প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ সদরঘাট থেকে ছাড়ছে লঞ্চ

সদরঘাট থেকে ছাড়ছে লঞ্চ

নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারীদের সারাদেশে চলমান কর্মবিরতির মধ্যেই সদরঘাট থেকে ছাড়ছে লঞ্চ। সকাল থেকে বেশকিছু লঞ্চ ছাড়লেও এখন পর্যন্ত দূরপাল্লার কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি।

ঢাকা নদীবন্দর (সদর ঘাট) যুগ্ম-পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক) মো. আলমগীর কবীর শনিবার দুপুরে জাগো নিউজকে বলেন, সকাল থেকে ১২টি লঞ্চ সদরঘাট ছেড়ে গেছে। এরমধ্যে কিছু কিছু লঞ্চের মাস্টার না থাকায় ছাড়া সম্ভব হয়নি।

বিকেলে দূরপাল্লার লঞ্চগুলো চলাচল করবে বলেও জানান তিনি।

এর আগে শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাত ১২টার পর থেকে এ কর্মবিরতি শুরু হয়।

বাংলাদেশ জাহাজ শ্রমিক ফেডারেশনের ১৪ দফা ও নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়।

শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের ৫ নম্বর খেয়াঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ ঘোষণা দেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার মাস্টার।

এর ফলে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ দেশের নৌ বন্দরগুলোতে শনিবার অনেকটা অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার সচিবালয়ে ফেডারেশনেরে নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়- নৌপরিবহন খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র এবং সার্ভিস বুক দেবেন মালিক। এটা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না-তা তদারকি করবে নৌ পরিবহন অধিদফতর।

এছাড়া এ খাতের শ্রমিকদের খাদ্যভাতা দেয়ার বিষয়ে বৈঠকে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে নৌ পরিবহন শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং ওয়েলফেয়ার ফান্ড গঠনের বিষয়ে নৌ পরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালককে তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়া হয়।

বৈঠক শেষে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশন নেতাদের তাদের ৩০ নভেম্বর থেকে আহুত কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। শ্রমিকরা নেতারা অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।

পরে বৃহস্পতিবার প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। ওইদিন শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়েও সভা করে ফেডারেশন। সেখানে দাবি আদায় না হওয়ার পর্যন্ত পূর্ব ঘোষিত কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন থেকে সরে না আসার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

দাবিগুলোর মধ্যে যা আছে

বাল্কহেডসহ সব নৌ-যানে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ। ২০১৬ সালের ঘোষিত গেজেট মোতাবেক কেরাণী, কেবিনবয় ও ইলেকট্রিশিয়ানসহ সব নৌ-শ্রমিককে বেতন প্রদান।

ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস প্রদান ও হয়রানি বন্ধ। সব নৌ-শ্রমিককে মালিক কর্তৃক খাদ্যভাতা প্রদান। এনড্রোস, ইনচার্জ, টেকনিক্যাল ভাতা পুনর্নির্ধারণ। কর্মস্থলে ও দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণকারী শ্রমিকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ।

নৌ-শ্রমিককে মালিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক দিতে হবে। নৌ-শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। নদীর নাব্যতা রক্ষা ও প্রয়োজনীয় মার্কা, বয়া ও বাতি স্থাপন। মাস্টার/ড্রাইভার পরীক্ষা, সনদ বিরতণ, সনদ নবায়ন, পরিদর্শনসহ নৌ পরিবহন অধিদফতরের সব প্রকার অনিয়ম ও শ্রমিক হয়রানি বন্ধ। চট্টগ্রাম, মোংলা, পায়রা বন্দরে আউটারে চলাচলকারী শ্রমিকদের সি-এলাউন্স দিতে হবে।