন্নতার দিকে নজর রাখতে হবে।

যাত্রীদের অন’লাইনে টিকিট ক্রয় করার জন্য পরামর্শ দিতে হবে। সারিবদ্ধ’ভাবে ওঠানামার সময় এক মিটা’রেরও বেশি দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপা’শি ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। ফেরি টার্মিনা’ল ও নৌযা’নে যাত্রীদের স্বাস্থ্য সচেতন করা’র জন্য সচেতনতামূলক বক্তব্য প্রচার করতে হবে।

যুক্তিসঙ্গতভাবে পরিবহনের ধারণক্ষমতা সীমিত করতে হবে এবং সীমিত আকারে টিকিট বিক্রয়ের মাধ্যমে যাত্রীদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যেসব নৌযান মাঝারি ও উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন এলাকা থেকে ছেড়ে যাবে অথবা পৌঁছাবে অথবা ওই এলাকা দিয়ে যাবে সেসব ক্ষেত্রে যাত্রীদের আলাদা সিটে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে বসতে হবে। যদি করোনা রোগী পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে টার্মিনালগুলোকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের গাইডলাইন অনুযায়ী জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাংলাদেশের জন্য এই কারিগরি নির্দেশনাটি প্রণয়ন করা হয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা কেন্দ্র এবং ব্যক্তিপর্যায়ে কারিগরি নির্দেশনাগুলো পালন করতে হবে। এছাড়া সরকার কর্তৃক সময়ে সময়ে ঘোষিত কঠোর, মধ্যম বা স্বল্পমাত্রার পদক্ষেপগুলোও যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে।