প্রচ্ছদ সারাদেশ শেরপুরে চাঁদার দাবিতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে গনধোলায়ের শিকার এক ব্যক্তি

শেরপুরে চাঁদার দাবিতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে গনধোলায়ের শিকার এক ব্যক্তি

আর এম সেলিম শাহী, শেরপুর প্রতিনিধি :

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে চাঁদা না পেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে গনধোলাইয়ের শিকার হয়েছে লোকমান হোসাইন (৫৫) নামে এক ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটে ২৬ জুন শুক্রবার রাতে উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের শালচুড়া গ্রামে। লোকমান হোসাইন ওই গ্রামের মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে।

এ ঘটনায় উভয় পক্ষ থেকে থানায় পৃথকভাবে দুইটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগসূত্রে ও নলকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী ফর্সা জানান, শালচুড়া স্পোর্টিং ক্লাবের নামে ২০১৯-২০ অর্থবছরে কাবিটা প্রকল্পের দেড় লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু সঠিক সময়ে কাজ করতে না পারায় কর্তৃপক্ষ ওই ক্লাবের কাজটি বন্ধ করে দিয়ে প্রকল্পটি পরিবর্তন করে দেয়।

এদিকে লোকমান হোসাইন ওই প্রকল্পের কাজ না করে উক্ত টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি আল-আমিন সুইট ও তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী ফর্সা ও স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি আল-আমিন সুইট চাঁদা দিতে অস্বীকার করেন।

এসময় লোকমান হোসাইন ওই প্রকল্পের ১লাখ ৫০হাজার টাকা উত্তোলন করে ক্লাবের সদস্যদের সহায়তায় ইউপি চেয়ারম্যান তা আত্মসাৎ করে মর্মে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাত ১০টায় শালচুড়া চৌরাস্তা বাজারে ক্লাবের সদস্য ও লোকমান হোসাইনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

এক পর্যায়ে লোকমান হোসাইন লোহার রড এনে স্পোর্টিং ক্লাবের সহ-সভাপতি সুজন মাহমুদ সোহেলের উপর আঘাত করে। এসময় ক্লাবের অন্যান্য সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দারা লোকমান হোসাইনকে গন ধোলাই দেয়। এক পর্যায়ে লোকমান হোসাইন দৌড়ে পালানোর সময় লোকজন তাকে আটকানোর চেষ্টা করে। তখন শরীরে থাকা শার্ট ও পড়নের লুঙ্গি ফেলে রেখে লোকমান হোসাইন চম্পট দেয়।

এ ব্যাপারে লোকমান হোসাইনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। তবে লোকমান হোসাইনের দায়ের করা অভিযোগে তার উপর আক্রমনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর ছিদ্দিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উভয় পক্ষেরই দুইটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। সঠিকতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

নলকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী ফর্সা আরও বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তার ইউনিয়নে এলজিএসপি’র বরাদ্দকৃত পুরো টাকা আত্মসাৎ করা হয় মর্মে লোকমান হোসাইন তার নামে অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবেল মাহমুদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা প্রকৌশলী ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ ৩সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। ঘটনাটি তদন্তে আত্মসাতের ঘটনাটি মিথ্যা প্রমানিত হয় বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, লোকমান হোসাইন এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে কখনো র‌্যাবের সোর্স, কখনো ডিজিএফআই, কখনো এনএসআই, আবার কখনো সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এ ধরনের কর্মকান্ড চালিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।