প্রচ্ছদ আজকের সেরা সংবাদ সংঘাত দমনে কঠোর হওয়ার নির্দেশ সিইসির

সংঘাত দমনে কঠোর হওয়ার নির্দেশ সিইসির

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট ঘিরে রোববার কোনো সংঘাত-নাশকতার পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে, তা কঠোর হাতে দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা।

ভোটের আগের দিন শনিবার বিকেলে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সার্বিক প্রস্তুতি তুলে ধরে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

সিইসি বলেন, ‘সহিংসতা বা নাশকতামূলক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে কঠোর হাতে মোকাবেলার নির্দেশ দিচ্ছি। অবশ্যই বাহিনী তা নিয়ন্ত্রণ করবে। নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কারণে সহিংসতা হলে, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক প্রার্থীর এজেন্টকে হয়রানি করা হচ্ছে, এটা কাম্য নয়। ফৌজদারি অভিযোগ না থাকলে পুলিশ কাউকে হয়রানি করবে না। পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে হবে। কারণ, এজেন্টরা প্রার্থীর প্রতিনিধি। তারা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন।’

নূরুল হুদা বলেন, ‘কোনো প্রার্থী যেন ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, নির্বাচনী আচরণবিধি যেন লঙ্ঘন না হয় এবং প্রতিযোগিতা যেন সহিংসতায় পরিণত না হয়, সেদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সজাগ থাকতে হবে। ইতোমধ্যে নির্বাচন ঘিরে যে সহিংসতা হয়েছে, জানমালের ক্ষতি হয়েছে, তা কাম্য ছিল না। এসব ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত করে সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিচ্ছি।’

ভোটার, প্রার্থী ও সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা আচরণবিধি মেনে চলুন, সহিংসতা পরিহার করুন। প্রতিযোগিতামূলক পরিবশে বজায় রাখতে সহায়তা করুন। প্রলোভন, প্রভাবের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবেন।’

ভোটের প্রস্তুতি বিষয়ে সিইসি জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছি। এবারের নির্বাচনে ১ হাজার ৮৬১ জন প্রার্থী রয়েছেন। সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। তারা প্রচার কাজে মুখরিত হয়েছেন। মিছিল, জনসভা, লংমার্চ, লিফলেট, পোস্টার, ঘরে ঘরে গমনের মধ্যে দিয়ে প্রতিযোতিমূলক আবহাওয়া সৃষ্টি হয়েছে। উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

এবার ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৩ জন ভোটার ৪০ হাজার ১৮৩টি ভোট কেন্দ্রের ২ লাখ ৬ হাজার ৭৬৭টি ভোটকক্ষে ভোট দেয়ার সুযোগ পাবেন।

ইতোমধ্যে সারা দেশে নির্বাচনী উপকরণ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। রাতের মধ্যে উপকরণ প্রতি কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে। ইভিএমের কেন্দ্রেও সামগ্রী পৌঁছে গেছে।

সিইসি জানান, ভোট কেন্দ্র, সামগ্রী, এজেন্টদের নিরাপত্তার জন্য সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটরা কর্মররত আছেন। কেন্দ্রে অবস্থান সবার উপরে। কেন না, কেন্দ্রের সাফ্যলের ওপর ভর করে গোটা নির্বাচনের সাফল্য নির্ভর করে।

তিনি বলেন, কর্মকর্তা, পর্যবেক্ষক, সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবাই দায়িত্ব পালন করে থাকেন। রিটার্নিং অফিসার ৭টার মধ্যে পরিচালনার কাজ শুরু করবেন। তিনি ব্যালট বাক্স খুলে সকলের উপস্থিতিতে সকলকে ব্যালট বাক্স খালি কি না দেখাবেন। এরপর ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু করবেন। ভোটগ্রহণ শেষ হলে এজেন্ট, সাংবাদিকদের সামনে ভোট গণনার কাজ শুরু করবেন। কেন্দ্রের বাইরে করা যাবে না। ফলাফলের তালিকা এজেন্টদের সরবরাহ করতে। কেউ অবৈধভাবে ভোটকক্ষ ত্যাগ করতে বললে ম্যাজিস্ট্রেট বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নিতে হবে।

গণমাধ্যমেরে উদ্দেশে নূরুল হুদা বলেন, ‘ভোটগ্রহণের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হয়, এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। আপনার আপানাদের পবিত্র দায়িত্ব পালন করবেন।’

সংবাদ সম্মেলনে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।